AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

Elder Daughter Syndrome: আপনার সন্তান এল্ডার ডটার সিনড্রোমে আক্রান্ত নয় তো? রোগের লক্ষণ ও প্রভাব জানুন

EDS Effect: পরিবারের প্রথম সন্তানের উপর বেশি নির্ভরশীল অভিভাবকেরা। আর সেই সন্তান যদি মেয়ে হয়, তাহলে তো খুব অল্প বয়সেই পরিবারের বিভিন্ন দায়িত্বভার কাঁধে তুলে নেয় শিশুটি। ফলে অকালেই নিজের শৈশব হারিয়ে ফেলে শিশুকন্যাটি। তারপর ভবিষ্যতে অবসাগগ্রস্ত, খিটখিটে প্রকৃতির হয়ে পড়ে, গ্রাস করে একাকিত্ব।

Elder Daughter Syndrome: আপনার সন্তান এল্ডার ডটার সিনড্রোমে আক্রান্ত নয় তো? রোগের লক্ষণ ও প্রভাব জানুন
ইডিএস উপসর্গ।
| Updated on: Mar 29, 2024 | 8:20 AM
Share

শরীরের যত্ন নেওয়া, শারীরিকভাবে সুস্থ থাকার পাশাপাশি মানসিকভাবে সুস্থ থাকাও জরুরি। বর্তমানে মানসিক অসুখের হার অনেকটাই বেড়ে গিয়েছে। যার অন্যতম কারণ, অবহেলা। আমরা অনেকেই বুঝতে পারি না যে, আমরা বা আমাদের সন্তান মানসিক অসুস্থতার শিকার হয়েছে। তাই প্রথমদিকে মানসিক অসুস্থতার চিকিৎসাও করা হয় না। যার ভবিষ্যৎ পরিণতি হতে পারে মারাত্মক। এমনই একটি অসুখ হল, এল্ডার ডটার সিনড্রোম (EDS)।

এল্ডার ডটার সিনড্রোম ঠিক কী?

একবিংশ শতকেও দেশের বহু পরিবারে দেখা যায়, পরিবারের প্রথম সন্তানের উপর বেশি নির্ভরশীল অভিভাবকেরা। আর সেই সন্তান যদি মেয়ে হয়, তাহলে তো খুব অল্প বয়সেই পরিবারের বিভিন্ন দায়িত্বভার কাঁধে তুলে নেয় শিশুটি। নিজের অজান্তেই গৃহস্থের কাছে মায়ের সাহায্য করা থেকে ছোটো ভাই-বোনদের দেখাশোনা করার মতো অনেক কাজ করে। আবার আর্থিকভাবে পরিবার পিছিয়ে থাকলে বয়স বাড়ার সঙ্গে-সঙ্গে সংসারে আর্থিক দায়িত্ব, এমনকি চাকরি করে ছোট বোনকে বিয়ে দেওয়া বা ভাইয়ের কেরিয়ার গড়ে তোলার গুরু দায়িত্ব কাঁধে তুলে নেয়। যার ফলে অকালেই নিজের শৈশব হারিয়ে ফেলে শিশুকন্যাটি। তারপর ভবিষ্যতে অবসাগগ্রস্ত, খিটখিটে প্রকৃতির হয়ে পড়ে, গ্রাস করে একাকিত্ব।

মনোরোগ বিশেষজ্ঞদের মতে, এল্ডার ডটার সিনড্রোমের প্রধান কারণ, ভুল অভিভাবকত্ব। বাবা-মায়েরা নিজেদের কাজ সহজ করে তুলতে, আবার কখনও বড় সন্তানকে দায়িত্বশীল করে তুলতে গিয়ে তাদের উপর অতিরিক্ত দায়িত্ব চাপিয়ে দেন। বেশিরভাগ বাবা-মা তাদের বড় মেয়ে বা ছেলের কাছ থেকে উচ্চ প্রত্যাশা করেন। বাবা-মায়ের এই ভাবনাই বড় সন্তানকে দায়িত্বশীল করে তোলার পাশাপাশি EDS-এর শিকার হয়। ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা অনুসারে, এটি এখনও শারীরিক রোগ নির্ণয়ের অন্তর্ভুক্ত নয়। তবে এটা নিয়ে এখনও গবেষণা চলছে।

EDS-এর লক্ষণ

ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকেরা জানচ্ছেন, বাড়ির বড় ছেলের তুলনায় মেয়ের মধ্যে উদ্বেগ বেশি দেখা যায়। অল্প বয়সেই অতিরিক্ত দায়িত্বশীল হওয়া, পিতা-মাতার অনুভূতির প্রকাশ, শৈশবের অভিজ্ঞতার অভাব, অপরাধবোধ, সীমা নির্ধারণে অসুবিধা ইত্যাদি এল্ডার ডটার সিনড্রোমের প্রাথমিক লক্ষণ।

EDS-এর প্রভাব

ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা বলছেন যে এটি সম্পর্কের উপর ইতিবাচক এবং নেতিবাচক উভয় প্রভাব ফেলে। ছোটবেলা থেকেই পরিবারের প্রতি দায়িত্ববোধ গড়ে ওঠে। তবে নিজের যত্ন না নেওয়া, কম বয়সে মানসিক চাপ নেওয়া, পারিবারিক দুশ্চিন্তায় ডুবে থাকার মতো অভ্যাসের ফলে শিশু কোন না কোনভাবে শৈশব থেকে দূরে চলে যায়। এর ফলে একটা সময়ের পর শিশুটি বয়সে বড় হলেও দায়িত্ব নিতে ক্লান্ত বোধ করে। তার আচরণেও নানা পরিবর্তন আসে। সে রেগে যেতে শুরু করে, একগুঁয়ে হয়ে যায়, অকারণে ভাই-বোনের সঙ্গে ঝগড়া করে ইত্যাদি। শুরুতেই এই বিষয়ে সচেতন না হলে, ভবিষ্যতে নিজের প্রতি উদাসীন, একাকিত্ব, অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়বে সন্তানটি। বেঁচে থাকার ইচ্ছা হারাবে।

EDS থেকে বেরিয়ে আসার টিপস

মনোবিশেষজ্ঞদের মতে, বড় সন্তানের বিষয়ে অভিভাবকের বেশি যত্নশীল হওয়া জরুরি। ভুল করেও শিশুদের প্রতি বৈষম্য করা উচিত নয়। অতিরিক্ত দায়িত্ব চাপিয়ে না দিয়ে শৈশব উপভোগ করতে দেওয়া জরুরি।

সন্তানের মধ্যে EDS-এর উপসর্গ দেখা দিলে গোড়াতেই অভিভাবকদের উচিত সন্তানের কাউন্সেলিং নেওয়া। কেবল পরিবারের দায়িত্ব পালন নয়, তারও যে নিজস্ব জীবন উপভোগ করার অধিকার রয়েছে, সেটা সন্তানকে বোঝানোর দায়িত্ব অভিভাবককেই নিতে হবে।