ওমিক্রনের ধাক্কা কাটিয়ে ধীরে ধীরে কমতে শুরু করেছে দেশের করোনা সংক্রমণ। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে নতুন করে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ২ লক্ষ ৫১ হাজার জন। দেশে ওমিক্রন আক্রান্তের সংখ্য়াও ক্রমশ বাড়ছে। বিশেষ করে দক্ষিণ ভারতে করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় আজ জরুরি বৈঠকে বসছেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য়মন্ত্রী মনসুখ মাণ্ডব্য। করোনা ও ওমিক্রন সংক্রান্ত যাবতীয় আপডেট দেখে নিন একনজরে-
কেন্দ্রের নজরে এবার রাজ্যের করোনা পরিস্থিতি। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী মনসুখ মান্ডব্য আগামিকাল (শনিবার) বিকাল ৩টেয় ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বিহার, ওড়িশা, ঝাড়খণ্ড, পশ্চিমবঙ্গ ও ছত্তীসগঢ়ের ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট এবং কোভিড-১৯ পরিস্থিতি নিয়ে জনস্বাস্থ্য ব্যবস্থার প্রস্তুতি নিয়ে পর্যালোচনা বৈঠকে বসবেন।
ওমিক্রনের ধাক্কা কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই আবার আরও এক করোনা ভাইরাসকে (Coronavirus Pandemic) ঘিরে বাড়ছে আতঙ্ক। নাম নিওকোভ (NeoCOV)। তবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (World Health Organization) শুক্রবার জানিয়ে দিয়েছে, চীনা বিজ্ঞানীদের উল্লেখিত নিওকোভ করোনা ভাইরাসটি নিয়ে আরও গবেষণার প্রয়োজন রয়েছে।
আরও পড়ুন : WHO on ‘NeoCOV’: মানুষের জন্য আদৌ ঝুঁকির কারণ হতে পারে ‘নিওকোভ’? কী বলছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা
টিকাকরণে সাফল্যের পথে আরও এক ধাপ এগোল রাজ্য। শুক্রবার কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী মনসুখ মান্ডব্য জানিয়েছেন, ১৫-১৮ বছর বয়সি ৬০ শতাংশের বেশি কিশোর-কিশোরীদের কোভিড টিকার প্রথম ডোজ দেওয়া হয়েছে। তিনি ছোটদের অভিনন্দন জানিয়ে টুইটারে লিখেছেন, “নতুন ভারত পথ দেখাচ্ছে”।
Young India Showing the Way!
Congratulations to all my young friends who have got vaccinated ?
60% से अधिक 15-18 आयुवर्ग के बच्चों को लगी कोरोना की पहली डोज।#SabkoVaccineMuftVaccine pic.twitter.com/MU1bViqNkO
— Dr Mansukh Mandaviya (@mansukhmandviya) January 28, 2022
দেশের বড় শহরগুলির কোথায় কেমন করোনা পরিস্থিতি ? দেখে নিন একনজরে…
রাজধানী দিল্লিতে শেষ ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত হয়েছেন ৪,০৪৪ জন।
মুম্বই শহরে শেষ ২৪ ঘণ্টায় করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন ১,৩১২ জন।
কলকাতায় নতুন আক্রান্তের সংখ্যা ৪৮১ জন।
বেঙ্গালুরুতে দৈনিক সংক্রমণ ১৫,১৯৯ জন।
