‘রাজনীতির বাইরে রাখাই ভাল মিঠুন চক্রবর্তীর মতো স্টারকে’, স্পষ্ট কথা সুমনের

বহুদিন পর আবার মিঠুন চক্রবর্তীর সঙ্গে কাজ। মাঝখানে কী এমন হয়েছিল যে, মিঠুন চক্রবর্তীর সঙ্গে কাজ হয়নি? কোনও চরিত্রই পাচ্ছিলেন না? এর উত্তরে পরিচালকের সোজাসাপ্টা উত্তর, "মিঠুনদা তো মাঝখানে বাংলা ছবি করছিলেন না। শারীরিক কারণে বা কোনও বিশেষ রাজনৈতিক কারণে সবকিছু থেকে দূরে সরে গিয়েছিলেন। এরপর যখন বাংলা ছবি করলেন, তখনই রহমত চরিত্রের জন্য প্রস্তাব দিলাম। রাজিও হলেন।"

‘রাজনীতির বাইরে রাখাই ভাল মিঠুন চক্রবর্তীর মতো স্টারকে’, স্পষ্ট কথা সুমনের
এই ছবিতে রহমতের আফগানিস্তানের জীবনটা অনেকটা দেখানো হয়েছে।
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Dec 19, 2023 | 6:42 PM

‘নোবেল চোর’ ছবির বহু বছর পর আবার একসঙ্গে কাজ করছেন পরিচালক সুমন ঘোষ ও অভিনেতা মিঠুন চক্রবর্তী। ছবির নাম ‘কাবুলিওয়ালা’। সাহিত্য থেকে সিনেমা হয়েছে বারবার। ছোট থেকে পরিচালক নিজেও যে কাল্ট ছবি ‘কাবুলিওয়ালা’ দেখে বড় হয়েছেন, সেই ‘কাবুলিওয়ালা’কে আবার বড়পর্দায় আনছেন সুমন ঘোষ। তবে এই ছবি করার সময় কতটা সচেতন ছিলেন পরিচালক, এর উত্তরে কনফিডেন্টলি সুমন বললেন, “তুলনা করলেও কোনও অসুবিধা নেই। তার জন্য আমার মনে হয়েছে মিঠুন চক্রবর্তীর কাস্টিংটা খুব গুরুত্বপূর্ণ ছিল। আমার এমন একজন অভিনেতা দরকার ছিল, যাঁর অভিনয় দেখার জন্য দর্শকদের মধ্যে উৎসাহ থাকবে। যে ‘কাবুলিওয়ালা’র চরিত্রে ছবি বিশ্বাসের মতো কিংবদন্তী অভিনেতাকে দেখেছে দর্শক, সেই চরিত্র মিঠুনের মতো বলিষ্ঠ অভিনেতা কেমন করবেন, সে ব্যাপারে আগ্রহ থাকবে দর্শকদের মধ্যে। অন্য কোনও অভিনেতা হলে হয়তো দর্শকরা ভাবত না। তবে মিঠুন চক্রবর্তীর মতো অভিনেতা, যাঁর ঝুলিতে তিন-তিনটে জাতীয় পুরষ্কার আছে, তিনি ‘কাবুলিওয়ালা’কে কীভাবে পরিবেশন করছেন, সেটা দেখার অপেক্ষায় থাকবে দর্শক।”

ছবির ট্রেলারকে কেন্দ্র করে প্রতিক্রিয়া কেমন, এই প্রশ্নের উত্তরে পরিচালক বললেন, “মিঠুন চক্রবর্তী ও মিনির চরিত্রে বাচ্চাটির অভিনয় দর্শকদের পছন্দ হয়েছে। দু’টি চরিত্র খুব গুরুত্বপূর্ণ এই ছবির জন্য। মিঠুনদা নিজেই বলেছিলেন, বাচ্চাদের সপ্রতিভ, সতস্ফুর্ত হতে হবে কারণ এর আগে এই চরিত্রে টিঙ্কু ঠাকুর অভিনয় করেছিলেন। সেই অভিনয় আজও দর্শকদের মনে রয়ে গিয়েছে। তাই দু’জনকেই দর্শক পছন্দ করছে। এছাড়াও এই ছবিতে রহমতের আফগানিস্তানের জীবনটা অনেকটা দেখানো হয়েছে। আফগানিস্তানের এই ল্যান্ডস্কপ দেখে মহেশ ভাটও আমাকে বলেছিলেন, বড়পর্দার মতোই ছবি হয়েছে।”

