Uttarakhand HC: দেখাত যৌনাঙ্গ, শিশুর সামনেই স্ত্রীর সঙ্গে পায়ু সঙ্গম! তারপরও হাইকোর্ট বলল…
Uttarakhand HC: জোর করে 'অ্যানাল সেক্স' অর্থাৎ 'পায়ু সঙ্গম'। বিয়ে করলেই কি কোনও স্ত্রী, তাঁর স্বামীকে তাঁর সঙ্গে এই অস্বাভাবিক যৌনতার অনুমতি দিয়ে দেয়? ভারতের আইন তাই বলছে। সম্প্রতি, স্বামীর বিরুদ্ধে স্ত্রীর করা বলপূর্বক অস্বাভাবিক যৌনতার মামলায় রায় ঘোষণার সময় এমনই পর্যবেক্ষণ করল উত্তরাখণ্ড হাইকোর্ট।

দেরাদুন: জোর করে ‘অ্যানাল সেক্স’ অর্থাৎ ‘পায়ু সঙ্গম’। বিয়ে করলেই কি কোনও স্ত্রী, তাঁর স্বামীকে তাঁর সঙ্গে এই অস্বাভাবিক যৌনতার অনুমতি দিয়ে দেয়? ভারতের আইন তাই বলছে। সম্প্রতি, স্বামীর বিরুদ্ধে স্ত্রীর করা বলপূর্বক অস্বাভাবিক যৌনতার মামলায় রায় ঘোষণার সময় এমনই পর্যবেক্ষণ করল উত্তরাখণ্ড হাইকোর্ট। স্বামীর বিরুদ্ধে ৩৭৭ ধারায় মামলা করা হয়েছিল। ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৭৭ ধারা অনুযায়ী, অস্বাভাবিক যৌনতা অপরাধ। কিন্তু, ৩৭৭ ধারার সঙ্গেই ধর্ষণ বিষয়ক ৩৭৫ ধারাকেও পড়তে হবে বলে জানিয়েছে হাইকোর্ট। আদালত বলেছে, ৩৭৫ ধারার ব্যতিক্রম (২) অনুযায়ী, স্ত্রীর বয়স পনেরো বছরের কম না-হলে, কোনও পুরুষ ও তাঁর স্ত্রীর মধ্যে সঙ্গন বা অন্য যৌন কার্যকলাপ কখনই ধর্ষণ নয়। কাজেই, কোনও স্বামী তাঁর স্ত্রীর সঙ্গে পায়ু সঙ্গম করলেও অস্বাভাবিক যৌন সম্পর্কের জন্য স্বামীকে অভিযুক্ত করা যাবে না।
মামলাটির ক্ষেত্রে স্ত্রীর অভিযোগ, স্বামী তাঁর ইচ্ছার বিরুদ্ধে তাঁর সঙ্গে বারবার পায়ু সঙ্গম করেছেন। এর ফলে তিনি গুরুতর আহত হয়েছেন, এমনকি, তাঁর রক্তপাতও হয়েছে। একাধিক হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে হয়েছে। আহত হওয়ার পরও, তাঁর উপর জোর করার এবং তাঁকে শারীরিক নির্যাতন করার অভিযোগ করেছেন তিনি স্বামীর বিরুদ্ধে। তিনি আরও অভিযোগ করেছেন, স্বামীর বলপূর্বক পায়ু সঙ্গম বা মুখ সঙ্গমের দাবি তিনি না মানলেই, স্বামী ল্যাপটপে তাঁদের সন্তানকে অশ্লীল বিষয়বস্তু দেখাত। সন্তানকে ওই জঘন্য অভিজ্ঞতা থেকে রক্ষা করতে, তিনি স্বামীর দাবি মানতে বাধ্য হতেন। শুধু তাই নয়, সন্তানকে গোপনাঙ্গও নাকি দেখাতেন স্বামী, শিশুটির সামনেই প্রস্রাব করতেন। এমনকি, শিশুটির সামনেই জোর করে স্ত্রীর সঙ্গে মুখ সঙ্গম করতেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।
এই সকল অভিযোগের প্রেক্ষিতে, ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৭৭ ধারা (অস্বাভাবিক যৌনতা) এবং পকসো আইনের প্রাসঙ্গিক ধারায় স্বামীর বিরুদ্ধে মামলা করেছিলেন স্ত্রী। হরিদ্বারের অতিরিক্ত দায়রা আদালতের জজ তথা বিশেষ বিচারক (পকসো) স্বামীকে তলব করেছিলেন। এই তলবের আদেশকেই হাইকোর্টে চ্যালেঞ্জ করেছিলেন স্বামী। হাইকোর্টে শুনানি চলাকালীন, স্ত্রীর পক্ষের আইনজীবী যুক্তি দেন, বিয়ের সময় কেউ অস্বাভাবিক যৌন সম্পর্কের জন্য সম্মতি জানায় না। তিনি আরও যুক্তি দেন, ৩৭৭ ধারা একটি স্বাধীন বিধান। ৩৭৫ ধারার সঙ্গে এর কোনও সম্পর্ক নেই। ৩৭৭ ধারা অনুযায়ী, যে কোনও বলপূর্বক অস্বাভাবিক যৌনতাই শাস্তিযোগ্য অপরাধ। স্বামী-স্ত্রীর ক্ষেত্রে এই আইনে কোনও ব্যতিক্রম নেই। তিনি আরও দাবি করেন হিন্দু বিবাহ আইন, ১৯৫৫-র এর ১৩ (২) ধারাতে পায়ুকামকে বিবাহবিচ্ছেদের ভিত্তি হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছে।
কিন্তু, বিচারপতি জানান, হিন্দু বিবাহ আইনের এই ধারায় কিন্তু, স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে পায়ুকাম হলে, তাকে অপরাধ বলা হয়নি। স্ত্রী ব্যতীত অন্য কোনও মহিলার সঙ্গে স্বামী ওই আচরণ করলে, সেই ক্ষেত্রে হিন্দু বিবাহ আইনের এই ধারা অনুযআয়ী স্বামীকে দোষী সাব্যস্ত করা যায়। আবার স্বামী-স্ত্রীর কোনও যৌন কার্যকলাপ যদি ৩৭৫ ধারায় দণ্ডনীয় না হয়, তবে একই অপরাধ ৩৭৭ ধারার অধীনেও অপরাধ বলে গন্য করা হবে না। আদালত বলে, “এমন পরিস্থিতিতে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৭৭ ধারার বিধানগুলিতে স্বামীর বিরুদ্ধে আবেদন করা যাবে না। স্বামীকে ৩৭৭ ধারা অভিযোগ থেকে মুক্তি দিলেও, তার বিরুদ্ধে পকসো ধারায় হওয়া অপরাধে, হরিদ্বারের অতিরিক্ত দায়রা আদালতের জজ তথা বিশেষ বিচারক (পকসো)-এর সমন বহাল রেখেছে।