চেন্নাইতে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৫,২৪৬ জন।
মুম্বইতে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের সাম্প্রতিক ঢেউ শুরু হওয়ার পর প্রথমবারের মতো সংক্রমণহীন ধারাভি। শুক্রবার মায়ানগরীর ঘিঞ্জি ধারাভি এলাকায় কোনও নতুন সংক্রমণের খোঁজ পাওয়া যায়নি বলেই সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে জানিয়েছেন পৌর সংস্থার এক আধিকারিক। জি-নর্থ ওয়ার্ডের সহকারি মিউনিসিপ্যাল কমিশনার কিরণ দিঘাভকর বলেছেন, ৩৯ দিন পর ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় নতুন সংক্রমণ শূন্যে নেমে এসেছে। এটি ২০২১ সালের ২০ ডিসেম্বরে শেষবার করোনা মুক্ত ছিল ধারাভি।
শুক্রবার দিল্লিতে ৪ হাজারের কিছু বেশি মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। রাজধানীর করোনা বুলেটিন অনুযায়ী সেখানে আক্রান্তের পজিটিভিটি রেট ৮.৬ শতাংশ। দিল্লিতে গত ২৪ ঘণ্টায় ২৫ জন মারা গিয়েছেন। করোনামুক্ত হয়েছেন ৮ হাজারেরও বেশি মানুষ। দিল্লিতে বর্তমানে অ্যাক্টিভ কেস ২৯ হাজার ১৫২।
দেশের ১২ থেকে ১৮ বছর বয়সি কিশোর কিশোরীদের জন্য রাশিয়ার স্পুটনিক এম কোভিড ভ্যাকসিন ভারতে নিয়ে আসার বিষয়ে দেশের ওষুধ নিয়ামকের সঙ্গে আলোচনা চলছে। শুক্রবার এমনটাই জানিয়েছে ডাঃ রেড্ডি’স ল্যাবরেটরিস। সংস্থার তরফে দীপক সাপ্রার জানিয়েছেন, “স্পুটনিক এম হল কিশোর-কিশোরীদের জন্য ব্যবহারযোগ্য স্পুটনিক৷ রাশিয়ায়, স্পুটনিক এমকে ১২ থেকে ১৮ বছর বয়সী শিশুদের জন্য অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। আমরা এই দেশেও প্রক্রিয়ার মধ্যে আছি৷ আমরা আগামী কয়েক মাসের মধ্যে এই ডেটা নিয়ে নিয়ামক সংস্থার সঙ্গে কথা বলব।”
উদ্বেগ বাড়াচ্ছে ওমিক্রনের বিএ-২ ভ্যারিয়েন্ট (Omicron BA.2)। ডেনমার্কের (Denmark) অন্যতম প্রধান জনস্বাস্থ্য সংস্থা বুধবার জানিয়েছে, ওমিক্রন বিএ-২ ভ্যারিয়েন্টটি মূল ভ্যারিয়েন্ট বিএ-১ এর থেকেও দেড় গুণ বেশি দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। স্টেটন্স সিরাম ইনস্টিটিউট (SSI) এক বিবৃতিতে বলেছে, “প্রাথমিক গবেষণা থেকে ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে বিএ-২ কার্যকরভাবে বিএ-১-এর থেকে দেড় গুণ বেশি সংক্রামক।” এসএসআই-এর একজন বিশেষজ্ঞ বিজনেস ইনসাইডারকে বলেছেন, এই সাবভেরিয়েন্টটি পাঁচ থেকে সতেরো বছর বয়সি শিশুদের মধ্যে সবচেয়ে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। ডেনমার্কের স্বাস্থ্যমন্ত্রী ম্যাগনাস হিউনিক এক সংবাদ বৈঠকে অবশ্য কিছুটা স্বস্তির ইঙ্গিত দিয়েছেন। সংবাদ সংস্থা রয়টার্স তাঁকে উদ্ধৃত করে জানিয়েছে, এই সাবভ্যারিয়েন্টের কারণে আরও গুরুতর রোগ হচ্ছে, এমন কোনও প্রমাণ নেই। দক্ষিণ আফ্রিকায় ওমিক্রনের খোঁজ পাওয়ার পর যে দেশগুলিতে ওমিক্রন সবার আগে ছড়িয়ে পড়েছিল, তার মধ্যে একটি ডেনমার্ক।
