Primary TET: রবিবার যাঁরা টেট দিলেন, তাঁরা চাকরি পাবেন কবে?

Primary TET: যেভাবে মামলা আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে আছে, সেখানে অতি দ্রুত চলতি নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ হওয়ারও জায়গা নেই। এমন ব্যাখ্যা আইনজীবীদের একাংশেরই।

Primary TET: রবিবার যাঁরা টেট দিলেন, তাঁরা চাকরি পাবেন কবে?
টেট ২০২২ পরীক্ষা
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Dec 12, 2022 | 11:40 PM

কলকাতা: একদিকে চাকরির দাবিতে আন্দোলন। তখনই চাকরির আশায় পরীক্ষা দিলেন প্রায় ৭ লক্ষ চাকরিপ্রার্থী। আন্দোলনকারীরা চান দ্রুত নিয়োগ। প্রাথমিক শিক্ষকের চাকরির আবেদন করে অবস্থানরত প্রার্থীদের সংখ্যা নেহাত কম নয়। সকলেই টেট উত্তীর্ণ। তাঁদের অভিযোগ, দুর্নীতির কারণে তাঁরা চাকরি পাননি। এই পরিস্থিতিতে গতকাল টেট পরীক্ষা হল। ফলপ্রকাশ হলে বাংলার টেট উত্তীর্ণের তালিকা আরও লম্বা হবে। কিন্তু প্রশ্নটা হল, চাকরি হবে কবে? টেট উত্তীর্ণরা কবে নিয়োগ বৈতরণী পার করতে পারবেন, সেটাই প্রশ্ন। পর্ষদের দাবি, দ্রুত নিয়োগ হবে। কিন্তু, সত্যিই তা হবে? প্রশ্ন উঠছে। কেউ কেউ বলছেন, অদূর ভবিষ্যতে যে সবাই চাকরি পেয়ে যাবেন এই ধারণা দিবাস্বপ্ন।

পর্ষদ শেষ নিয়োগ করেছে কয়েক মাস আগে। প্রশ্ন ভুল মামলায় আদালতের নির্দেশে ২০১৪ সালের টেট উত্তীর্ণ ২৭০ জনের বেশি চাকরিপ্রার্থী ৮ বছর পর চাকরি পেয়েছেন। ২০২২ সালে উত্তীর্ণদের কতদিন অপেক্ষা করতে হবে? আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য বলছেন, নিয়োগই হবে না। তবে হিসেব অনুযায়ী, মামলা নিষ্পত্তি না হলে নিয়োগ করা কঠিন, তা মানতে আপত্তি নেই কোনও পক্ষেরই। পর্ষদ যে নিয়োগ প্রক্রিয়া ইতিমধ্যেই শুরু করেছে সেটাই শেষ করতে বেশ সময় লাগবে। চলতি নিয়োগ প্রক্রিয়ায় ১১ হাজার ৭৬৫ শূন্যপদে চাকরি দিতে চেয়েছিল পর্ষদ। কিন্তু অতীতের মামলার জেরে, নতুনদের জন্য সেই শূন্যপদ কমে এসে দাঁড়িয়েছে ৭ হাজারে। স্রেফ ২০১৭ সালেই টেট পাশ করে বসে আছেন ৯ হাজারের বেশি। ৭ হাজারের এই শূন্যপদে তাঁদের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় নামবেন ২০১৪ সালের টেট উত্তীর্ণরা। যার অর্থ, প্রচুর চাকরিপ্রার্থী রয়েছেন, যাঁরা ২০১৪ বা ২০১৭ সালে টেট পাশ করেছেন।

ভবিষ্যতে পর্যদ যখন নতুন নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করবে, তখন আবেদন করতে পারবেন ২০২২ সালের টেট উত্তীর্ণরা। তবে তা হওয়ার আগে চলতি নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ হওয়া উচিত। তবে যেভাবে মামলা আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে আছে, সেখানে অতি দ্রুত চলতি নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ হওয়ারও জায়গা নেই। এমন ব্যাখ্যা আইনজীবীদের একাংশেরই।

কোথায় কোথায় সমস্যা?

১. বিএড প্রশিক্ষিতরা প্রাথমিকে চাকরির জন্য যোগ্য কি না, এই মামলা সুপ্রিম কোর্টে বিচারাধীন। তাই এই নিয়োগ প্রক্রিয়ায় বিএডরা চাকরি পাবেন কি না তা সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ না এলে বলা মুশকিল। তাই এই মামলার ওপর নির্ভর করছে নিয়োগ।

২.কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে অ্যাকাডেমিক মূল্যায়নের জন্য একটি কমিটি তৈরি করার নির্দেশ রয়েছে। সেই কমিটি সুপারিশ করবে আগে যাঁরা মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেছেন আর এখন যাঁরা পাশ করেছেন, কোনও চাকরির ক্ষেত্রে তাঁদের মধ্যে নম্বরের বিভেদ দূর হবে কী করে। পর্ষদ নিয়োগ প্রক্রিয়ার ক্ষেত্রে কোথাও এই কমিটির সুপারিশের দিকেও নজর রেখেছে।

চলতি মামলাগুলো নিষ্পত্তি হলে তবেই বর্তমান নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে। আর বর্তমান নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলে তবেই ২০২২ সালের টেট উত্তীর্ণদের নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু। তাই অতি দ্রুত ২০২২ সালের টেট উত্তীর্ণদের চাকরি পাওয়ার সম্ভাবনা ক্ষীণ। যদিও পর্ষদ সভাপতি গৌতম পাল অবশ্য বলছেন, তিনি চান দ্রুত নিয়োগ হোক। সরকার বা শিক্ষামন্ত্রীর বক্তব্যও তাই, আদালতের নির্দেশে দ্রুত নিয়োগ। কিন্তু যেভাবে অতীতের একের পর এক মামলার গেরো, দ্রুত নিয়োগ কি আদৌ সম্ভব? সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তীর দাবি, এই সরকার থাকলে নিয়োগ কোনওদিনই হবে না, এরা সব তালগোল পাকিয়ে দেয়।

প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ বলছে, দ্রুত নিয়োগ হবে। ৫ বছর পর টেট পরীক্ষায় বসে একই আশায় চাকরিপ্রার্থীরাও। কিন্তু, নিয়োগ-জটে সেই প্রক্রিয়ার জল কতদূর গড়াবে, সেই প্রশ্ন থাকছেই। ফলে যাঁরা টেট উত্তীর্ণ হবেন, তাঁদের হাতে কবে চক-ডাস্টার উঠবে, সেটাই দেখার।