‘অনেক কষ্ট করে ডাক্তার বানিয়েছিলাম, আমার মেয়েটাকে খুন করে ফেলল ওরা’, RG Kar-কাণ্ডে কার দিকে ইঙ্গিত মৃত চিকিৎসকের মায়ের?
R K Kar: "আমার মেয়েটাকে খুন করে ফেলেছে ওরা। আমার একটা মাত্র মেয়ে। অনেক কষ্ট করে ডাক্তার করেছিলাম।" আর বিধ্বস্ত বাবা বললেন, "আমার মেয়েটাকে তো আর ফিরে পাব না।"
কলকাতা: পানিহাটির নিম্ন মধ্যবিত্ত বাড়ির মেয়ে। একমাত্র সন্তান। ছোটবেলা থেকেই মেধাবী। স্কুলের ‘নক্ষত্র’ ছাত্রী। তাঁকে ঘিরে স্বপ্ন দেখেছেন বাবা-মা, শিক্ষিকারা। সে স্বপ্নপূরণ তিনি করেছিলেন। প্রথম চান্সেই ডাক্তারি পড়ার সুযোগ। ডাক্তার হয়ে গিয়েছিলেন। কলকাতার প্রথম সারির হাসপাতাল আরজি করে রোগীর পরিষেবায় ছিলেন তিনি। বৃহস্পতিবার রাতেও খাবার খাওয়ার পর ফোনে কথা হয়েছিল বাবার সঙ্গে। কিন্তু তারপরের যে ফোনটা এল পরিবারের কাছে, তাতে গোটা পৃথিবীটা যেন এক লহমায় অন্ধকার হয়ে গিয়েছে তাঁদের। ফোন এসেছিল, তাঁদের সন্তান নাকি আত্মঘাতী হয়েছেন। যদিও প্রথম থেকেই সে দাবি নস্যাৎ করে দিয়েছে পরিবার। বাবা-মা থেকে প্রতিবেশী সকলেরই দাবি, কেন আত্মঘাতী হবেন সফল একজন চিকিৎসক। চনমনে স্বভাবের মেয়েটা যে সকালেও ভাল মনে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন। মায়ের অভিযোগ, খুন করা হয়েছে তাঁকে।
মেয়েকে দেখতে এসে তাঁর মা করলেন বিস্ফোরক অভিযোগ। তিনি বললেন, “আমার মেয়েটাকে খুন করে ফেলেছে ওরা। আমার একটা মাত্র মেয়ে। অনেক কষ্ট করে ডাক্তার করেছিলাম।” আর বিধ্বস্ত বাবা বললেন, “আমার মেয়েটাকে তো আর ফিরে পাব না।” মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ইতিমধ্যেই ফোন করেছেন মৃত চিকিৎসকের মাকে। কথা বলেছেন তাঁর সঙ্গে। বাবার দাবি, “মুখ্যমন্ত্রী ফোন করেছিলেন। ওঁ বলেছেন, যতটা পারব চেষ্টা করব।” পরিবারের আরও অভিযোগ, খবর পেয়ে হাসপাতালে এসে পৌঁছানোর পর তাঁদের প্রথমে দেহ দেখতেই দেওয়া হচ্ছিল না। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছেন তাঁরা। মৃত চিকিৎসকের সহকর্মীর বক্তব্য, “খুন। আমাদের কাছে খুবই সাসপিসিয়াস সারকামটান্সেস লেগেছে।”
তবে চিকিৎসকের দেহ দেখার পর ফরেনসিক টিম স্পষ্ট করেছে, “আমরা যেটা দেখলাম, ঠোঁটে, গালে, গলায় মার্ক রয়েছে। দেহ চিৎ অবস্থায় ছিল, শোয়ানো ছিল। আমরা যখন গিয়েছিলাম, দেহ পুরো কভার ছিল।” আর পুলিশের বক্তব্য, বাইরের লোক নয়, ‘নিজেদের লোকজনের’ কাজ। কারণ দেহ উদ্ধার হয়েছে সেমিনার হলে। ওয়ার্ড অনেকটাই দূরে। সেমিনার হলে বাইরের কারোর প্রবেশাধিকার থাকে না। খুন বলে প্রাথমিকভাবে মনে করছে পুলিশ। ছাত্রীর ওপরের দিকে কাপড় থাকলেও, নীচের অংশে কাপড় ছিল না বলে পুলিশ সূত্রের খবর। ঘটনাস্থলে রয়েছেন পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল।
প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার নাইট ডিউটি ছিল ওই চিকিৎসকের। শুক্রবার সকাল সাড়ে ১১টার সময়ে হাসপাতালের সেমিনার রুম থেকে ওই মহিলা চিকিৎসকের দেহ উদ্ধার হয়। ধর্ষণ করে খুনের অভিযোগ তোলপাড় শহর।
আরও খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Tv9 বাংলা অ্যাপ (Android/ iOs)