আরও পড়ুন : Omicron Sub- Variant BA.2: ওমিক্রনের নতুন সাব ভ্যারিয়েন্ট ছড়াচ্ছে দেড় গুণ দ্রুত, ছোটদের নিয়ে থাকছে চিন্তা
রাজ্যের সঙ্গে জলপাইগুড়ি জেলাতেও বেড়েছে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা। তবে এখনো সতর্ক নয় সাধারণ মানুষ। মাস্ক ছাড়া বেপরোয়াভাবে অনেককেই ঘোরাফেরা করতে দেখা যাচ্ছে সর্বত্র। আর করোনা যে এখনো দমেনি এবং প্রাণ কেড়ে নিতে পারে, তার আরও একবার প্রমাণ মিলল মালবাজারে চিকিৎসকের মৃত্যুতে।
মৃত চিকিৎসকের নাম তপন কুমার চক্রবর্তী (৭২)। বাড়ি শহরের ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের পানওয়ার বস্তি এলাকায়। গত বুধবার পর্যন্ত তিনি স্টেশন রোড এলাকায় নিজস্ব চেম্বারে রোগি দেখেছেন। এরপর বাড়ি ফিরে অসুস্থ বোধ করেন। তখনই আর ঝুঁকি নেয়নি পরিবার। দ্রুত তাঁকে মাল সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য আনা হয়। সেখানে তাঁর কোভিড পজ়িটিভ ধরা পড়ে। এরপর বৃহস্পতিবার রাতে হাসপাতালেই তার মৃত্যু হয়।
বিস্তারিত পড়ুন: Doctors Death: এক সপ্তাহ আগেও দেখেছেন রোগী, ফের করোনা প্রাণ কাড়ল চিকিৎসকের
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী মনসুখ মান্ডব্য শুক্রবার জানিয়েছেন, ভারতে শেষ ১৯ দিনের মধ্যে ১ কোটিরও বেশি মানুষকে কোভিড ভ্যাকসিনের প্রিকশন ডোজ় দেওয়া হয়েছে।
রাশিয়ান সংবাদ সংস্থা স্পুটনিকে প্রকাশিত এক প্রতিবেদন অনুসারে, এবার ‘নিওকভ’ (NeoCOV) নিয়ে চিন্তা বাড়ছে। চিনের উহানে ২০১৯ সালে যে কোভিড -১৯ ভাইরাসের খোঁজ মিলেছিল, তারই একটি ভ্যারিয়েন্ট হল ‘নিওকভ’। স্পুটনিকে প্রকাশিত প্রতিবেদনে, উহানের বিজ্ঞানীরা দক্ষিণ আফ্রিকায় একটি নতুন ধরণের ‘নিওকভ’ সম্পর্কে সতর্ক করা হয়েছে। আর সবথেকে ভয়ের যে বিষয়টি, তা হল – এই ভ্যারিয়েন্টটির কারণে মৃত্যু হার এবং সংক্রমণের হার দুটিই বেশি বলে জানানো হয়েছে।
টিকাকরণের পথে আরও এক ধাপ এগোল ভারত। নেজাল ভ্যাকসিনের বুস্টারের ট্রায়ালে সায় দিল ড্রাগ কনট্রোলার্স জেনারেল অব ইন্ডিয়া বা ডিসিজিআই (DCGI)। ভারত বায়োটেককে এই ছাড়পত্র দেওয়ার ঘটনা অতিমারির ভারতে নিঃসন্দেহে বড় খবর। শুক্রবারই এই ছাড়পত্র প্রদানের বিষয়টি সামনে এসেছে। সূত্রের খবর, দেশের ৯টি জায়গায় এই ট্রায়াল হবে।
সবিস্তারে পড়ুন: BharatBiotech: বড় সিদ্ধান্ত! সংক্রমণ ঠেকাতে এবার নাকে টিকা, পরীক্ষামূলক প্রয়োগে ছাড়পত্র ড্রাগ কনট্রোলারের
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের নজরে এবার দক্ষিণের চার রাজ্য। কর্ণাটক, কেরল, তামিলনাড়ু এবং অন্ধ্রপ্রদেশ – এই চার রাজ্যে করোনা অ্যাকটিভ কেস যথেষ্ট উদ্বেগজনক। এই পরিস্থিতিতে ওই চার রাজ্যের সঙ্গে শুক্রবার করোনা পরিস্থিতি নিয়ে পর্যালোচনা বৈঠকে বসবেন, কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী মনসুখ মান্ডব্য। বর্তমানে, কর্ণাটকে দেশের মোট অ্যাকটিভ কেসের ১৬.২৫ শতাংশ রয়েছে।
