Tejasvi Surya Controversy: ‘হিন্দু ধর্মে ফিরিয়ে আনা’র মন্তব্য ঘিরে বিতর্ক, নিঃশর্তে মন্তব্য প্রত্যাহার তেজস্বী সূর্যের
Tejasvi Surya Comment on Hindu Revival: বিগত কয়েকদিন ধরেই বিভিন্ন জনসভা-অনুষ্ঠানে ধর্ম নিয়ে মন্তব্যের জেরে যে বিতর্ক তৈরি হয়েছে, তাতে নতুন করে ইন্ধন জুগিয়েছে কর্নাটকের বিজেপি সাংসদের এই মন্তব্য।
বেঙ্গালুরু: ফের হিন্দুত্ব বিতর্ক (Hindu Controversy)। সম্প্রতিই হরিদ্বারের ধর্ম সংসদে গণহত্যা এবং খুনের উস্কানি দিয়ে বক্তৃতা ঘিরে বিতর্কের মাঝেই এবার বিজেপি নেতা তেজস্বী সূর্য (Tejasvi Surya) বললেন, “যারা হিন্দু ধর্ম ছেড়ে অন্য ধর্ম গ্রহণ করেছেন, তাদের ফের নিজস্ব ধর্মে ফিরিয়ে আনতে হবে”। বিজেপি (BJP) নেতার এই মন্তব্য ঘিরেই শুরু হয়েছে বিতর্ক। ইতিমধ্যেই বিজেপি নেতা ক্ষমাও চেয়ে নিয়েছেন।
শনিবার শ্রী কৃষ্ণ মঠে একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন তেজস্বী সূর্য। সেখানেই তিনি বলেন, “যারা নিজেদের মাতৃ ধর্ম ছেড়েছেন, তাদের হিন্দু ধর্মীয় বিশ্বাসে ফিরিয়ে আনতেই হবে। এই অরাজকতা দূর করার এটাই একমাত্র সমাধান।”
তেজস্বী বলেন, “হিন্দুদের নিজেদের মাতৃধর্ম থেকে বের করে নেওয়া হচ্ছে। যারা বিভিন্ন অর্থ-সামাজিক বা রাজনৈতিক-সামাজিক কারণে নিজেদের ধর্ম ছেড়েছেন, হিন্দুত্বের বিশ্বাস থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন, তাদের আবার ফিরিয়ে আনতে হবে। তাদের হিন্দু বিশ্বাসে ফিরিয়ে আনতে হবে, নিজেদের মাতৃধর্মে ফিরিয়ে আনতে হবে।”
বিগত কয়েকদিন ধরেই বিভিন্ন জনসভা-অনুষ্ঠানে ধর্ম নিয়ে মন্তব্যের জেরে যে বিতর্ক তৈরি হয়েছে, তাতে নতুন করে ইন্ধন জুগিয়েছে কর্নাটকের বিজেপি সাংসদের এই মন্তব্য। এই ভিডিয়ো ভাইরাল হতেই সমালোচনার মুখে পড়েছেন তেজস্বী সূর্য। এদিন সকালে তিনি টুইটে ক্ষমাও চেয়ে নেন।
টুইটে তিনি লেখেন, “দুদিন আগে উদুপির শ্রী কৃষ্ণ মঠে একটি অনুষ্ঠানে আমি ‘ভারতে হিন্দু পুনরুত্থান’ নিয়ে বক্তব্য রেখেছিলাম। ওই মন্তব্যেরই কিছু অংশ দুঃখজনকভাবে বিতর্ক তৈরি করেছে। আমি নিশর্তভাবে সেই মন্তব্য প্রত্য়াহার করে নিচ্ছি।”
At a program held in Udupi Sri Krishna Mutt two days ago, I spoke on the subject of ‘Hindu Revival in Bharat’.
Certain statements from my speech has regrettably created an avoidable controversy. I therefore unconditionally withdraw the statements.
— Tejasvi Surya (@Tejasvi_Surya) December 27, 2021
উত্তর প্রদেশ, মধ্য প্রদেশের পর কর্নাটক(Karnataka)-তেও পাশ করানো হয়েছে ধর্মীয় স্বাধীনতার বিল, যা ধর্মান্তকরণ বিল হিসাবেই পরিচয় পেয়েছে। নতুন এই আইনের একাধিক ধারা নিয়ে ইতিমধ্যেই বিতর্ক শুরু হয়ে গিয়েছে। এই আইনে বলা হয়েছে, ধর্মান্তকরণের জন্য কমপক্ষে এক মাস আগে জেলা শাসক বা তার সমকক্ষ কোনও আধিকারিকের কাছে নির্দিষ্ট আবেদনপত্র জমা দিতে হবে। একইসঙ্গে কেবল ধর্মান্তকরণের উদ্দেশে যারা বিয়ে করছেন বা বিয়ের জন্যই ধর্মান্তকরণ করছেন, তাদের বিয়েকে অবৈধ বলে ঘোষণা করা হবে।
‘কর্নাটক ধর্মের স্বাধীনতা রক্ষা বিল ২০২০-২১’ নামক এই খসড়া বিলে শাস্তির বিধানও দেওয়া রয়েছে। গণ ধর্মান্তকরণের সঙ্গে যুক্ত কোনও ব্যক্তির বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণ হলে, ৩ থেকে ১০ বছর অবধি সাজা এবং ১ লক্ষ টাকা অবধি জরিমানা হতে পারে বলে জানানো হয়েছে। এই আইনে যারা ভুলভাবে উপস্থাপন করে কিংবা প্রভাবিত করে, প্রলোভন দেখিয়ে বা প্রতারণা করে ধর্মান্তকরণ করবে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে ওই ব্য়ক্তি যদি তাঁর পূর্ব ধর্মে পুনরায় ধর্মান্তরিত হয়, সে ক্ষেত্রে কোনও শাস্তির বিধান থাকবে না।
বিধানসভায় এই আইন পাশ হওয়ার পরই কংগ্রেসের তরফে দাবি করা হয়েছে যে, এই আইনের মাধ্যমে সংখ্যালঘুদেরই নিশানা করছে বিজেপি সরকার। যদিও রাজ্য সরকারের তরফে জানানো হয়েছে, জনজাতি-উপজাতি ও নাবালক-নাবালিকাদের নানা প্রলোভন, চাপের মধ্যে ফেলে ধর্মান্তকরণের যে চেষ্টা চলছে, তা রুখতেই এই আইন আনা হয়েছে।
এর আগে গত সপ্তাহেই উত্তরাখণ্ডের ধর্ম সংসদ নামক একটি ধর্মীয় সম্মেলনে গণহত্যার হুমকি দেওয়া ঘিরে বিতর্ক শুরু হয়েছে। ওই হুঁশিয়ারির ভিডিয়ো ভাইরাল হতেই দেশজুড়ে সমালোচনার ঝড় উঠেছে। ইতিমধ্যেই পুলিশের তরফে তিনজনের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হয়েছে।
এই ঘটনার প্রেক্ষিতে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি এন ভি রমণকেও চিঠি দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের ৭৬ জন আইনজীবী। তাঁরা আর্জি জানিয়েছেন, হরিদ্বারে ধর্ম সংসদে যে গণহত্যা ও ঘৃণা ছড়ানোর চেষ্টা করা হয়েছে, তার প্রেক্ষিতে স্বতঃপ্রণোদিত মামলা দায়ের করা হোক।