লালকেল্লার ঘটনায় ‘অস্বস্তি’তে আন্দোলনকারী কৃষকরা, সামাল দিতে তিন সীমান্তেই সাংবাদিক বৈঠক

গতকালের ঘটনায় মোট ২২টি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। এরমধ্যে চারটি নাঙ্গোই থানায় ও একটি পশ্চিম বিহার থানায় দায়ের করা হয়েছে। প্রায় ২০০ জন আন্দোলনকারীকে আটক করেছে পুলিশ।

লালকেল্লার ঘটনায় 'অস্বস্তি'তে আন্দোলনকারী কৃষকরা, সামাল দিতে তিন সীমান্তেই সাংবাদিক বৈঠক
সিংঘু সীমান্তে বাড়ানো হয়েছে পুলিসি নিরাপত্তা। ছবি:ANI
Follow Us:
| Updated on: Jan 27, 2021 | 3:02 PM

নয়া দিল্লি: প্রজাতন্ত্র দিবসে কৃষকদের ট্রাক্টর মিছিলে যে বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়েছিল, সেই ঘটনাকে কেন্দ্র করে একাধিক বৈঠকে সরগরম রাজধানী। গতকাল লালকেল্লায় হামলার বিষয়ে বুধবার তিকরি সীমান্তে দুপুর ১২টায় সাংবাদিক বৈঠকের আয়োজন করা হয়েছে। ইতিমধ্যেই সকাল থেকে সেখানে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। অন্যদিকে সিংঘু সীমান্তেও আজ পঞ্জাবের আন্দোলনকারী কৃষক সংগঠনের নেতারা দুপুর ১২টা থেকেই নিজেদের মধ্যে বৈঠকে বসবেন। আজ সকালেই দিল্লি পুলিশের কমিশনারও সিনিয়র অফিসারদের সঙ্গে বৈঠকে বসেছেন।

দিল্লি পুলিশের কমিশনারের সঙ্গে উর্ধ্বতন ও গোয়েন্দা বিভাগের অফিসারদের সঙ্গে বৈঠকের পর পুলিশের তরফে একটি সাংবাদিক বৈঠক করা হবে বলে জানানো হয়েছে। এই বৈঠকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক ও আইন মন্ত্রকের আধিকারিকরাও উপস্থিত রয়েছেন। লালকেল্লায় বিশৃঙ্খলার ঘটনার তদন্ত ক্রাইম শাখার হাতে তুলে দেওয়া হবে কিনা,তা এই বৈঠকেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

পুলিশ সূত্রে জানানো হয়েছে, গতকালের ঘটনায় মোট ২২টি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। এরমধ্যে চারটি নাঙ্গোই থানায় ও একটি পশ্চিম বিহার থানায় দায়ের করা হয়েছে। এই অভিযোগপত্রে কয়েকজন কৃষক নেতার নামও উল্লেখ করা হয়েছে বলে সূত্রের খবর। এছাড়াও প্রায় ২০০ জন আন্দোলনকারীকে আটক করেছে পুলিশ। ৩০০-রও বেশি পুলিসকর্মী আহত হয়েছেন গতকালের ঘটনায়।

আরও পড়ুন: ‘বাড়ি ফিরে যান’ আন্দোলনকারীদের অনুরোধ হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রীর, রাজ্যে জারি হাই অ্যালার্ট

আজ সিংঘু পঞ্জাবের কৃষক সংগঠনগুলির মধ্যে বৈঠক শেষের পর তাঁরাও আন্দোলনকারীদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য রাখবেন বলে জানা গিয়েছে। তিকরি সীমান্তের পাশাপাশি গাজিপুর সীমান্তেও দুপুর তিনটে নাগাদ আন্দোলনকারী কৃষকরা একটি সাংবাদিক বৈঠক করতে পারেন বলে জানা গিয়েছে। এদিকে, পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে ইতিমধ্যেই লালকেল্লায় পৌঁছেছেন কেন্দ্রীয় পর্যটনমন্ত্রী প্রহ্লাদ পটেল। গতকালের ঘটনায় কতটা ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, সেই বিষয়টি নিজের চোখে দেখতেই তিনি লালকেল্লায় গিয়েছেন।

গতকাল প্রজাতন্ত্র দিবসের প্যারেড শেষের পর দিল্লিতে কৃষকদের ট্রাক্টর মিছিল করার কথা থাকলেও সকাল ৮টা নাগাদই কিষাণ মজদুর সংঘর্ষ কমিটির সদস্যরা ব্যারিকেড ভাঙার চেষ্টা করেন। শান্তিপূর্ণভাবেই মিছিল শুরু হলেও পরবর্তী সময়ে কিছু সংখ্যক আন্দোলনকারী কৃষকরা ব্যারিকেড ভেঙে নির্ধারিত রুট অমান্য করেই এগোতে শুরু করেন। একদল কৃষক লালকেল্লাতেও জোর করে ঢুকে নিজেদের সংগঠনের পতাকা লাগান ও ভিতরে ভাঙচুর করেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে দিল্লি পুলিশের তরফে কাঁদানে গ্যাসও চালানো হয়।

বিভিন্ন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের পাশাপাশি পঞ্জাবের কৃষক ইউনিয়নের তরফেও গতকালের ঘটনার নিন্দা করা হয়েছে। কিষাণ মজদুর সংঘর্ষ কমিটির সদস্য এসএস পান্ঢের বলেন, “আমাদের লালকেল্লায় যাওয়ার কোনও পরিকল্পনাই ছিল না। কিছু দুষ্কৃতীরা আমাদের মিছিলে প্রবেশ করে এই ঘটনা ঘটিয়েছে। লাল কেল্লায় পতাকা উত্তোলনকারী দীপ সিধুও আমাদের আন্দোলনের অংশ ছিলেন না।” একই কথা বলেন ভারতীয় কিষাণ ইউনিয়নের নেতা রাকেশ তিকাইতও। তিনি বলেন, “এই আন্দোলন কৃষকদের এবং তা কৃষকদেরই থাকবে। তবে যারা ব্যারিকেড ভেঙেছে, তাঁরা এই আন্দোলনের আর অংশ হতে পারবেন না, তাঁদের দ্রুত আন্দোলনস্থল ছেড়ে চলে যেতে হবে।”

আরও পড়ুন: নাবালিকা যৌন নিগ্রহে বম্বে হাইকোর্টের ‘বিপজ্জনক’ পর্যবেক্ষণে স্থগিতাদেশ