বহুদিন পর আবার মিঠুন চক্রবর্তীর সঙ্গে কাজ। মাঝখানে কী এমন হয়েছিল যে, মিঠুন চক্রবর্তীর সঙ্গে কাজ হয়নি? কোনও চরিত্রই পাচ্ছিলেন না? এর উত্তরে পরিচালকের সোজাসাপ্টা উত্তর, “মিঠুনদা তো মাঝখানে বাংলা ছবি করছিলেন না। শারীরিক কারণে বা কোনও বিশেষ রাজনৈতিক কারণে সবকিছু থেকে দূরে সরে গিয়েছিলেন। এরপর যখন বাংলা ছবি করলেন, তখনই রহমত চরিত্রের জন্য প্রস্তাব দিলাম। রাজিও হলেন। তবে আমি অভিনেতাকে দেখে চরিত্র ভাবি না। সেক্ষেত্রে মিঠুন চক্রবর্তী ছাড়া রহমত করা অসম্ভব ছিল। ”

এই ‘রাজনৈতিক কারণ’-এর প্রসঙ্গেই সুমনের উদ্দেশে প্রশ্ন, এর আগেও দেখা গিয়েছে মিঠুন চক্রবর্তী অভিনীত ছবি নন্দনে মুক্তি পায়নি। তবে ছবি বেশ সাফল্য পেয়েছিল। এবারও কি সেই আশঙ্কা করছেন পরিচালক যে, হল পাওয়া নিয়ে, বিশেত সরকারি হল নন্দনে জায়গা পাবে না ‘কাবুলিওয়ালা’। এর উত্তর দিতে গিয়ে সুমন ঘোষ বলেন, “এই আশঙ্কা থেকেই যায়। নন্দন দর্শকদের কাছে একটা বিশেষ জায়গা রাখে। তবে আমার ব্যক্তিগত মত হল মিঠুন চক্রবর্তীকে আমি একজন অভিনেতা হিসেবেই দেখি। ওঁর রাজনৈতিক পরিচয় নিয়ে ভাবি না। তবে আমি বলব, সব রাজনৈতিক পরিচয় ভুলে গিয়ে ব্যক্তি তথা অভিনেতা মিঠুন চক্রবর্তীর মতো স্টার যিনি ছাড়া বাংলা থেকে এতটা আন্তর্জাতিক খ্যাতি আর কেউ পাননি, সেটা অবশ্যই মনে রাখা উচিত।”

তিনি আরও বলেন, “শুধু মিঠুন চক্রবর্তী নন শর্মিলা ঠাকুর, সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়, অপর্না সেন এঁরাও আমাদের সম্বল। একটা পয়েন্টের পর এঁদের রাজনীতির বাইরে রাখাই ভাল আমার মনে হয়।” কাবুলিওয়ালা মুক্তি পাবে, তবে এই মুহূর্তে পরিচালক সুমন ঘোষ তাঁর নতুন ছবি ‘পুরাতন’ নিয়ে ব্যস্ত। এই ছবির মুখ্য চরিত্রে থাকবেন শর্মিলা ঠাকুর, ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত ও ইন্দ্রনীল সেনগুপ্ত। ‘কাবুলিওয়ালা’ মুক্তি পাবে বড়দিনের ছুটিতে। শুরু হয়েছে অ্যাডভান্স বুকিং, কলকাতার বেশ কিছু সিঙ্গল প্লেক্সে। তবে এখনও নন্দনে ছবির মুক্তির খবর নেই। তবে নন্দনে যাতে মুক্তি পায়, তার আবেদন পাঠানো হয়েছে নন্দন কর্তৃপক্ষের কাছে। এই ছবি নন্দনে প্রদর্শিত হয় কি না, সে দিকে অবশ্যই নজর থাকবে টলিউডের।