মা বলে, শ্যামাকে কষ্ট দিচ্ছিস, ঈশ্বর তোকে ক্ষমা করবে না: শ্রীময়ী চট্টরাজ
টেলিভিশনে ভিলেনের চরিত্রে অভিনয় করতে কেমন লাগে তাঁর, দর্শকদের থেকে কেমন ফিডব্যাক পান, এ সবই শেয়ার করলেন TV9 বাংলার সঙ্গে।
শ্রীময়ী চট্টরাজ (Sreemoyee Chattoraj)। না! এই নামে তো তাঁকে আপনি চেনেন না। বরং জনপ্রিয় ধারাবাহিক ‘কৃষ্ণকলি’-র রাধারানির কথা বললে, একবারে চিনতে পারবেন। টেলিভিশনে ভিলেনের চরিত্রে অভিনয় করতে কেমন লাগে তাঁর, দর্শকদের থেকে কেমন ফিডব্যাক পান, এ সবই শেয়ার করলেন TV9 বাংলার সঙ্গে।
কত বছর ধরে অভিনয় করছেন?
আমার ইন্ডাস্ট্রিতে আসা ২০১২ সালে। তারপর পড়াশোনার জন্য কিছু বছর বিরতি নিয়েছিলাম। ২০১৮-তে আবার কামব্যাক।
নেগেটিভ চরিত্রে অভিনয় দিয়েই তো কেরিয়ার শুরু করেছিলেন?
হ্যাঁ। ‘তুমি রবে নীরবে’ আমার প্রথম সিরিয়াল। সেটাও নেগেটিভ ছিল। কিন্তু পুরো নয়। নিজের স্বার্থসিদ্ধির জন্য নেগেটিভ ছিল চরিত্রটা। পরে পুরো নেগেটিভ হয়ে যায়। আর ‘কৃষ্ণকলি’র রাধারানি সেই অর্থে প্রথম থেকেই নেগেটিভ।
আরও পড়ুন, একটানা নেগেটিভ চরিত্রে অভিনয় করে বিরক্ত হয়ে গিয়েছি: মধুরিমা বসাক
একটানা নেগেটিভ চরিত্রে কাজ করতে করতে ব্যক্তি জীবনে কোনও প্রভাব পড়ে?
না। ব্যক্তিগত জীবনে তেমন ভাবে প্রভাব পড়ে না। কিন্তু লোকে যেভাবে জাস্টিফাই করে, তখন মনে হয় সত্যিই হয়তো আমি এটা।
পর্দার বাইরে দুই বন্ধু।
কেন এটা বলছেন?
শ্যামা (‘কৃষ্ণকলি’- ধারাবাহিকের মুখ্য চরিত্র) মানে তিয়াশা (অভিনেত্রী তিয়াশা রায়)আমার খুব ভাল বন্ধু। একসঙ্গে শপিং করি আমরা। অনেক ভাল সময় কাটাই। এমন হয়েছে একসঙ্গে শপিং মলে গিয়েছি। লোকে বলেছে, ওর সঙ্গে সেলফি তুলব। আমার সঙ্গে তুলবে না। তবে আমি নেগেটিভ চরিত্র করেই সাফল্য পেয়েছি।
দর্শকের ফিডব্যাক এটাই?
হ্যাঁ, হয়তো খুব আনন্দের সিন হচ্ছে। আমি তখন চোখ কটমট করে তাকিয়ে আছি। প্রচন্ড ইমোশনাল সিন হয়তো, শ্যামা কান্নাকাটি করছে। সেখানে নিজের ইমোশন নিয়ন্ত্রণ করে আমি ঝামেলা করছি। লোকে যখন বলে, আপনি এত অসভ্যতা করেন, সেটা ভাল লাগে। আসলে পজিটিভ চরিত্র তো সবাই করে। নেগেটিভ চরিত্রে অভিনয় করাটা একটু আলাদা। সবথেকে বড় কথা, লোকে কীভাবে নিচ্ছে…।
আরও পড়ুন, এক কাকিমা একবার বলেছিলেন, আমি গেলে চটি ছুড়ে মারবেন: নন্দিনী চট্টোপাধ্যায়
ঠিকই। পরিবারের সকলে আপনার কাজ দেখে কী বলেন?
আমার মায়ের খুব আপত্তি। আমাদের বাড়ি কৃষ্ণভক্ত। মা বলে, এত বদমায়েশি করছিস, ভাল লাগছে না। মামারবাড়ি আসানসোলে। দাদু, দিদার ভাল হয়তো লাগে। কিন্তু বলে, শ্যামা এত ভাল, ওকে কষ্ট দিচ্ছিস। ঈশ্বর ক্ষমা করবে না। মা তো প্রত্যেকদিনই বলে, একটু বদমায়েশিটা চেঞ্জ করতে বল না (হাসি)।
ব্যক্তি জীবনে নেগেটিভ মানুষদের কীভাবে সামলান?
দেখুন, আজকের দুনিয়ায় মানুষকে বিশ্বাস করা খুব কঠিন। কে কখন পিছন থেকে ছুরি মেরে দেবে, বলা মুশকিল। আমি কারও চরিত্র তো বদলাতে পারব না। এর মধ্যে দিয়েই যখন চলতে হবে, নিজে কোথায় থামব, সেটা জানা ভাল। নিজে পজিটিভ থাকার চেষ্টা করি। অন্যদের নেগেটিভ ভাইব নিয়ে চলতে থাকলে আমি আর এগোতে পারব না।
ধারাবাহিকের দৃশ্যে শর্বরী মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে শ্রীময়ী।
ইন্ডাস্ট্রির কোনও নেগেটিভ ঘটনা, যেটাতে খারাপ লেগেছিল, তেমন কিছু শেয়ার করতে চাইবেন?
এমনিতে আমার সঙ্গে প্রত্যেকের ভাল সম্পর্ক। তবে অনেক প্রজেক্ট হয়তো ছেড়ে দিয়েছি, ভাল লাগেনি বলে। আসলে কার সঙ্গে কার ভাল পিআর (পাবলিক রিলেশনস) বুঝি না। কিন্তু মনোমালিন্য থাকলে কাজ করতে পারি না। এটা আমাকে নন-প্রফেশনাল বলে প্রতিপন্ন পারে, কিন্তু আমি অনেক জায়গা থেকে বেরিয়ে যাই। কারণ পছন্দ না-হলে আমি মুখের উপর বলে দিই। তাই কেউ বাদ দেওয়ার থেকে নিজে আগে বেরিয়ে যাই। সাময়িক মিথ্যে বলে হয়তো কাছের হওয়া যায়, কিন্তু নিজের কাছে সৎ থাকাটা গুরুত্বপূর্ণ।
আরও পড়ুন, মা আর বরের কাছে আমি পৃথিবীর সেরা ভিলেন: কাঞ্চনা মৈত্র
ইন্ডাস্ট্রিতে আপনার বন্ধু কে?
কাঞ্চনদা (মল্লিক) মেন্টর, বন্ধু, ফিলজফার, গাইড। আর খরাজদার (মুখোপাধ্যায়) সঙ্গে থিয়েটার করতাম। কেরিয়ারে অনেক গাইড করেছে। এছাড়া শর্বরীদি (মুখোপাধ্যায়), শ্যামার (তিয়াশা রায়)-এর সঙ্গে ভাল সম্পর্ক আমার।
আরও পড়ুন, আমাকে কি খুব বদমাইশদের মতো দেখতে?: রুকমা রায়