পাকিস্তানে গত ২৪ ঘণ্টায় ৮ হাজার ১৮৩ জন নতুন করোনা আক্রান্তের খোঁজ পাওয়া গিয়েছে। সে দেশে মহামারীর পঞ্চম ঢেউয়ের আশঙ্কা করা হচ্ছে। পাকিস্তানের স্বাস্থ্য মন্ত্রকের তরফে শুক্রবার জানানো হয়েছে, এটিই এখনও পর্যন্ত পাকিস্তানে দৈনিক সর্বোচ্চ সংক্রমণ। সে দেশে পজিটিভিটি রেট প্রায় ১২ শতাংশ। করাচির মতো বেশ কয়েকটি বড় শহরগুলিতে বর্তমানে পজিটিভিটি রেট ২০ শতাংশেরও বেশি। সংবাদ সংস্থা পিটিআই সূত্রে এমনটাই জানা গিয়েছে।
স্কুল খুলতে আগ্রহ রয়েছে রাজ্য সরকারেরও। তবে স্কুল খোলা নিয়ে সাবধানী তারা। সমস্ত পড়ুয়া এখনও ভ্যাকসিন পায়নি। যারা পেয়েছে, টিকা পাওয়ার পর তাদের ১৫ থেকে ২০ দিন নজরে রাখতে হবে। তাই স্কুল খোলা নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে আরও কিছুটা সময় প্রয়োজন। শুক্রবার কলকাতা হাইকোর্টে জানাল রাজ্য।
সবিস্তারে পড়ুন: বাংলায় এখনই খুলছে না স্কুল, হাইকোর্টে সময় চাইল রাজ্য
এ দিন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী মনসুখ মাণ্ডব্য জানান, মাত্র ১৯ দিনেই দেশের ১ কোটিরও বেশি সংখ্যক মানুষকে করোনা টিকা দেওয়া হয়েছে।
Over 1 crore precaution doses have been administered to the eligible population in just 19 days: Union Health Minister Dr Mansukh Mandaviya pic.twitter.com/v8gq1DLtJB
— ANI (@ANI) January 28, 2022
স্বরাষ্ট্র সচিব অজয় ভাল্লা জানিয়েছেন, সমস্ত রাজ্যেই যেন করোনা বিধিনিষেধ অবলম্বন করে চলা হয়। গত ১২ ডিসেম্বর কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্য়াণ মন্ত্রকের তরফে যে করোনাবিধি সংক্রান্ত নির্দেশিকা দেওয়া হয়েছিল, তা অনুসরণ করেই রাজ্য, জেলা ও স্থানীয় প্রশাসন যেন কন্টেনমেন্ট জ়োন চিহ্নিত করার কাজ জারি রাখে।
স্থানীয় স্তরে কন্টেনমেন্ট জ়োন ঘোষণা বা তা প্রত্য়াহারের সিদ্ধান্ত যেন সংক্রমণের হার ও হাসপাতালে রোগী ভর্তির সংখ্য়া পর্যালোচনা করেই নেওয়া হয়, এ কথাও জানান স্বরাষ্ট্রসচিব অজয় ভাল্লা। করোনা মোকাবিলায় কেন্দ্রের পাঁচ দফা মন্ত্র অর্থাৎ করোনা পরীক্ষা, আক্রান্তের সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিদের শনাক্তকরণ, চিকিৎসা, করোনা টিকাকরণ ও করোনাবিধি অনুসরণ করে চলার পরামর্শও দেন তিনি।
সমস্ত রাজ্য ও কেন্দ্র শাসিত অঞ্চলের মুখ্যসচিবদের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র সচিব অজয় ভাল্লার পাঠানো চিঠিতে জানানো হয়েছে, দেশের অধিকাংশ করোনা রোগীই সংক্রমিত হওয়ার কিছুদিনের মধ্যেই সুস্থ হয়ে উঠছেন এবং হাসপাতালে রোগী ভর্তির হারও তুলনামূলকভাবে অনেকটাই কম। এরপরও দেশের সক্রিয় রোগীর সংখ্যা ২২ লক্ষের গণ্ডি পার করেছে।
