Manipur Violence: মণিপুরে ‘মানব-ঢাল’ ব্যবহার করে হামলার ভয়ঙ্কর পরিকল্পনা ফাঁস করল সেনা
Manipur violence: রীতিমতো পরিকল্পনা করে মণিপুরে একের পর এক গ্রামে হামলা চালানো হচ্ছে। ভারতীয় সেনার পক্ষ থেকে দুষ্কৃতীদের দুটি দলের মধ্যে কথোরকথনে আড়ি পেতেছিল সেনা। তাতেই জানা গিয়েছে, হামলার ক্ষেত্রে সাধারণ মানুষকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করার পরিকল্পনা করেছে দুষ্কৃতীরা।
ইম্ফল: সোমবারই (২৯ মে), হিংসাধ্বস্ত মণিপুর সফরে গিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। গত ৩ মে থেকে মণিপুর রাজ্য জুড়ে মেইতেই এবং কুকি সম্প্রদায়ের মধ্যে সংঘর্ষ চলছে। গত শনিবার (২৭ মে), সেনা প্রধান মনোজ পাণ্ডে রাজ্যে আসার পর থেকেই কুকি সম্প্রদায়ের দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া শুরু করেছে সেনা। রবিবার, মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিং জানিয়েছিলেন, সেনার সঙ্গে সংঘর্ষে ৩৩ জন ‘কুকি জঙ্গি’ নিহত হয়েছে। তারপর থেকে রাজ্যে ৩ পুলিশকর্মী-সহ আরও ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এই সংঘর্ষের মধ্যেই সেনার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, রীতিমতো পরিকল্পনা করে মণিপুরে একের পর এক গ্রামে হামলা চালানো হচ্ছে। রবিবার, সেনার অভিযানের আগে কুকি দুষ্কৃতীদের দুটি দলের মধ্যে যোগাযোগে আড়ি পেতেছিল সেনা। আর তাতেই জানা গিয়েছে, হামলার ক্ষেত্রে সাধারণ মানুষকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করার পরিকল্পনা করেছে দুষ্কৃতীরা।
সেনার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, রবিবার দুষ্কৃতীদের একটি দল আরেকটি দলকে মেইতেই সম্প্রদায় অধ্যুষিত একটি গ্রামে হামলা চালানোর নির্দেশ দিয়েছিল। এর জন্য একটি ভয়ঙ্কর পরিকল্পনা করেছিল তারা। সেনা জানিয়েছে, দুষ্কৃতীদের একটি দলের পক্ষ থেকে অপর দলকে বলা হয়েছিল, সামনের সারিতে সশস্ত্র দুষ্কৃতীকারীরা থাকবে। আর পিছনের সারিতে থাকবে সাধারণ মানুষ। এইভাবে গ্রামটিতে হামলা চালিয়ে সেটি পুরো ধ্বংস করার পরিকল্পনা করা হয়েছিল। দ্বিতীয় দলটির পক্ষ থেকে গ্রামটির অবস্থান জানতে চাওয়ায়, প্রথম দলটি তাদের সেই গ্রামের নাম এবং অবস্থান জানিয়েছিল। তবে, সেনার পক্ষ থেকে তা প্রকাশ করা হয়নি। এরপর প্রথম দলটি, দ্বিতীয় দলটিকে একটি গাড়ির ব্যবস্থা করে সেই পরিকল্পনা মাফিক কাজ করার নির্দেশ দিয়েছিল।
এখানেই কুকি দুষ্কৃতীদের দুই দলের মধ্যে যোগাযোগ শেষ হয়নি। সেনা জানিয়েছে, এরপর, দ্বিতীয় দলটি প্রথম দলের কাছ থেকে এলাকার সর্বশেষ পরিস্থিতি সম্পর্কে জানতে চেয়েছিল এবং জানিয়েছিল, তারা সশস্ত্র ১৫ জনকে নিয়ে ঘটনাস্থলে যাচ্ছে। তাতে প্রথম দলটি জানিয়েছিল, চিন্তার কিছু নেই। কারণ অস্ত্রশস্ত্র কম থাকলেও, তাদের লোকবল অনেক। প্রচুর ক্যাডার নিয়ে তারা সেই গ্রামে যাচ্ছে। আরও অস্ত্রশস্ত্রও আসছে বলে জানিয়েছিল প্রথম দলটি। আড়ি পেতে কুকি দুষ্কৃতীদের এই হামলার পরিকল্পনা জানার পরই অভিযানে নেমেছিল সেনা। গ্রাম ধ্বংসের পরিকল্পনা ভেস্তে দিয়েছে সেনা, তবে এলাকায় শান্তি ফেরেনি।
সেনার পক্ষ থেকে দুষ্কৃতীদের এই কথোপকথন টুইটারে পোস্ট করে তাদের প্রতি সতর্কবার্তাও দেওয়া হয়। সেনা বলেছে, “মণিপুরের সকল দুষ্কৃতীর প্রতি আমাদের বার্তা – তোমরা আমাদের নজরে আছ। মানব ঢাল ব্যবহারের মতো ভয়ঙ্কর পরিকল্পনা করা হলেও, ভারতীয় সেনা শান্তি ফেরাতে এবং জনগণবান্ধব পদ্ধতি গ্রহণ করতে বদ্ধ পরিকর।”