কত এসেছে, কতই বা খরচ হয়েছে? টিকা সঙ্কটের কারণ ব্যাখ্যা করে বিবৃতি স্বাস্থ্যভবনের
West Bengal Covid 19 Vaccine: স্বাস্থ্য দফতর স্পষ্টভাবে বোঝাতে চেয়েছে, টিকা সঙ্কটে রাজ্য সরকারের কোনও ভূমিকা নেই।
কলকাতা: রাজ্যে টিকার টানাটানি মারাত্মক। বিরোধীদের অভিযোগ, টিনা বণ্টনে দুর্নীতি করছে রাজ্য সরকার। কৃত্রিমভাবে ভ্যাকসিন সঙ্কট তৈরি করছে রাজ্য। কেন্দ্রের তরফে পর্যাপ্ত পরিমাণ ভ্যাকসিন পাঠানো হলেও তা ব্যবহার করছে না রাজ্য। ঠিক এমন একটা পরিস্থিতিতে পশ্চিমবঙ্গে করোনা টিকার বাস্তব চিত্র তুলে ধরা হয়েছে স্বাস্থ্য দফতরের পক্ষ থেকে। রীতিমতো তথ্যসমৃদ্ধ বিবৃতি প্রকাশ করে জানানো হয়েছে, ঠিক কত টিকা রাজ্য এখনও পর্যন্ত পেয়েছে, কত টিকা দেওয়া হয়েছে, এবং বর্তমানে টিকার ভাঁড়ারের ছবিটা ঠিক কী রকম। এককথায় স্বাস্থ্য দফতর স্পষ্টভাবে বোঝাতে চেয়েছে, টিকা সঙ্কটে রাজ্য সরকারের কোনও ভূমিকা নেই।
জুলাই মাস পড়লেই দ্বিতীয় ডোজ়ের জন্য রাজ্যে বকেয়া প্রাপকদের সংখ্যা প্রায় ৩৮ লক্ষে পৌঁছে যাবে। এখনই দ্বিতীয় ডোজ় দরকার এমন মানুষের সংখ্যা ৮ লক্ষের বেশি। কিন্তু, যে পরিমাণ টিকা রাজ্যে আসছে, তাতে জোগান দেওয়া একপ্রকার অসম্ভব হয়ে উঠছে। এহেন পরিস্থিতির জেরে কাঠগড়ায় উঠছে স্বাস্থ্য দফতর। কিন্তু মঙ্গলবার স্বাস্থ্য দফতরের পক্ষ থেকে পরিষ্কার করে দেওয়া হয়, কেন এই মুহূর্তে রাজ্যে টিকার সঙ্কট দেখা দিয়েছে। কেনই বা রাজ্যের কোনও ভূমিকা এতে নেই।
মঙ্গলবার রাতে দেওয়া এই বিবৃতিতে স্বাস্থ্য অধিকর্তা অজয় চক্রবর্তী জানিয়েছেন, রাজ্য সরকার এখনও পর্যন্ত ১.৯৯ কোটি ডোজ় টিকা পেয়েছে। যার মধ্যে ১.৯৮ কোটি ডোজ় টিকা ইতিমধ্যেই দেওয়া হয়ে গিয়েছে। টিকা অপচয় প্রায় নগণ্য বললেই চলে। উল্টে ৫ লক্ষ ডোজ় সাশ্রয় করেছে রাজ্য। মঙ্গলবার পর্যন্ত রাজ্যের মোট ২.১৭ কোটি মানুষ টিকা পেয়েছেন। যাঁদের মধ্যে ৬৩.৩৯ লক্ষের বয়স ১৮ থেকে ৪৪। ৪৫ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে টিকা পেয়েছেন ৮২.৫৬ লক্ষ মানুষ। ৬০ উর্ধ্ব প্রাপকদের সংখ্যা ৭১.১১ লক্ষ। টিকা প্রাপকদের মধ্যে ১.২১ কোটি পুরুষ এবং ৯৫.৫৮ লক্ষ মহিলা।
যে রাজ্যের বিরুদ্ধে অধিকাংশ সময়ই তথ্য গোপনের অভিযোগ ওঠে, সেই রাজ্য এগিয়ে এসে গত ৬ মাসের সমস্ত তথ্য প্রকাশ্যে আনার এই ঘটনা কিছুটা নজিরবিহীন বলা চলে। বিগত কয়েকদিনে বারংবার যেভাবে বিরোধীদের পক্ষ থেকে টিকা-দুর্নীতির অভিযোগ তোলা হয়েছে, এবং খোদ বিরোধী দলনেতা সদলবদলে যেভাবে স্বাস্থ্য ভবনে পৌঁছে যান, সেই কথা মাথায় রেখে এই বিবৃতির রাজনৈতিক তাৎপর্যও অত্যন্ত গভীর বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
আরও পড়ুন: অপেক্ষায় প্রায় ৩৭ লক্ষ, দ্বিতীয় ডোজ়ের টিকাকরণ নিয়ে কড়া নির্দেশিকা স্বাস্থ্য দফতরের
প্রসঙ্গত, টিকা সঙ্কটের কথা মাথায় রেখে মঙ্গলবারই আবার স্বাস্থ্যসচিব এক নতুন নির্দেশিকা জারি করেছেন। যেখানে উল্লেখ পেয়েছে, রাজ্যে এখন যত সংখ্যক টিকা এসে পৌঁছবে তার ৫০ শতাংশই দ্বিতীয় ডোজ়ের জন্য বরাদ্দ করা হবে। একই সঙ্গে জানানো হয়েছে, বুধ এবং বৃহস্পতিবার শুধুমাত্র দ্বিতীয় ডোজ়ই দেওয়া হবে কলকাতা পুরসভায়। এই নির্দেশের পরই কেন এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হল, তার তথ্যসমৃদ্ধ ব্যাখ্যা জানানো হয়েছে স্বাস্থ্যভবনের পক্ষ থেকে।
আরও পড়ুন: মৃত্যু বাড়ছে ২৪ পরগনা ও হুগলিতে, সংক্রমণ কমলেও আলগা হচ্ছে না করোনার মারণ কামড়