তামিলনাড়ুতে সংক্রমণ ৩০ হাজারের নীচে নেমে আসায় নৈশ কার্ফু ও রবিবারের লকডাউনের নিয়ম প্রত্য়াহার করা হয়েছে। আগামী ১ ফেব্রুয়ারি থেকে রাজ্যের সমস্ত স্কুলও খুলছে।
দিল্লিতেও একদিনেই ৪২ শতাংশ কমেছে সংক্রমণ। গত ২৪ ঘণ্টায় রাজধানীতে নতুন করে ৪২৯১ জন আক্রান্তের খোঁজ মিলেছে, বৃহস্পতিবারই এই সংখ্যাটা ছিল ৭৪৯৮। তবে মৃতের সংখ্যায় কিছুটা বৃদ্ধি হয়েছে, একদিনেই করোনায় মৃত্যু হয়েছে ৩৪ জনের। রাজ্যে সংক্রমণের হারও বর্তমানে ১০ শতাংশের নীচে নেমে এসেছে।
মহারাষ্ট্রে ধীরে ধীরে অনেকটাই কমেছে করোনা সংক্রমণ। গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ২৫ হাজার ৪২৫ জন, যা গতকালের সংখ্যার তুলনায় ১০ হাজার কম। অন্যদিকে, রাজ্যে একদিনেই ৪২ জনের মৃত্যু হয়েছে। নতুন করে ৭২ জন ওমিক্রন আক্রান্তেরও খোঁজ মিলেছে।
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ২ লক্ষ ৫১ হাজার ২০৯। বৃহস্পতিবারই এই সংখ্যাটা ছিল ২ লক্ষ ৮৬ হাজার ৩৮৪। অর্থাৎ একদিনেই দেশে আক্রান্তের সংখ্যা ৩৫ হাজার হ্রাস পেয়েছে। অন্যদিকে, দেশে একদিনেই করোনা সংক্রমণে মৃত্যু হয়েছে ৬২৭ জনের। এই নিয়ে দেশে মোট মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৪ লক্ষ ৯২ হাজার ৩২৭-এ।
দেশে দৈনিক সংক্রমণে কিছুটা স্বস্তি মিললেও রাজ্যভিত্তিক সংক্রমণের হারে উদ্বেগ থেকেই যাচ্ছে। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের তথ্য অনুযায়ী, ৩৪ টি রাজ্যর ৪০৭টি জেলাতেই সংক্রমণের হার এখনও ১০ শতাংশের বেশি। ওমিক্রনের দাপটে করোনা সংক্রমণে যে হঠাৎ বৃদ্ধি হয়েছিল, তা এখনও পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে না আসায় আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি অবধি কন্টেনমেন্ট করোনাবিধির মেয়াদ বাড়াল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক।
বিস্তারিত পড়ুন: COVID-19 Restriction Extended: ৪০৭টি জেলাতেই সংক্রমণের হার ১০ শতাংশে বেশি! বিধিনিষেধের মেয়াদ বাড়াল কেন্দ্র
কেরলের স্বাস্থ্যমন্ত্রী বীণা জর্জ জানান, রাজ্যের সমস্ত সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালগুলিকেই করোনা রোগীদের চিকিৎসার জন্য নির্দিষ্ট সংখ্যক শয্যা সংরক্ষিত রাখতে বলা হয়েছে। যদি কোনও বেসরকারি হাসপাতাল করোনা রোগী ভর্তি নিতে বা চিকিৎসা দিতে অস্বীকার করে, তবে তাদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বিস্তারিত পড়ুন: COVID-19 in Kerala: ৯৪ শতাংশই ওমিক্রনে আক্রান্ত! আগামী ৩ সপ্তাহ সতর্ক থাকার পরামর্শ কেরলের স্বাস্থ্যমন্ত্রীর
