Sreerupa Mitra Chaudhury on Hanskhali case : নির্ভয়াকাণ্ডের ছায়া, মমতার মন্তব্যে হাঁসখালি জাতীয় খবর; বললেন ‘নির্ভয়া দিদি’
Hanskhali physical assault case : নির্ভয়াকাণ্ডের পর আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন তিনি। মেয়েদের অধিকারের জন্য লড়াই করেন। পশ্চিমবঙ্গের মানুষের কাছে তাঁর পরিচয় "নির্ভয়া দিদি"। তিনি মালদার ইংরেজবাজারে বিজেপি বিধায়ক শ্রীরূপা মিত্র চৌধুরী। হাঁসখালিকাণ্ডে শাসকদলকে তীব্র আক্রমণ করলেন।
কলকাতা : হাঁসখালিকাণ্ডে ৫ সদস্যের তথ্য অনুসন্ধান কমিটি গঠন করেছে কেন্দ্রীয় বিজেপি নেতৃত্ব। ওই কমিটিতে রাজ্য থেকে রয়েছেন বিধায়ক শ্রীরূপা মিত্র চৌধুরী। এছাড়া কমিটিতে রয়েছেন উত্তর প্রদেশের সাংসদ রেখা বর্মা। রয়েছেন উত্তর প্রদেশের এক মন্ত্রী। তামিলনাড়ু ও মহারাষ্ট্র থেকে একজন করে রয়েছেন ওই কমিটিতে। সেই কমিটির সদস্য হওয়ার পর TV9 বাংলাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে হাসঁখালির ঘটনা নিয়ে শাসকদল ও রাজ্য সরকারকে তীব্র আক্রমণ করলেন শ্রীরূপা।
কী বললেন শ্রীরূপা মিত্র চৌধুরী-
শ্রীরূপা বলেন, “আমাদের সর্বভারতীয় নেতৃত্ব একটি টিম গঠন করেছেন। কী ঘটেছে, কেন ঘটেছে, তা সরেজমিনে দেখা দরকার আমাদের। আমরা প্রাথমিক যে তথ্য পাব, তার ভিত্তিতে একটা রিপোর্ট তৈরি করব। তারপর সেই রিপোর্ট বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতিকে (জে পি নাড্ডা) দেব। তারপর সেই রিপোর্ট তিনি সরকারকে দেবেন, নাকি কোনও ব্যবস্থা নেবেন, সেটা তাঁর উপর নির্ভর করছে।”
হাঁসখালিতে এক কিশোরীকে বার্থ-ডে পার্টিতে গণধর্ষণের অভিযোগ ওঠে। পরে ওই কিশোরীর মৃত্যু হয়। এবং তড়িঘড়ি দাহ করা হয় মৃতদেহ। যা নিয়ে রাজনৈতিক চাপানউতোর শুরু হয়। ওই ঘটনা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আপনি রেপড বলবেন? নাকি প্রেগন্যান্ট বলবেন? না লাভ অ্যাফেয়ার্স বলবেন?” কিশোরীর সঙ্গে অভিযুক্তের প্রেমের সম্পর্ক ছিল বলেও উল্লেখ করেন মমতা। তাঁর এই মন্তব্যের নিন্দা করেন অনেকে। মমতার বক্তব্য অসংবেদনশীল বলে সমালোচনা করে বিরোধীরা।
মমতার মন্তব্যের তীব্র নিন্দা করলেন শ্রীরূপা। তিনি বলেন, “হাঁসখালির ঘটনা আর ওই এলাকার মধ্যে গণ্ডিবদ্ধ নেই। যেভাবে মুখ্যমন্ত্রী বয়ান দিলেন, তাতে এই ঘটনা এখন জাতীয় খবর হয়ে গিয়েছে। ভারতের সবাই জেনে গিয়েছেন।”
২০১২ সালে দিল্লিতে নির্ভয়াকাণ্ডের পর আন্দোলনের নেতৃত্বে দিয়েছিলেন শ্রীরূপা। তাই বাংলার মানুষ তাঁকে নির্ভয়া দিদি বলেন। তখনও তিনি রাজনীতিতে আসেননি। নির্ভয়াকাণ্ডের উল্লেখ করে তাঁর বক্তব্য, “২০১৪ সালে কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইউপিএ সরকারের পতনের মূলত দুটি কারণ। দুর্নীতি ও নির্ভয়াকাণ্ড। নির্ভয়াকাণ্ডের সময় আমি রাজনীতিতে আসিনি। সেইসময় প্রচুর লড়াই করেছি। জনসভা করেছি।”
হাঁসখালির ঘটনায় নির্ভয়াকাণ্ডের ছায়া দেখতে পাচ্ছেন ইংরেজবাজারের বিজেপি বিধায়ক। তিনি বলেন, “আমি নিজে দেখেছি, একটা মেয়ের উপর কী পাশবিক অত্যাচার হয়েছিল। সারা ভারত জেগে উঠেছিল। পশ্চিমবঙ্গের মানুষও মিছিল করেছে। সারা ভারত জেগে উঠেছিল। হাঁসখালির ঘটনায় নির্ভয়াকাণ্ডের ছায়া দেখতে পাচ্ছি।”
শাসকদলের অভিযোগ, বিজেপির এই কমিটি রাজনৈতিক চাল। কারণ, প্রশাসন ইতিমধ্যে পদক্ষেপ করেছে। এই নিয়ে শ্রীরূপা বলেন, “গতকাল কলকাতা হাইকোর্ট হাঁসখালির ঘটনার তদন্ত সিবিআইকে দিয়েছে। তার মানে, পুলিশ যে তদন্ত করছে, তা সন্তোষজনক নয়। আদালত কোনও রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান নয়। তারা সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে।”
রাজ্য় প্রশাসনের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিলেন তিনি। বললেন, “প্রশাসন ধর্ষক, খুনিকে ধরছে না। শ্রীরূপা কোথায় গেলেন, সেদিকে নজর প্রশাসনের।”