National Health Mission: বরাদ্দের আট ভাগের এক ভাগও দেয়নি কেন্দ্র, অর্থাভাবে ধুঁকছে রাজ্যে জাতীয় স্বাস্থ্য মিশন প্রকল্প
National Health Mission: স্বাভাবিকভাবেই এই ঘটনা নিয়ে শুরু হয়ে গিয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর। তৃণমূল সাংসদ চিকিৎসক শান্তনু সেন বলেন, "ইতিমধ্যেই বিভিন্ন খাতে ১ লক্ষ ১৫ হাজার কোটি টাকা বাংলার পাওনা। জাতীয় স্বাস্থ্য মিশনের টাকাও তারা দিচ্ছে না।
কলকাতা: অর্থ নিয়ে কেন্দ্র রাজ্যের টানাপোড়েনের প্রভাব এবার রাজ্যের স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে। টাকার অভাবে মার খাচ্ছে রাজ্যের জাতীয় স্বাস্থ্য মিশনের একাধিক প্রকল্প। ব্যাহত হচ্ছে মা-শিশু স্বাস্থ্য় সম্পর্কিত যাবতীয় পরিষেবা। টাকা চেয়ে ইতিমধ্যেই কেন্দ্রকে চিঠি করেছে রাজ্য। অভিযোগ, এখনও পর্যন্ত কেন্দ্রের তরফ থেকে তার কোনও সদুত্তর মেলেনি। জাতীয় স্বাস্থ্য মিশন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি প্রকল্প। চিকিৎসকদের কথায়, এটাই স্বাস্থ্য পরিষেবার মেরুদণ্ড। সদ্যোজাত, প্রসূতির পুষ্টি, জননী সুরক্ষা যোজনা, টিকাকরণ সবটাই এই প্রকল্পের আওতায় থাকে। পাশাপাশি ডেঙ্গি, ম্যালেরিয়া, যক্ষ্মার মতো রোগীর চিকিৎসাও এই প্রকল্পের আওতায় হয়ে থাকে।
এই প্রকল্পের জন্য ২২০০ কোটি টাকা বার্ষিক অর্থ বরাদ্দ হয় রাজ্যের ক্ষেত্রে। আসল বরাদ্দ ২৮০০ কোটি টাকা। নগদ ধরলে ২২০০ কোটি। তার মধ্যে ৬০ শতাংশ অর্থাৎ ১৩২০ কোটি টাকা কেন্দ্রের দেওয়ার কথা। বাকি ৪০ শতাংশ অর্থাৎ ৮৪০ কোটি টাকা রাজ্য দেয়।
রাজ্যের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থ বর্ষে রাজ্য মাত্র ২৮০ কোটি টাকা পেয়েছে। তার মধ্যে ৭৫ কোটি টাকা কর্মীদের, জাতীয় স্বাস্থ্য মিশনের অন্তর্গত কর্মীদের বেতন দিতেই চলে গিয়েছে। স্বাস্থ্যের প্রতিটি ক্ষেত্রেই টাকার অভাব দেখা গিয়েছে। আগে প্রসূতিদের বিনা খরচায় অ্যাম্বুলেন্স পরিষেবা দেওয়া হত। এখন সেই অর্থেই টান। একই সমস্যা স্বাস্থ্য়ক্ষেত্রের সর্বস্তরেই দেখা দিয়েছে।
এক রোগীর বক্তব্য, “হাসপাতালে সব ওষুধ পাওয়া যায় না। দামী ওষুধ বাইরে থেকেই কিনতে হয়।” একই বক্তব্য আরেক রোগীর। তিনিও বললেন, “দামী ওষুধগুলো কাউন্টার থেকে কিনতে হয়। হাসপাতাল থেকে আগে দামী ওষুধগুলো দিত। বাইরে সেগুলির দাম ৮০০, ১২০০ টাকা। কিন্তু এখন আর সেই ওষুধগুলো পাওয়া যায় না।” তাতে কী হচ্ছে? রোগীর পরিজনদের কথায়, “যে ওষুধগুলো মূলত হাসপাতালে পাওয়া যাচ্ছে, কম দামী ওষুধগুলো, সেগুলিই চিকিৎসকরা লিখে দিচ্ছেন।” আর তাতেই আরেক রোগী বলেন, “ওষুধে কাজ হচ্ছে না ঠিকঠাক। ওষুধের পাওয়ার বেশি হলে তো দামও বাড়বে, কম পাওয়ারের ওষুধ দিচ্ছে।”
অ্যাম্বুলেন্স পরিষেবা নিয়েও বিস্তর অভিযোগ। এক রোগীর পরিজনের কথায়, “দু’বার-তিন বার ফোন করলে, একবার ফোন ধরে। তাও বলে চালক নেই। এক ঘণ্টা পরে পাবেন। জরুরি পরিস্থিতিতে বিশাল সমস্যা।”
স্বাভাবিকভাবেই এই ঘটনা নিয়ে শুরু হয়ে গিয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর। তৃণমূল সাংসদ চিকিৎসক শান্তনু সেন বলেন, “ইতিমধ্যেই বিভিন্ন খাতে ১ লক্ষ ১৫ হাজার কোটি টাকা বাংলার পাওনা। জাতীয় স্বাস্থ্য মিশনের টাকাও তারা দিচ্ছে না। স্বাস্থ্য পরিকাঠামোকে তারা দুর্বল করে দেওয়ার চেষ্টা করছে। তবে এই বাংলার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরে স্বাস্থ্য বিভাগে যে বিপ্লব ঘটেছে, সারা দেশের জন্য রোল মডেল।”
বিজেপি নেতা শমীক ভট্টাচার্য বলেন, “আমাদের রাজ্য সরকার তো সঠিক হিসাবই দেয় না। এক ফান্ডের টাকা অন্যত্র ব্যবহার করবে। একটি নির্দিষ্ট প্রকল্পে নয়, রাজ্যের সর্বস্তরেই রাজ্য সরকার এই বেনিয়ম চালাচ্ছে।”