AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

Indian Defense Force: ইজরায়েল-ইরানের মতো ভারতেও মিসাইল বৃষ্টি হলে সুরক্ষা দেবে কে? জানুন সেনার প্ল্যানিং

Indian Defense Force: কয়েক বছর আগে রাশিয়া থেকে পাঁচ ইউনিট এস-৪০০ মিসাইল ডিফেন্স কিনতে চুক্তি করেছিল ভারত। তিন ইউনিট হাতে এসেছে এবং ইনস্টলও হয়ে গিয়েছে। তো ইজরায়েলের বিমান হামলায় যেখানে এস- থ্রি ৩০০ মুখ থুবড়ে পড়ল, সেখানে এস-৪০০ নিয়ে কী নতুন করে ভাবনাচিন্তার প্রয়োজন রয়েছে?

Indian Defense Force: ইজরায়েল-ইরানের মতো ভারতেও মিসাইল বৃষ্টি হলে সুরক্ষা দেবে কে? জানুন সেনার প্ল্যানিং
ফাইল চিত্র।Image Credit: Getty Image
| Updated on: Nov 03, 2024 | 2:21 PM
Share

নয়া দিল্লি: ইজরায়েলি ডিফেন্স ফোর্সের মুর্হুমুর্হু হামলায় নাকি তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়েছে ইরানের আকাশ সুরক্ষা! যুদ্ধ যেভাবে মোড় নিচ্ছে, তাতে ভবিষ্যতে ভারতের উপরে এমন হামলা হলে কী হবে? আকাশ সুরক্ষায় বড় ভরসা এস- ৪০০। নিয়ন্ত্রণ রেখা  (Line of Control) ও প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা (Line of Actual Control) – দুই সীমান্তেই আকাশ পাহারার দায়িত্বে রয়েছে এই এস -৪০০।

কয়েক বছর আগে রাশিয়া থেকে পাঁচ ইউনিট এস-৪০০ মিসাইল ডিফেন্স কিনতে চুক্তি করেছিল ভারত। তিন ইউনিট হাতে এসেছে এবং ইনস্টলও হয়ে গিয়েছে। তো ইজরায়েলের বিমান হামলায় যেখানে এস- থ্রি ৩০০ মুখ থুবড়ে পড়ল, সেখানে এস-৪০০ নিয়ে কী নতুন করে ভাবনাচিন্তার প্রয়োজন রয়েছে? এই অবস্থায় প্রশ্নটা উঠতে বাধ্য। দেশের তিন প্রাক্তন সেনাপ্রধান- বায়ুসেনা প্রধান – ডিআরডিও’র প্রাক্তন চিফ – সবাই একসুরে বলছেন, এস-ফোর হানড্রেড বা দেশের আকাশ সুরক্ষা – কোনও ক্ষেত্রেই উদ্বেগের কোনও কারণ নেই। কয়েক মাস আগে ভারত ও  চিন সীমান্তে সেনা মহড়ায় এস-৪০০-র পরীক্ষা হয়েছে।

রুশ মিসাইল ডিফেন্সের কার্যকারিতা খতিয়ে দেখার পরীক্ষা এটা। তখনও ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধে পরপর এস-৪০০ ধ্বংস হওয়ার খবর আসছিল। তাই প্র্যাকটিক্যাল পরীক্ষার মুখে ফেলা হয় এস-৪০০-কে। ভারতের হাতে থাকা একাধিক মিসাইল ফায়ার করে পরীক্ষা হয়। সেখানে কিন্তু নিজের সুনামে চিড় ধরতে দেয়নি রুশ মিসাইল ডিফেন্স। তাতে ভরসা পেয়েছিল সেনা। পরে স্পষ্ট হয়, ইউক্রেন এস-ফোর হানড্রেড দিয়ে যা, যা দাবি করেছিল, পুরোটাই সত্যি নয়। ডিফেন্স অ্যানালিটিক্স পত্রিকায় দাবি করা হয়, ইউক্রেনের ছোড়া মিসাইলে বেশ কয়েকটি এস-৪০০ সিস্টেম ধ্বংস হলেও তাকে ব্যর্থ বলা যাবে না। যুদ্ধে যে কোনও অস্ত্র, এমনকি অত্যাধুনিক অস্ত্রও যেকোনও সময়ে অকেজো হয়ে যেতে পারে। দেখা গেছে একমাত্র আমেরিকার তৈরি সুপার প্যাট্রিয়ট ডায়নামো মিসাইলের সামনেই এস-৪০০ কিছুটা অকেজো। বাকি সব ক্ষেত্রে তার সাফল্য ৮০ শতাংশের বেশি।

দেশের প্রাক্তন সেনাপ্রধান ব্লগ পোস্টে লিখেছেন, “আমরা শুধুই এস- ফোর হানড্রেডের উপর ভরসা করে বসে নেই। এর বাইরেও ভারতের আকাশ সুরক্ষা বেশ শক্তিশালী। আকাশের মতো এয়ার টু এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম, সমর ওয়ান ও টু সারফেস টু এয়ার ডিফেন্স, পৃথ্বী এয়ার ডিফেন্স – ভারতের হাতে সব উপাদানই মজুত”।

