Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রচারে নিষেধাজ্ঞা জারি কমিশনের

তাঁর বিরুদ্ধে নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গের অভিযোগ তুলে এই ব্যান জারি করেছে নির্বাচন কমিশন।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রচারে নিষেধাজ্ঞা জারি কমিশনের
ফাইল চিত্র।
Follow Us:
| Updated on: Apr 12, 2021 | 8:38 PM

কলকাতা: মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রচারের উপর ২৪ ঘণ্টার জন্য নিষেধাজ্ঞা জারি করল নির্বাচন কমিশন। তাঁর বিরুদ্ধে নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গের অভিযোগ তুলে এই ব্যান জারি করেছে নির্বাচন কমিশন। সূত্রের খবর, সোমবার রাত ৮ টা থেকে মঙ্গলবার রাত ৮ টা পর্যন্ত এই নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। এই সময়ের মধ্যে তিনি কোনও প্রচারে অংশ নিতে পারবেন না। সাম্প্রতিক সময়ে নির্বাচন কমিশন যত নির্দেশিকা জারি করেছে, তার মধ্যে এটাই সবচেয়ে বড়। তৃণমূলের স্পষ্ট দাবি, এটা সম্পূর্ণভাবে রাজনৈতিকভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।

এই নিষেধাজ্ঞা জারির আগে দু’বার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দু’টি নোটিস দিয়েছিল কমিশন। একটি নোটিসে তাঁর সংখ্যালঘুদের নিয়ে করা মন্তব্যের কারণে জবাবদিহি করা হয়। দ্বিতীয় নোটিসে কেন্দ্রীয় বাহিনীকে নিয়ে করা তাঁর ঘেরাও মন্তব্যের কারণে জবাব জানতে চাওয়া হয়েছিল। কমিশনের দাবি, দু’টি নোটিসের জবাবেই তিনি খুব বেছে বেছে জবাব দিয়েছেন। যে কারণে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্বাচনী প্রচারে ব্যান করা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্য়ে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট হতে পারে বলেও আশঙ্কা করেছে কমিশন। ইতিমধ্যেই কমিশনের এই সিদ্ধান্তের তীব্র সমালোচনা করে তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েন টুইটারে লিখেছেন, “এপ্রিল ১২। আমাদের গণতন্ত্রের কালো দিন।”

এই রাজ্যের ক্ষেত্রে কমিশনের এহেন পদক্ষেপ প্রথমবার হলেও এর আগেও অন্যান্য রাজ্যের ক্ষেত্রেও একই নজির দেখা গিয়েছে। কখনও মায়াবতী, কখনও যোগী আদিত্যনাথের ক্ষেত্রেও একই ধরনের পদক্ষেপ করেছে কমিশন। দিনকয়েক আগেই অসমের অর্থমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মার প্রচারের উপরেও ৪৮ ঘণ্টার নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। পরে তা কমিয়ে ২৪ ঘণ্টার করা হলেও কমিশন আজকের পদক্ষেপে কার্যত বুঝিয়ে দিতে চেয়েছে, নেতা যতই বড় মাপের হন না কেন, সীমা অতিক্রম করলে শাস্তি হবেই। এমনটাই মত রাজনৈতিক মহলের একাংশের।

আরও পড়ুন: ‘ওঁরাও মানুষ, আমরাও মানুষ, আপনারা আপনাদের কাজ করে যান’, শীতলকুচির ঘটনার পর কর্মীদের পাঠ অনুব্রতর

উল্লেখ্য, আধাসেনা নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বলতে শোনা গিয়েছিল, “সিআরপিএফ যদি গণ্ডগোল করে, মেয়েদের বলে দিচ্ছি, একদল ওদের ঘেরাও করে রাখবেন, আরেকদল ভোট দিতে যাবেন। ভোট নষ্ট করবেন না। আপনি যদি শুধু ঘেরাও করে রাখেন তাহলে (ওরা) ভাববে ভালই তো, ভোটটা তো পড়ল না। ওদের এটাই কিন্তু চাল। ঘেরাও ওইভাবেও করতে হবে না। কথা বলবেন মানেই ঘেরাও। দেখে নেবেন পরিস্থিতি অনুযায়ী।” এই ঘটনার পরই শীতলকুচিতে কেন্দ্রীয় বাহিনীর গুলি চালানোর ঘটনা ঘটে।

পাশাপাশি সংখ্যালঘু ভোটারদের উদ্দেশে বার্তা দিয়ে তিনি বলেছিলেন, “আমি আমার সংখ্যালঘু ভাইবোনেদের উদ্দেশে হাতজোড় করে আবেদন করছি, একটা শয়তানের কথা শুনে সংখ্যালঘু ভোট ভাগ হতে দেবেন না। ও বিজেপির থেকে টাকা খেয়েছে। ও বহু সাম্প্রদায়িক মন্তব্য করে হিন্দু-মুসলিমের মধ্যে বিভেদ তৈরি করে। সংখ্যালঘু ভোট ভাগ করতে বিজেপি যে টাকা দিয়েছে, তা নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে সিপিএম ও বিজেপির কমরেডরা।” তাঁর এই দুই মন্তব্যের প্রেক্ষিতেই তৃণমূল নেত্রীকে নোটিস দিয়েছিল নির্বাচন কমিশন।

আরও পড়ুন: তৃণমূলের গুন্ডাদের পাতাল থেকে খুঁজে এনে জেলে ভরব, শাহি হুঙ্কার হেমতাবাদে

কমিশনের এই সিদ্ধান্তের কী প্রভাব নির্বাচনে পড়বে তা আগামীতেই বোঝা যাবে। তবে মুখ্যমন্ত্রী জোড়া নোটিসের জবাবে যে কমিশন সন্তুষ্ট নয়, সেটা বারংবার সাফ করে দেওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও এ দিন বারাসতের সভা থেকে তৃণমূল নেত্রীর প্রচারের ভাষা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। তারপরই এ দিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপর ব্যান জারি করে কমিশন।