AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

Kojagari Lakshmi Puja 2023: ব্রাহ্মণ দিয়ে নয়, শাস্ত্রমতে সঠিক নিয়ম মেনে নিজেই করুন লক্ষ্মী বন্দনা, মিলবে সাফল্য-সৌভাগ্য

Lakshmi Puja Rules: নারী-পুরুষ, উভয়েই লক্ষ্মীর আরাধনা করতে পারবেন। পুরোহিত ছাড়া বাড়িতে লক্ষ্মীপুজো করা সম্ভব। যদি বাড়িতে লক্ষ্মীপুজো করে থাকেন, তাহলে সঠিক উপায়ে কীভাবে করবেন তা জেনে নিন। কীভাবে লক্ষ্মীপুজো করলে সৌভাগ্য , ধনসম্পদ ও ঐশ্বর্যের বন্যা বইবে, তা বিস্তারিত জেনে নিন এখানে...

Kojagari Lakshmi Puja 2023: ব্রাহ্মণ দিয়ে নয়, শাস্ত্রমতে সঠিক নিয়ম মেনে নিজেই করুন লক্ষ্মী বন্দনা, মিলবে সাফল্য-সৌভাগ্য
| Edited By: | Updated on: Oct 28, 2023 | 6:58 PM
Share

গ্রামবাংলার একটি জনপ্রিয় ও লৌকিক পুজো হল এই কোজাগরী লক্ষ্মী পুজো। সারাবছর প্রতি বৃহস্পতিবার লক্ষ্মীর আরাধনা করলেও এই বিশেষ ও শুভ তিথির জন্য অপেক্ষা করে থাকেন আপামর বাঙালি। সাধারণত সন্ধ্যের পর থেকেই বাংলার প্রতিটি ঘরে শঙ্খধ্বনিতে মুখরিত হয়ে ওঠে। এদিন বাড়ির দরজা খুলে দেওয়া হয়। পায়ের চিহ্ন দিয়ে আলপনা দেওয়া হয় দরজার সামনে। তাতে লক্ষ্মীর আগমন ঘটে। এতে দেবী লক্ষ্মী আশীর্বাদ বজায় থাকে। ঘরে দেবীর আরাধনায় মেতে ওঠেন সকলে।

অনেকের মতে, লক্ষ্মীপুজো সঠিক নিয়মে পালন না করা হলে রুষ্ট হন সৌভাগ্যের দেবী। তাই পুরোহিত বা ব্রাহ্মণের দ্বারা পুজো করানো উচিত। এই তথ্য একেবারেই সত্যি নয়। নারী-পুরুষ, উভয়েই লক্ষ্মীর আরাধনা করতে পারবেন। পুরোহিত ছাড়া বাড়িতে লক্ষ্মীপুজো করা সম্ভব। যদি বাড়িতে লক্ষ্মীপুজো করে থাকেন, তাহলে সঠিক উপায়ে কীভাবে করবেন তা জেনে নিন। কীভাবে লক্ষ্মীপুজো করলে সৌভাগ্য , ধনসম্পদ ও ঐশ্বর্যের বন্যা বইবে, তা বিস্তারিত জেনে নিন এখানে…

পুজোর আগে কিছু সাধারণ নিয়ম

– সাধারণত কোজাগরী পূর্ণিমার রাতে সারারাত জেগে থাকার বিধি। এই পুজোর সঙ্গে কৃষক ও কৃষিকাজের একটা বড় সম্পর্ক রয়েছে। আগেকার দিনে, সারারাত জেগে কৃষকরা ওইদিন শস্য পাহারা দেন। পাশাপাশি লক্ষ্মীর কাছে আশীর্বাদ প্রার্থনা করা হয়। অনেকে মনে করেন, চঞ্চলা দেবী যাতে ঘর থেকে পালিয়ে না যান, তাই সারারাত পাহারা দিয়ে থাকেন। শুধু গৃহের কল্যানের জন্য নয়, সমাজেও ধনসম্পদ বৃদ্ধির জন্য লক্ষ্মী পুজোর আয়োজন করা হত। তাই লক্ষ্মীদেবীর আরাধনা অত্যন্ত শুদ্ধ ও পবিত্র। অল্প নৈবেদ্য়তেই তুষ্ট মা লক্ষ্মী। সারাদিনে একবার অন্ন যার জোটে, তিনিও লক্ষ্মীর আরাধনা করতে পারেন এদিন। যার যেমন সাধ্য, তার ঘরে তেমন ভাবেই লক্ষ্মীপুজোর আয়োজন করা হয়।

