Tamil Nadu: বরফ পড়ছে, উটির তাপমাত্রা নামল শূন্যয়! বিভ্রান্ত বিশেষজ্ঞরা

Tamil Nadu: জম্মু-কাশ্মীরে বরফ নেই। কাশ্মীর উপত্যকার যখন এই হাল, সেই একই সময়ে অবাক করা দৃশ্য তামিলনাড়ুর নীলগিরি জেলায়। তুষারপাত হচ্ছে উটিতে। তীব্র ঠাণ্ডার কামড়ে জুবুথুবু জেলার মানুষ। নীলগিরির এই বিস্ময়কর আবহাওয়া, চিন্তায় ফেলেছে জলবায়ু ও আবহাওয়া বিশেষজ্ঞদের।

Tamil Nadu: বরফ পড়ছে, উটির তাপমাত্রা নামল শূন্যয়! বিভ্রান্ত বিশেষজ্ঞরা
শূন্য ডিগ্রিতে নেমে গেল উটির তাপমাত্রাImage Credit source: Twitter
Follow Us:
| Updated on: Jan 18, 2024 | 8:04 PM

চেন্নাই: জম্মু-কাশ্মীরে বরফ নেই। মাছি তাড়াচ্ছে গুলমার্গের স্কিইং রিসর্টগুলি। বরফ নেই বলে কাশ্মীর ভ্রমণ বাতিল করছেন বহু পর্যটক। ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছেন হোটেল, ট্রাভেল ব্যবসায়ীরা। কাশ্মীর উপত্যকার যখন এই হাল, সেই একই সময়ে অবাক করা দৃশ্য তামিলনাড়ুর নীলগিরি জেলায়। তুষারপাতে সাদা হয়ে গিয়েছে এই পার্বত্য জেলা। তীব্র ঠাণ্ডায় কামড়ে জুবুথুবু জেলার মানুষ। সবুজ লনগুলি ঢেকে গিয়েছে সাদা তুষারে। মাঝ রাত থেকে সকাল পর্যন্ত, ঘন কুয়াশায় এক হাত দূরের জিনিসই দেখা যাচ্ছে না। তাপমাত্রার এই অবাক পতন ডেকে এনেছে অনেক স্বাস্থ্যগত সমস্যা। শুধু তাই নয়, এই খামখেয়ালি আবহাওয়ায় কৃষিকাজের ব্যপক ক্ষতি হবে বলে আশঙ্কা করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। আর নীলগিরির এই বিস্ময়কর আবহাওয়া, চিন্তায় ফেলেছে জলবায়ু ও আবহাওয়া বিশেষজ্ঞদের।

কতটা ঠান্ডা পড়েছে? সাধারণত নীলগিরি এবং উটি এলাকায় সারা বছরই মনোরম আবহাওয়া থাকে। তবে, জানুয়ারি মাসেই নীলগিরিতে সবথেকে বেশি ঠান্ডা পড়ে। এই সময় তামিলনাড়ুর এই পাহাড়ি জেলার গড় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা থাকে ১৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসের আশপাশে। কিন্তু, চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে নীলগিরি জেলার বহু জায়গায় তাপমাত্রা হিমাঙ্কের নীচে নেমে গিয়েছে। সরকারি তথ্য অনুসারে, উধাগামন্ডলমের কাঁথাল এবং থালাইকুন্থায় বৃহস্পতিবার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বোটানিক্যাল গার্ডেনে পারদ ছিল ২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ঘরে। স্যান্ডিনাল্লাহে ছিল ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

নীলগিরি জেলায় শুষ্ক ঠান্ডা কখনও দেখা যায় না বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। ঠান্ডার কারণে সকালে কাজে বের হতে পারেছেন না সাধারণ মানুষ। শরীর উষ্ণ রাখতে গরম জামা পড়ছেন তাঁরা। কিন্তু, এত তীব্র ঠাণ্ডার জন্য এখানকার মানুষ তৈরি ছিলেন না। অনেক জায়গায় গরম পোশাক পরার পরও, আগুন জ্বালিয়ে শরীর গরম রাখার চেষ্টা করছেন তাঁরা। সবথেকে সমস্যায় পড়েছেন, যাঁরা স্কুটার বা মোটরবাইকের মতো দু-চাকার গাড়ি চালান। এই হিমশীতল পরিবেশে, বাইক-স্কুটার চালকরা হাজার গরম পোশাক পরেও শীতের মোকাবিলা করতে পারছেন না। ফলে শ্বাসকষ্ট, প্রবল মাথাব্যথা এবং জ্বরের মতো স্বাস্থ্যগত সমস্যা দেখা দিচ্ছে ঘরে ঘরে।

নীলগিরি পাহাড়ে এই অস্বাভাবিক ঠান্ডায় উদ্বিগ্ন স্থানীয় বাসিন্দা থেকে শুরু করে পরিবেশকর্মীরা। নীলগিরি এনভায়রমেন্ট সোশ্যাল ট্রাস্টের সদস্য, ভি শিবদাসের মতে, আবহাওয়ার এই পরিবর্তন বিশ্বউষ্ণায়ন এবং এল-নিনো প্রভাবে ঘটেছে। তিনি বলেছেন, “ঠান্ডা পড়তে এবার অনেক দেরি হয়েছে। আর তারপর এখানে বরফ পড়ছে। এই ধরনের জলবায়ু পরিবর্তন নীলগিরি এলাকার জন্য বড় চ্যালেঞ্জের। এই বিষয়ে বিশদে গবেষণা করা দরকার।” এল নিনো হল এক বিশেষ জলবায়ুগত অবস্থা। এর প্রভাব গোটা বিশ্ব জুড়ে অনুভুত হয়। মধ্য ও পূর্ব প্রশান্ত মহাসাগরে সমুদ্রপৃষ্ঠের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেলে, এই জলবায়ুগত অবস্থা সৃষ্টি হয়। এর প্রভাবে, প্রশান্ত মহাসাগরীয় জেট স্ট্রিম দক্ষিণ দিকে সরে যায়। ফলে, বিশেষ করে ডিসেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারির মধ্যে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া জুড়ে গড় বৃষ্টিপাত কমে যায়।

এদিকে, এই ঠান্ডার জেরে নীলগিরিতে কৃষিকাজ ব্যহত হবে বলে আশঙ্কা করছেন কৃষকরা। নীলগিরি জেলার প্রধান কৃষিজ ফসল হল চা। জেলা জুড়ে প্রচুর চায়ের চাষ হয়। কিন্তু, বর্তমান পরিস্থিতিতে বড় পরিসরে চা বাগানের কাজ করাও চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। স্থানীয় চা শ্রমিক ইউনিয়নের সেক্রেটারি আর সুকুমারন বলেছেন, “প্রথমে ডিসেম্বরে প্রবল বর্ষণ হল। তারপর এখন এই প্রবল ঠান্ডা। এর ফলে চা বাগানের বড় ক্ষতি হয়েছে। ফলে আগামী মাসে চা উৎপাদনে বড় প্রভাব পড়তে পারে।” ফলন কমার আশঙ্কা করছেন সবজি চাষিরাও। তাঁরা জানিয়েছেন, এই আবহাওয়ায় বিশেষ করে বাঁধাকপি চাষের বড় ক্ষতি হতে পারে।