Tripura: ত্রিপুরা হিংসার ভুয়ো খবর সংক্রান্ত ১০২ টি মামলা খতিয়ে দেখে রিপোর্ট তৈরির নির্দেশ
Tripura Police: সব মিলিয়ে প্রায় ১০২ জন সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারীর বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে। এদের মধ্যে রয়েছেন আইনজীবী, সাংবাদিক এবং সামাজিক কর্মী এবং অন্যান্য।
আগরতলা : অক্টোবর মাসে ত্রিপুরায় ধর্মীয় স্থানে তাণ্ডব চালানোর যে ভুয়ো খবর ছড়িয়ে পড়েছিল, তা নিয়ে ইতিমধ্যেই সক্রিয় ভূমিকায় দেখা গিয়েছে সেখানকার পুলিশকে। ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব পুলিশের ডিজিপিকে ইতিমধ্যেই সেই মামলাগুলি নিয়ে পর্যালোচনা করতে বলেছেন। সব মিলিয়ে প্রায় ১০২ জন সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারীর বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে। এদের মধ্যে রয়েছেন আইনজীবী, সাংবাদিক এবং সামাজিক কর্মী এবং অন্যান্য। ধর্মীয় স্থানে ভাঙচুরের ভুয়ো খবর অনলাইনে শেয়ার করা জন্য মামলা করা হয়েছে তাঁদের বিরুদ্ধে। ওই সমস্ত মামলাগুল খতিয়ে দেখে তার রিপোর্ট জমা করার জন্য ত্রিপুরা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব।
মুখ্যমন্ত্রীর দফতর থেকে নির্দেশ পাওয়া মাত্রই আরও সক্রিয় হয়েছে পুলিশ। ত্রিপুরা পুলিশের ডিজিপি ভি এস যাদব ওই সংক্রান্ত মামলাগুলি খতিয়ে দেখার জন্য ক্রাইম ব্রাঞ্চকে নির্দেশ দিয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রীর দফতরের (সিএমও) একজন আধিকারিক বলেছেন, যারা রাজ্যে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করার জন্য গুজব ছড়ানোর চেষ্টা করেছে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে পর্যালোচনার পর পাঠানো রিপোর্টে সাম্প্রদায়িক বিশৃঙ্খলার গুজব ছড়ানোর অভিযোগে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কোনও প্রমাণ না পাওয়া গেলে রাজ্য তাদের মামলা প্রত্যাহার করতে পারে।
ওই আধিকারিক জানিয়েছেন, “কিছুদিন আগে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভুয়া ছবি ও ভিডিয়ো পোস্ট করে আইন শৃঙ্খলা বিঘ্নিত করার ষড়যন্ত্র হয়েছিল। ত্রিপুরা পুলিশ সম্প্রীতি বজায় রাখতে এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ১০২ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে এবং মুখ্যমন্ত্রী ডিজিপিকে এই মামলাগুলি পর্যালোচনা করতে বলেছেন।” উল্লেখ্য ত্রিপুরা পুলিশ ৩ নভেম্বর রাজ্যে সাম্প্রদায়িক হিংসা সম্পর্কিত ভুয়ো খবর পোস্ট করার অভিযোগে ৬৮ জন টুইটার অ্যাকাউন্ট ব্যবহারকারী সহ কমপক্ষে ১০২ জন সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারীর বিরুদ্ধে মামলা করেছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে এই সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্মগুলিতে চিঠিও পাঠানো হয়েছিল সংশ্লিষ্ট অ্যাকাউন্টগুলি ব্লক করে দেওয়ার জন্য।
উল্লেখ্য, ত্রিপুরায় সাম্প্রতিক রাজনৈতিক হিংসা এবং ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের উপর হিংসার যে অভিযোগগুলি প্রকাশ্যে আসছিল, সেগুলি তুলে ধরে তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় মুখপাত্র তথা সমাজ কর্মী সাকে গোখলে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের কাছে অভিযোগ করেছিলেন। সেই অভিযোগের ভিত্তিতেই ত্রিপুরার মুখ্যসচিব এবং ত্রিপুরা পুলিশের ডিজিপির থেকে রিপোর্ট তলব করেছিল কমিশন।
অভিযোগের গুরুত্ব খতিয়ে দেখে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন ত্রিপুরা পুলিশ কী কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, তা বিস্তারিত রিপোর্ট চার সপ্তাহের মধ্যে জমা করতে বলেছিল। এর পাশাপাশি, রাজ্য মানবাধিকার কমিশনের তরফেও বিষয়টি নিয়ে কোনও নির্দেশ প্রশাসনকে দেওয়া হয়েছে কিনা, তাও উল্লেখ করতে বলা হয়েছিল। যদি কোনও নির্দেশ দেওয়া হয়ে থাকে, তবে তার কপিও চার সপ্তাহের মধ্যে পাঠাতে বলা হয়েছিল।
উল্লেখ্য, ত্রিপুরা পুলিশ এই ঘটনা নিয়ে কয়েক দিন আগেই জানিয়েছিল বিশ্ব হিন্দু পরিষদের ওই মিছিলকে কেন্দ্র করে যে অভিযোগগুলি উঠে আসছিল, সেই সংক্রান্ত বিষয়ে সোশ্যাল মিডিয়া জুড়ে ছড়িয়ে পড়ছে ভুয়ো ছবি। তাদের বক্তব্য ছিল, ধর্মীয় সম্প্রীতি নষ্টের চেষ্টায় প্রার্থনাস্থল ভাঙচুর ও জ্বালিয়ে দেওয়ার ছবি পোস্ট করা হচ্ছে ভুয়ো অ্যাকাউন্ট থেকে।
আরও পড়ুন : Trinamool Congress: কর্পূরের মতো উবেছে বিরোধী ঐক্য, কংগ্রেসের ডাকা বৈঠকে থাকবে না তৃণমূল