Layoff: ২৫,৭৫২ জন! চলতি বছরে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ চাকরিহারার তালিকায় বাংলা? হার মানছে গুগল-ফেসবুকও
Job Cut: ২০২৪ সালে অ্যামাজন ১৪ হাজার ম্যানেজার পোস্টে কর্মী ছাঁটাইয়ের ঘোষণা করেছিল। গুগলও ২০২৩ সালে ১২ হাজার কর্মী ছাঁটাই করে। ২০২৪ সালেও ফের ১০ শতাংশ কর্মী ছাঁটাইয়ের ঘোষণা করে।

কলকাতা: পেনের একটা আঁচড়, আর চাকরি চলে গেল প্রায় ২৬ হাজার মানুষের। রাজ্যে স্কুল শিক্ষা কমিশনে ব্যাপক দুর্নীতির জেরেই ২০১৬ সালের সম্পূর্ণ প্যানেল বাতিলের কলকাতা হাইকোর্টের রায়কেই মান্যতা দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। রাতারাতি চাকরি খোয়াতে হল ২৫ হাজার ৭৫২ জনকে। এটা শুধু বাংলারই নয়, দেশের ইতিহাসেও একটা কালো দিন, যেখানে রাতারাতি এতজনকে চাকরি খোয়াতে হল। অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন এই চাকরি খোয়ানো নিয়ে। তুলনা করেছেন বেসরকারি সংস্থাগুলির কর্মী ছাঁটাইয়ের সঙ্গে। সত্যিই কি কর্মী ছাঁটাইকেও ছাপিয়ে গেল বাংলার নিয়োগ দুর্নীতির কোপ?
সরকারি চাকরির প্রতি সাধারণ মানুষের এত আস্থা-ভরসা কেন? এই প্রশ্নটা করলে ভাল বেতনের থেকেও আগে উত্তরটা আসবে জব সিকিউরিটি বা চাকরির নিরাপত্তা। বেসরকারি সংস্থায় চাকরি করার সবথেকে খারাপ দিকই হল, চাকরির কোনও গ্যারান্টি নেই। যখন-তখন চাকরি চলে যেতে পারে। সেখানেই সরকারি চাকরি মানে সুখের চাকরি, রাতারাতি চাকরি খোয়ানোর ভয় নেই। কিন্তু সেই অসম্ভবকেও সম্ভব করে দেখাল রাজ্যের নিয়োগ দুর্নীতি। টাকার বদলে চাকরি, যোগ্যদের তালিকায় অযোগ্যদের নাম ঢুকিয়ে দেওয়া- দুর্নীতির ফিরিস্তি এখন কম বেশি সকলের জানা। আর এই দুর্নীতির জেরেই প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষক-অশিক্ষক কর্মীদের চাকরি চলে গেল।
কোন ক্ষেত্রে সবথেকে বেশি চাকরি খোয়ানোর ঝুঁকি? রিটেল, প্রযুক্তি, সার্ভিস অ্যান্ড কনজিউমার এবং মিডিয়া বা সংবাদমাধ্যমের নামই সামনে আসে। এই ক্ষেত্রগুলিতে ছাঁটাইয়ের ঝুঁকি সবথেকে বেশি। অন্যদিকে, সবথেকে সুরক্ষিত চাকরি মনে করা হয় চিকিৎসক, শিক্ষক, পুলিশ , দমকলকর্মীদের। তবে এই সব হিসাবই এখন গুলিয়ে যাচ্ছে।
বিগত কয়েক বছর ধরেই চাকরিতে ছাঁটাই চলছে। বিশেষ করে করোনাকাল ও তার পরবর্তী সময়ে বড় বড় সংস্থাগুলিও বিপুল হারে কর্মী ছাটাই করেছে। গুগল থেকে অ্যামাজন- কেউ বাদ নেই সেই তালিকায়। তবে তাদের খাঁড়াও এতটা ভয়ঙ্কর ছিল না।
ইতিহাস বলছে, বেসরকারি সংস্থায় সবথেকে ভয়ঙ্কর ছাঁটাই হয়েছিল বিশ্বের অন্যতম বড় তথ্য প্রযুক্তি সংস্থা আইবিএম (IBM)-এ। ১৯৯৩ সালে আইবিএম একসঙ্গে ৬০ হাজার কর্মী ছাঁটাই করেছিল। মার্কিন ইতিহাসে এটাই সবথেকে বড় ছাঁটাই ছিল।
সাম্প্রতিককালে বেসরকারি সংস্থায় ছাঁটাই দেখলে, সম্প্রতিই কগনিজ্যান্ট সংস্থা ৩৫০০ কর্মী ছাঁটাই করেছিল। ২০২৪ সালে অ্যামাজন ১৪ হাজার ম্যানেজার পোস্টে কর্মী ছাঁটাইয়ের ঘোষণা করেছিল। গুগলও ২০২৩ সালে ১২ হাজার কর্মী ছাঁটাই করে। ২০২৪ সালেও ফের ১০ শতাংশ কর্মী ছাঁটাইয়ের ঘোষণা করে। ইনটেল সংস্থাও ২০২৪ সালে একধাক্কায় ১৫,০০০ কর্মী ছাঁটাই করে। সম্প্রতিই ইনফোসিস ৪০ জন ট্রেনিকে তাড়িয়ে দেয় রাতারাতি।
কর্মী ছাঁটাই করে হইচই ফেলে দিয়েছিলেন ইলন মাস্ক। নিজের গাড়ি প্রস্তুতকারক সংস্থা টেসলায় ২৬৮৮ কর্মী ছাঁটাই করেছিলেন। তবে সবথেকে বড় কোপ নেমেছিল এক্স বা পূর্ববর্তী টুইটারের উপরে। ২০২১ সালে টুইটার কেনার পরই ৭৫০০ থেকে কর্মী সংখ্যা ১৫০০-এ নামিয়ে আনেন। ইলন মাস্ক একধাক্কায় ৬০০০ কর্মী ছাঁটাই করেছিলেন। এখন মার্কিন প্রশাসনে দক্ষতা বাড়াতেও ছাঁটাইয়ের কথা বলেছেন মাস্ক। ইতিমধ্যেই ২০ হাজার কর্মীকে চাকরি ছাড়তে বলা হয়েছে।