নিজের বাড়িতে যদি লক্ষ্মী পুজোর আয়োজন করা থাকে, তাহলে পুজোর আগে পুজোর জায়গা একদম পরিষ্কার করে নেওয়া উচিত। তারপর সুন্দর করে আলপনা আঁকা উচিত। ঘরের প্রতিটি দরজায়, পুজোর স্থানে লক্ষ্মীর পা অবশ্যই আঁকতে হয়। মনে রাখবেন, পুজোর গোটা দিন কখনও আলপনা মুছবেন না। এরপর পুজোর জায়গাটি সুন্দর করে ফুল দিয়ে সাজিয়ে, ধূপ, ধুনো, প্রদীপ জ্বালিয়ে রাখতে হয়।

পুজো শুরু করার নিয়ম

– সব আয়োজন করা হয়ে গেলে লক্ষ্মীর আরাধনা করা উচিত। শুরুর আগে গঙ্গা জল ছিটিয়ে দিয়ে নিজের ও সকলের মাথায় ও পুজোর স্থান শুদ্ধ করে নিন। এরপর ভগবান নারায়ণকে মনে মনে স্মরণ করে লক্ষ্মী বন্দনা শুরু করুন। আরাধনার স্থানে একটি তামার পাত্রে জল রাখতে হবে। এই জল সূর্য দেবতাকে অর্পণ করার জন্য রাখা হয়। কারণ তিনিই হলেন সকল শক্তির উৎস। তিনি ছাড়া পৃথিবী পুরো অন্ধকার। তাই তাঁকে জল দেওয়া আবশ্যিক। তামার পাত্রে জল ঢালতে ঢালতেই সূর্যদেবতাকে স্মরণ করুন।

এরপর ঘট স্থাপন করা উচিত। ঘট স্থাপন করার জন্য মাটির একটি নরম ও গোল ডেলা মত করে নিন। তার ওপর ঘটটি বসিয়ে দিন। ঘটের সামনে ধান ছড়িয়ে তারপর সিঁদুর ও তেল দিয়ে স্বস্তিক চিহ্ন আঁকতে হবে। ঘটের ওপর আম্রপল্লব রাখতে হয়। আম পাতার সংখ্যা যেন বিজোড় হয়, তা নাহলে সেই পাতা রাখা অমঙ্গলের আভাস দেয়। পাতার ওপর তেল ও সিঁদুরের ফোঁটা দিতে হয়। ঘটে গঙ্গাজল দিয়ে তার উপর আমের পাতা রাখতে হবে। পাতার ওপর একটা হরিতকী,ফুল,দুর্বা দিয়ে সাজানো দরকার।

লক্ষ্মীদেবীর আহ্বান

ঘটস্থাপনের পর লক্ষ্মীর প্রতিমা বা পটচিত্রকে প্রণাম করতে হয়। ধ্যান মন্ত্রের মাধ্যমে দেবীকে প্রমাম করা উচিত। লক্ষ্মী পাঁচালীতে এই মন্ত্র পেয়ে যাবেন। সঠিক উচ্চারন করতে না পারলে এই মন্ত্র জপবেন না। যদি উচ্চারণ করতে না পারেন তাহলে মনে মনে দেবীকে স্মরণ করে প্রণাম জানাতে পারেন। প্রণাম করে এবার আহ্বান জানানো উচিত। লক্ষ্মী আহ্বান মন্ত্রও পাঁচালিতে দেওয়া থাকে।

নিয়ম অনুযায়ী, আহবান জানানোর পর মূর্তি বা পটচিত্রে থাকা লক্ষ্মীর পা ধুয়ে দেওয়া উচিত। এরপর ঘটে আতপ চাল, দুর্বা, ফুল ও চন্দন লাগানো উচিত। এরপর একে একে দেবীকে সব অর্পণ করতে হবে। ফল,মিষ্টি যা কিছু নৈবেদ্য হিসেবে আয়োজন করেছেন,তা সবই অর্পন করতে হবে। তারপর ধূপ-ধুনো দিতে হবে। অর্পণ করার পর পুষ্পাঞ্জলি। পুষ্পাঞ্জলি মন্ত্র পড়ার সঙ্গে সঙ্গে মন্ত্র তিনবার উচ্চারণ করতে হবে। তারপর দেবীর বাহন পেঁচাকে ফুল ও উপহার হিসেবে ধুতি দিতে হবে। লক্ষ্মীর পাশাপাশি নারায়ণকে স্মরণ করে ঘটের মধ্যেও ফুল অর্পন করা উচিত। নারায়ণের পাশাপাশি দেবতা ইন্দ্র ও কুবেরকেও স্মরণ করে ঘটে ফুল দিতে হবে। এরপর দেবীকে প্রণাম করে লক্ষ্মীদেবীর পাঁচালী পড়ে লক্ষ্মী বন্দনা শেষ করুন।

– মনে রাখবেন, লক্ষ্মীদেবীর পুজোর সময় কখনও কাঁসর-ঘণ্টা বাঁজাবেন না। তাতে দেবী অসন্তুষ্ট থাকেন। শাঁখ বাঁজাতে পারেন। দেবীর ঘটে তুলসী পাতা কখনও দেবেন না। লোহার বাসনপত্র একেবেই ব্যবহার করবেন না।