শেষ জীবনে কেমন দেখতে ছিলেন সুচিত্রা সেন? প্রত্যক্ষদর্শীর বয়ানে স্পষ্ট সবটা
Suchitra Sen: নিজেকে অন্তরালে রাখার সিদ্ধান্ত একান্তই তাঁর ছিল। এতটাই দৃঢ়তা ছিল সেই সিদ্ধান্তে যে, ২০০৫ সালে দাদা সাহেব ফালকেও নিতে যাননি… হঠাৎ করে অন্তরালে চলে যাওয়ার বিষয়টা পরিবারের লোক হিসেবে কীভাবে দেখেছিল পরিবার?
১৯৩১ সালে বাংলাদেশের পাবনায় জন্ম হয়েছিল তাঁর। বাড়ির সকলের কাছে তিনি ছিলেন কৃষ্ণা। আর স্কুলে ভর্তির সময় সেই কৃষ্ণাই হয়ে গিয়েছিলেন রমা। সেই রমাই যখন সিনে-দুনিয়ায় পা রাখলেন হয়ে উঠলেন সুচিত্রা। সুচিত্রা সেন… টলিউডের ডিভা। আগামী কাল তাঁর মৃত্যুদিন। ২০১৪ সালের ১৭ জুন তিনি চলে গিয়েছিলেন। মৃত্যুর বহু বছর আগে থেকেই নিজেকে অন্তরালেই নিয়ে গিয়েছিলেন তিনি। যত তিনি আড়াল হয়েছেন, ততই গোপনচারিণীর রূপ নিয়ে মানুষের মনে বেড়েছে কৌতূহল। ১৯৯৫ সালে ভোটার কার্ডের ছবির জন্য একবার অন্তরাল ভেঙে বেড়িয়েছিলেন বটে কিন্তু ওই শেষ। ওই রহস্যে ঘেরা মায়াজাল ভাঙতে পারেননি সাধারণ। মিথ আর মিস্ট্রির ঘেরাটোপে বন্দী এই মানুষকে বহু কাছ থেকে দেখেছিলেন, লগ্না ধর, যিনি সম্পর্কে সুচিত্রার বোনঝি। বাংলার ‘গ্রেটা গার্বো’কে নিয়ে টিভিনাইন বাংলাকে কী বলেছিলেন তিনি? শেষ বয়সে কেমন ছিলেন তিনি? তাঁর কথায়, “নিজে খুব একটা রান্না করতেন না। কিন্তু আমার মনে আছে, একবার ডিমের ডালনা রান্না করে খাইয়েছিলেন। খেতে ভালই হয়েছিল সেটা। মাসির রান্না ঘরে যাওয়ার কোনওদিনও দরকারও পড়ত না। বাবুর্চি থাকত।”
বাইরে খুব একটা খাওয়াতে নিয়ে যেতেন না সুচিত্রা সেন। বাড়িতেই আয়োজন করতেন সবটা। বের হতেন না। লগ্নার চোখে শেষ বয়সেও তাঁর মাসি ছিলেন পরমসুন্দরী। তাঁর কথায়, “কেউ যদি বলে থাকেন, মাসির চেহারা খারাপ হয়ে গিয়েছে… তা হলে খুব ভুল বলেছেন। সাদা চুলেও মাসি ততটাই সুন্দর ছিলেন। সেই গ্রেসটা কিন্তু ছিলই।”
নিজেকে অন্তরালে রাখার সিদ্ধান্ত একান্তই তাঁর ছিল। এতটাই দৃঢ়তা ছিল সেই সিদ্ধান্তে যে, ২০০৫ সালে দাদা সাহেব ফালকেও নিতে যাননি… হঠাৎ করে অন্তরালে চলে যাওয়ার বিষয়টা পরিবারের লোক হিসেবে কীভাবে দেখেছিলেন তিনি? বোনঝির কথায়, “দারুণ সিদ্ধান্ত ছিল এটা। আমি জানি না ঠিক কোন কারণে এই সিদ্ধান্ত তিনি নিয়েছিলেন। কিন্তু পরিবারের মানুষ হিসেবে আমরা সমর্থন করেছিলাম। তারকারা মধ্যগগনে থাকার পর এই সিদ্ধান্ত নিতে পারেন না। কিন্তু মাসি পেরেছিলেন। মানুষও কিন্তু তাঁকে সেই জায়গাতেই রেখে দিয়েছেন চিরটাকাল।” তিনি চলে গিয়েছেন, কিন্তু তাঁর লিগাসি চলে যায়নি। বাংলার উজ্জ্বল নক্ষত্র সুচিত্রা সেন। আজও তিনি সকলের কাছে উদাহরণ।