তবে একটা ব্যাপারে সেনাকর্তারা একমত। ভারতের হাতে প্রয়োজনীয় সবকিছুই আছে। তবে যথেষ্ট পরিমাণে নেই। আর এই কারণেই ভারতের আকাশসীমার একটি বড় অংশ সবসময়ই অরক্ষিত থেকে যায়। সেটা মাথায় রেখেই নিজস্ব মিসাইল ডিফেন্স তৈরির কাজে হাত দেয় ভারত। দেড় বছর আগে যে কাজে হাত দেওয়া হয়েছিল, সেটা কতটা এগোল? নিজস্ব প্রযুক্তিতে মিসাইল ডিফেন্স বা এমডিএস তৈরি করছে ভারত। ২০২৩-এর শুরুর দিকে সব অর্থেই এটা ছিল এক সাহসী সিদ্ধান্ত। আর খুব দ্রুত এই কাজে প্রথম ধাপটা পেরিয়ে গেল দেশ।

জল ও স্থলপথে শত্রুর মিসাইলকে চিহ্নিত করার প্রযুক্তি ভারতের হাতে-

২০২১ সালে ভারতীয় সেনার হাতে আসে বারাক-৮ এমআর স্যাম মিসাইল। মূলত এই প্রযুক্তিকে ব্যবহার করে মিসাইল ডিফেন্স সিস্টেমের ডিটেকশন লঞ্চার তৈরি করেছেন ভারতীয় প্রতিরক্ষা বিজ্ঞানীরা। ডিটেকশন লঞ্চারকে বলা হয় মিসাইল ডিফেন্সের নার্ভসেন্টার। শত্রুর হামলা রুখতে ডিটেকশন সেন্টারকেই সবার প্রথম অ্যাকটিভ করা হয়। মিসাইল ডিফেন্স সিস্টেমের মূলত পাঁচটি অংশ রয়েছে। লঞ্চারের পাশাপাশি থাকে রেডার, ইন্টারসেপ্টার, কম্যান্ড অ্যান্ড কন্ট্রোল এবং অ্যারো ইউনিট। এর মধ্যে ডিটেকশন সেন্টার, রেডার ও ইন্টারসেপ্টারের কাজ শত্রুর অস্ত্রকে চিহ্নিত করা। অ্যারো ইউনিট পাল্টা হামলার কাজ করে। আর গোটা সিস্টেম যাতে ঠিকঠাক কাজ করে তা নিশ্চিত করে কম্যান্ড অ্যান্ড কন্ট্রোল।

ভারতের হাতে অ্যারো ইউনিটের প্রযুক্তি নেই।  মিসাইল ডিফেন্স সিস্টেমের জন্য আলাদা কন্ট্রোল ইউনিটেরও প্রয়োজন। তবে ভারতের হাতে নিজস্ব মিসাইল ডিফেন্স না থাকলেও দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র খুঁজে বের করার প্রযুক্তি রয়েছে। ২০২২-র ২ নভেম্বর দূরপাল্লার ইন্টারসেপ্টর ক্ষেপণাস্ত্র এডি-১-এর পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণ করেছিল ডিআরডিও। তখনই প্রতিরক্ষা মন্ত্রক জানিয়েছিল, ৯৯.৮ শতাংশ ক্ষেত্রে নিখুঁতভাবে টার্গেটকে খুঁজে বের করে ‘হিট টু কিল’ করতে পারে এডি-১। প্রতিরক্ষা বিশারদরা বলেন, ইন্টারসেপ্টারের কাজ যেখানে শেষ, মিসাইল ডিফেন্স সিস্টেমের কাজ সেখান থেকেই শুরু। এটি যে কোনও ক্ষেপণাস্ত্র চিহ্নিত করতে পারে।  শত্রুর মিসাইল শনাক্ত করে ধ্বংস করতে তৈরি এবং ক্রুজ ও হাইপারসনিক মিসাইল হামলা রুখতেও সক্ষম।

রাশিয়ার থেকে এস-৪০০ মিসাইল ডিফেন্স সিস্টেম কেনা নিয়ে অনেক জটিলতার মুখে পড়তে হয় ভারতকে। মার্কিন নিষেধাজ্ঞা চাপার ভয় ছিল। দিল্লি অবশ্য সেসবে পাত্তা দেয়নি। তখনই নিজস্ব মিসাইল ডিফেন্স তৈরির চ্যালেঞ্জ নিয়েছিলেন ভারতীয় প্রতিরক্ষা বিজ্ঞানীরা। প্রথম ধাপ পেরনোর পর তাঁদের সামনে এখন আরও দুটো ধাপ পেরনোর চ্যালেঞ্জ।