Gujarat Riot: বাম-কং লবির হাতে অবিরাম হেনস্থা মোদীর , সুপ্রিম রায়ে কি ঘটবে তার অবসান?

Gujarat Riot: গত ২০ বছরে বিভিন্ন তদন্তে ক্লিনচিট পাওয়ার পরও গুজরাট দাঙ্গার মিথ্যা আখ্যানের দায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ঘাড়ে চাপানোর প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছে বাম-কং লবি। সুপ্রিম কোর্টের সর্বশেষ নির্দেশে কি তার অবসান ঘটবে?

Gujarat Riot: বাম-কং লবির হাতে অবিরাম হেনস্থা মোদীর , সুপ্রিম রায়ে কি ঘটবে তার অবসান?
আর কতগুলি ক্লিনচিট পেলে অবসান হবে এই হেনস্থার
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jun 24, 2022 | 10:33 PM

নয়া দিল্লি: শুক্রবার (২৪ জুন), আরও একবার গুজরাট দাঙ্গার মামলায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে ক্লিনচিট দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। শুধু তাই নয়, একই সঙ্গে আদালত বলেছে তাঁর বিরুদ্ধে এই মামলাটি সাজানোর জন্য অর্থ প্রদানও করা হয়েছিল। তবে, এই প্রথম নয়, গত ২০ বছরে বিভিন্ন স্তরের আদালত ও তদন্ত কমিশনই তাঁকে ক্লিন চিট দিয়েছে। সরকার নিযুক্ত কমিশন, স্বঘোষিত ট্রাইব্যুনাল, মিডিয়া সংস্থা, বিভিন্ন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক এনজিও এবং সুপ্রিম কোর্ট নিযুক্ত বিশেষ তদন্তকারী দল মিলিয়ে এই বিষয়ে ৬০ টিরও বেশি তদন্ত হয়েছে। প্রতিটি নিরপেক্ষ তদন্তেই ক্লিন চিট পেয়েছেন নরেন্দ্র মোদী। তবে তারপরও বিরোধী লবির চেষ্টা বন্ধ হয়নি। এমনকি, সুপ্রিম কোর্টও এদিন বলেছে, ‘গত ১৬ বছর ধরে বিষয়টি জিগিয়ে রাখার জন্য স্পষ্টতই উল্টো নকশার কার্যধারা চালানো হয়েছে। যারা এই ধরনের আইনের অপব্যবহারের সঙ্গে জড়িত, তাদের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে।’

২০০২ সালে, কেন্দ্রের ইউপিএ সরকারের সক্রিয় আর্থিক ও প্রাতিষ্ঠানিক সমর্থনে পুষ্ট হয়ে নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে এই মামলা শুরু করেছিলেন তিস্তা সেতলওয়াড়। ​​গুজরাট দাঙ্গার ৪ বছর পর ২০০৪-০৫ সালে প্রথমবার এই মামলায় আবেদনকারী হয়েছিলেন জাকিয়া জাফরি। তার আগেই আদালত নিযুক্ত তদন্তকারী দল তাদের রিপোর্চ জমা দিলেও, জাকিয়া জাফরির আবেদন এবং আরো কিছু ভুয়ো অভিযোগ ব্যবহার করে তদন্ত প্রক্রিয়া দীর্ঘায়িত করেছিলেন। সুপ্রিম আদেশে এসআইটিকে ওই অভিযোগগুলি খতিয়ে দেখতে হয়েছিল।

এসআইটি তলব করেছিল তৎকালীন গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে। বাইরে থেকে বিভিন্ন ভাবে তাঁর বিরুদ্ধে প্রচার চালিয়েছিলেন বিরোধী লবির নেতারা। তবে, ৯ ঘন্টার জন্য এসআইটির জেরার মুখোমুখি হয়েছিলেন মোদী। পুঙ্খানুপুঙ্খ জিজ্ঞাসাবাদ এবং তদন্তের পর, এসআইটি সুপ্রিম কোর্টে একটি বিশাল প্রতিবেদন দাখিল করেছিল। তারা স্পষ্ট বলেছিল, নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে সব অভিযোগই ভিত্তিহীন বলে প্রমাণিত হয়েছে।

