Exclusive: ‘সারাক্ষণ ধরে শুধু…’, ছবি মুক্তির দিন ঠিক কী করতেন উত্তম কুমার?

Uttam Kumar: বেশ কিছু অভিনেতা অভিনেত্রী পর্দায় থাকা মানেই অনেকে মনে করে থাকেন ছবি হিট। যদিও এই সংজ্ঞা একটা নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত সত্যি ছিল। বর্তমানে যা পাল্টে গিয়েছে। তবে একটা সময় ছিল যখন অভিনেতার নামে হাজার হাজার টিকিট বিক্রি হয়ে যেত। তেমনই এক মহানায়কের নাম উত্তম কুমার। পর্দায় উত্তম কুমার মানেই দর্শক মনে ঝড়। 

Exclusive: 'সারাক্ষণ ধরে শুধু...', ছবি মুক্তির দিন ঠিক কী করতেন উত্তম কুমার?
Follow Us:
| Updated on: Jul 24, 2024 | 4:17 PM

ছবি মুক্তির দিন। মূলত শুক্রবার। সিনেপাড়ায় সেদিন আনন্দ আয়োজন। ব্যস্ততা তুঙ্গে। আগের দিন থেকেই শুরু হয়ে যায় তৎপরতা। ছবির বাজার কেমন হবে তা নিয়ে ঘুম উড়ে যায় প্রযোজকের। পরিচালক থেকে শুরু করে অভিনেতা, ছবির নির্মাণের সঙ্গে যুক্ত থাকা একাধিক সদস্যের কাল ঘাম ছুটে যায় একই চিন্তায়, ছবি চলবে তো! যদিও বেশ কিছু অভিনেতা অভিনেত্রী পর্দায় থাকা মানেই অনেকে মনে করে থাকেন ছবি হিট। যদিও এই সংজ্ঞা একটা নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত সত্যি ছিল। বর্তমানে যা পাল্টে গিয়েছে। তবে একটা সময় ছিল যখন অভিনেতার নামে হাজার হাজার টিকিট বিক্রি হয়ে যেত। তেমনই এক মহানায়কের নাম উত্তম কুমার। পর্দায় উত্তম কুমার মানেই দর্শক মনে ঝড়।

প্রেক্ষাগৃহ উপচে পড়ত দর্শকে। আর মহানায়ক? তিনি কী করতেন? উত্তম কুমার ছবি মুক্তির দিন মোটেও খুব একটা স্বস্তিতে কাটাতেন না। বরং উল্টো ছবি দেখা যেত মহানায়কের ক্ষেত্রে। সারাটা দিন তিনি বসে থাকতেন কখন ছবির রিপোর্ট আসবে। যে মুহূর্তের সাক্ষী থেকেছেন অরোরা ফিল্মস-এর বর্তমান কর্ণধার অঞ্জন বসু (তৃতীয় প্রজন্ম)। তাঁদের প্রযোজনায় উত্তম কুমার মোট তিনটি ছবি করেছিলেন। TV9 বাংলা যোগাযোগ করায় পলকে ফিরলেন স্মৃতির পাতায়। বললেন, উনি মহানায়ক ঠিকই, তবে ক্যামেরার পিছনে অনন্ত সাধারণ মানুষ। সকলের সঙ্গে মিশে কথা বলতেন। এখন যেমন স্টারের সংজ্ঞাটা পাল্টে গিয়েছে, ওনার ক্ষেত্রে তেমনটা ছিল না। তখন টাকার থেকেও বেশি অভিনেতারা কাজটা নিয়ে ভাবতেন। এমনও হয়েছে উনি কাজ করে বলেছেন প্রযোজককে টাকাটা আপনাকে দিতে হবে না। এখন তো এসব দেখাই যায় না। তখনকার সকলেই কোথাও গিয়ে যেন প্রযোজকদের কথাটা ভাবতেন। যখন শুক্রবার দুপুর তিনটে নাগাদ ছবি মুক্তি পেত। তখন দুজন ছেলে ছিল, যাঁরা প্রেক্ষাগৃহে গিয়ে ঘুরে-ঘুরে ছবির রিপোর্ট নিয়ে আসতেন। হয়তো উনি সেই সময় কোনও ছবির শুটিং-এ। কিন্তু বিষয়টার মধ্যে ঢুকতে পারতেন না। ফল না যানা পর্যন্ত তিনি বসে থাকতেন। চিন্তা করতেন। নয় সেটের পিছনে পায়চারি করতেন, নয় অন্যমনষ্ক হয়ে বসে থাকতেন। যতক্ষণ না সেই ছেলেগুলো ফলাফলটা নিয়ে আসতেন, ততক্ষণ পর্যন্ত এভাবেই থাকতেন। তারপর যখন কানে শুনতেন, কে কী বলছে, কেমন দর্শক হচ্ছে, প্রতিক্রিয়া কেমন, তখন খুশি হয়ে আবারও সেটে চলে যেতেন।

অরোরা প্রযোজনায় উত্তম কুমার মোট তিনটি ছবি করেছিলেন, যার একটি ছিল সুচিত্রা সেনের সঙ্গে। ‘ওরা থাকে ওধারে’, ‘সদানন্দের মেলা’ ও ‘রাইকমল’। মহানায়ক প্রসঙ্গে অঞ্জনবাবু আরও বলেন, ‘তিনি যেদিন চলে গেলেন, রাতারাতি অন্ধকার নেমে এসেছিল ইন্ডাস্ট্রিতে। খরা। মনে আছে পরের দিন খবরের কাগজে ছবি বেরিয়েছিল, খাঁ-খাঁ করছে স্টুডিও’। তাঁকে ছাড়া আজও খালি বাঙালির মন, তিনি চিরদিনের মহানায়ক। বাংলা ছবির ম্যাটিনি আইডল।