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বীণা জর্জ বলেন, “আক্রান্ত রোগীদের জিনোম সিকোয়েন্স করে জানা গিয়েছে যে তাদের মধ্যে ৯৪ শতাংশই ওমিক্রনে আক্রান্ত। বাকি ৬ শতাংশ ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত। নতুন করে আক্রান্তদের মধ্যে ৩.৬ শতাংশের হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার প্রয়োজন পড়েছে। অন্যদিকে, আইসিইউ-র প্রয়োজনীয়তা তুলনামূলকভাবে অনেকটাই কমেছে।”
চিন্তা বাড়াচ্ছে দক্ষিণের রাজ্যগুলি। সেখানে ক্রমশ বেড়েই চলেছে করোনা সংক্রমণ (COVID-19)। একইসঙ্গে বাড়ছে ওমিক্রনের (Omicron) দাপটও। এই পরিস্থিতিতেই উদ্বেগজনক রাজ্যগুলিকে নিয়ে জরুরি বৈঠকে বসতে চলেছেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী মনসুখ মাণ্ডব্য (Mansukh Mandaviya)। দক্ষিণ ভারতের রাজ্যগুলিতে করোনা পরিস্থিতি পর্যালোচনার জন্য সেই রাজ্যগুলির স্বাস্থ্যমন্ত্রীদের বৈঠকে যোগ দিতে বলা হয়েছে। একইসঙ্গে ওমিক্রন রুখতে কী কী স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করা হচ্ছে, সেই দিকগুলিও খতিয়ে দেখবেন তিনি। অন্ধ্র প্রদেশ, কর্নাটক, কেরল, তেলঙ্গনা, লাক্ষাদ্বীপ, তামিলনাড়ু, পুদুচেরী ও আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও আধিকারিকদের এই ভার্চুয়াল বৈঠকে যোগ দিতে বলা হয়েছে।
বিস্তারিত পড়ুন: COVID-19 Review meeting: বিধিনিষেধ সত্ত্বেও দক্ষিণে কেন লাগামছাড়া সংক্রমণ? জানতে জরুরি বৈঠকের ডাক স্বাস্থ্যমন্ত্রীর
বৃহস্পতিবারই কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে বিবৃতি জারি করে বলা হয়, “কেন্দ্রীয় বাজেট তৈরির চূড়ান্ত পর্যায়কে মনে রাখতে কর্মীদের মধ্যে মিষ্টি বিতরণ করা হয়েছে। প্রতিবছরই হালুয়া তৈরির রীতি রয়েছে, কিন্তু চলতি মহামারি পরিস্থিতিকে মাথায় রেখেই ও স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।”
কেরলের স্বাস্থ্যমন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে, রাজ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ৫১ হাজার ৭৩৯ জন এবং সংক্রমণের জেরে মৃত্যু হয়েছে ১১ জনের। এছাড়াও আগে ৫৭জনের মৃত্যুকেও করোনা সংক্রমণে মৃত্যু বলে ঘোষণা করা হয়েছে। এই নিয়ে রাজ্যে মোট মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫২ হাজার ৪৩৪-এ। বর্তমানে রাজ্যে সংক্রমণের হার ৪৪.৬ শতাংশ, যা বাকি রাজ্যগুলির তুলনায় অনেকটাই বেশি।
ফের কিছুটা স্বস্তি মিলল দেশের করোনা সংক্রমণে। বিগত চারদিন ধরেই দেশের দৈনিক সংক্রমণ তিন লক্ষের নীচে রয়েছে। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে নতুন করে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ২ লক্ষ ৫১ হাজার মানুষ, যা গতকালের তুলনায় ১২ শতাংশ কম। অন্যদিকে, সংক্রমণের হারও ১৯.৫ শতাংশ থেকে কমে ১৫.৮ শতাংশে নেমে এসেছে।