তারপরও তিস্তা সেতলওয়াড় এবং কংগ্রেসে তাঁর সমর্থকরা এসআইটির ওই রিপোর্ট প্রত্যাখ্যান করার দাবি জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেছিলেন। ২০১০-১১ সালে, সুপ্রিম কোর্ট সম্পূর্ণ রিপোর্টটি খতিয়ে দেখে নরেন্দ্র মোদীকে ক্লিন চিট দিয়েছিল। সুপ্রিম কোর্ট অবশ্য জাকিয়া জাফরিকে ​​ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে ওই প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে আপত্তি জানিয়ে প্রতিবাদ আবেদন দায়ের করার অনুমতি দিয়েছিল।

জাকিয়া জাফরির নামে সেই পিটিশন দায়ের করেছিলেন তিস্তা সেতলওয়াড়। ১০ বছর পর হঠাৎ করে বেশ কয়েকজন সাজানো সাক্ষীকেও হাজির করা হয়েছিল। তবে ম্যাজিস্ট্রেট তাদের সাক্ষকে সম্পূর্ণরূপে অবিশ্বস্ত বলে খারিজ করে দিয়েছিলেন। সেই রায়কে গুজরাট হাইকোর্টে জাকিয়া জাফরির নামে ফের চ্যালেঞ্জ করেছিলেন তিস্তা। গুজরাট হাইকোর্টও মোদীকে ক্লিন চিট দিয়েছিল। মোদীর বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিতে আসা সব সাক্ষীদের সাক্ষকেই খারিজ করা হয়েছিল।

পরে, গুজরাট হাইকোর্টের রায়কে জাকিয়া জাফরির হয়ে সুপ্রিম কোর্টে চ্যালেঞ্জ করেছিলেন তিস্তা সেতলওয়াড়। কপিল সিব্বল তাঁদের হয়ে লড়েছিলেন। সেই আবেদনই এদিন খারিজ করে দিল সুপ্রিম কোর্ট। একটি পর্যবেক্ষণ আদালত বলেছে এসআইটির পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্তে সাক্ষীদের মিথ্যাচার সম্পূর্ণরূপে প্রকাশ পেয়েছে। বিগত 20 বছরের ঘটনা এবং শীর্ষ আদালতের সর্বশেষ রায় থেকে স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে, গুজরাট দাঙ্গার মিথ্যা আখ্যানের দায় নরেন্দ্র মোদীর ঘাড়ে চাপাতে গিয়ে, মোদী বিরোধীরা তাঁর ব্যক্তিক্তকে আরও দৃঢ় করে তোলার পাশাপাশি এই মিথ্যা আখ্যানের মুখোশও খুলে দিয়েছে।

প্রথম থেকেই গুজরাট দাঙ্গাকে আন্তর্জাতিকীকরণের প্রয়াস শুরু হয়েছিল। এরপর, ২০০৫ সালের মার্চে শবনম হাশমি এবং তাঁর এনজিও আনহাদ সারা বিশ্বের বামপন্থী কর্মী এবং এনজিওগুলিকে ইমেল করে মোদী বিরোধী প্রচার চালিয়েছিলেন। গুজরাটের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে ভিসা না দিতে চাওয়ার মার্কিন সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সংসদে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং-এর বিবৃতি দেওয়ার পর, তাঁর বিরুদ্ধেও একটি স্বাক্ষর প্রচার চালিয়েছিলেন। এর ৮ বছর পর, ২০১৩ সালে শবনম হাশমি তাঁর ফেসবুক পেজে নরেন্দ্র মোদীর ‘মিথ্যা’ প্রকাশ করার জন্য একটি ওয়েবসাইটও চালু করার কথা ঘোষণা করেছিলেন। ২০১১ সালের জানুয়ারিতে গুজরাট দাঙ্গা সংক্রান্ত ১০টি মামলার কার্যক্রমের বিষয়ে রাষ্ট্রসংঘের মানবাধিকার পরিষদে প্রতিবেদন পেশ করার জন্য বামপন্থী মানবাধিকার কর্মীদের এবং এনজিওদের তিরস্কারও করেছিল সুপ্রিম কোর্ট। এদিনের সুপ্রিম কোর্টের রায়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর এই অবিরাম নিপীড়নের অবসান ঘটবে বলেই আশা করা হচ্ছে।