Lord Ganesha: সিদ্ধিবিনায়কের ছিন্নমস্তক রয়েছে এই গুপ্ত গুহায়! রয়েছে বদ্রী-কেদার-অমরনাথও
Ganesh Chaturtui 2023: বিশ্বাস করা হয়, এদিন মর্ত্যে নেমে ভক্তদের সব মনোবাসনা পূরণ করে থাকেন শিব ও পার্বতীর পুত্র। পৌরাণিক কাহিনি অবলম্বনে আজও রয়েছে গণেশের ছিন্ন মস্তক। ক্রোধের বশে মহাদেব গণেশের মস্তক ধর থেকে আলাদা করে দিয়েছিলেন। মহাদেবের এই কাজে অত্যন্ত কষ্ট পেয়েছিলেন দেবী পার্বতী।

সিদ্ধিদাতা গণেশকে হিন্দুধর্মে সর্বাধিক পূজিত ও জনপ্রিয় এক দেবতা। সব দেবদেবীর পুজোর আগে গজাননকে আগে পুজো করা হয়। হিন্দু পঞ্চাঙ্গ অনুসারে, ভাদ্র মাসের শুক্লপক্ষের মহাআড়ম্বড়ে পালিত হয় দশদিন ব্যাপী গণেশোত্সব। সেই উপলক্ষ্যে বাড়িতে বাড়িতে, বারোয়ারিতে ধুমধাম করে অনুষ্ঠিত হল গণেশের পুজো। হিন্দু দেবদেবীদের নিয়ে রয়েছে নানা রহস্যময় কাহিনি ও পৌরাণিক কাহিনি। তেমনি রয়েছে গণেশের ক্ষেত্রেও। বিশ্বাস করা হয়, এদিন মর্ত্যে নেমে ভক্তদের সব মনোবাসনা পূরণ করে থাকেন শিব ও পার্বতীর পুত্র। পৌরাণিক কাহিনি অবলম্বনে আজও রয়েছে গণেশের ছিন্ন মস্তক। ক্রোধের বশে মহাদেব গণেশের মস্তক ধর থেকে আলাদা করে দিয়েছিলেন। মহাদেবের এই কাজে অত্যন্ত কষ্ট পেয়েছিলেন দেবী পার্বতী। ছেলেকে বাঁচাতে হাতির মাথা দিয়ে প্রতিস্থাপন করেছিলেন তিনি। পরে শান্ত হলে মহাদেব নিজহাতে গণেশের ছিন্নমস্তকটি একটি গুপ্ত গুহায় সুরক্ষিত রেখে আসেন। সেই গুহা বর্তমানেও রয়েছে। কলকাতা থেকে বেশি দূরে নয়। যদি দেখার বাসনা থাকে, তাহলে গণেশের সেই মস্তক দর্শন করে আসতে পারেন। পৌরাণিক কাহিনির সঙ্গে রয়েছে বেশ কিছু মিল। গণেশ পুজো এই মস্তক অভিষেকও করা হয়ে থাকে।
সেই গুপ্ত গুহা কোথায়
ভগবান শিব ভগবান গণেশের মাথা যে গুহায় সুরক্ষিত রেখেছিলেন, তা উত্তরাখণ্ডের পিথোরাগড়ে অবস্থিত। এই গুহা পটল ভুবনেশ্বর নামে বিশেষ পরিচিত। পাহাড়ের ভিতরে প্রায় ৯০ ফুট উচ্চতায় অবস্থিত এই সুরক্ষিত গুহা। এই গুহায় গণেশের মূর্তিটি আদিগণেশ নামে পরিচিত। এই গুহা আদি শঙ্করাচার্য ১৯৪১ খ্রিস্টাব্দে আবিষ্কার করেছিলেন। স্কন্দপুরাণের মানস বিভাগে এই ঘটনা উল্লেখ রয়েছে।
কলিযুগের অবসান
পটল ভুবনেশ্বর গুহায় চার যুগের প্রতীক হিসেবে রয়েছে মোট চারটি পাথরের খণ্ড। এর মধ্যে একটি পাথর ধীরে ধীরে উপরের দিকে উঠেছে, সেই পাথরখণ্ডকে কলিযুগের প্রতীক মনে করা হয়। কথিত আছে, এই পাথর হাজার বছরে একবার করে বৃদ্ধি পায়। আরও বিশ্বাস করা হয়, এই পাথর যেদিন দেওয়ালের মধ্যে আঘাত করবে সেদিনই হবে কলিযুগের অবসান।
রয়েছে তেত্রিশ কোটি দেব-দেবীও
পটল ভুবনেশ্বর গুহা সম্পর্কে অনেকের কাছেই অজানা। এই গুপ্ত গুহায় শুধু গণেশ নয়, শিব-সহ তেত্রিশ কোটি দেব-দেবীরও বাস। এই গুহায় বদ্রীনাথ, কেদারনাথ ও অমরনাথকেও দেখা যায়। বদ্রীনাথে বদ্রীর শিলা ভাস্কর্য রয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে যম কুবের, বরুণ, লক্ষ্মী, গরুড় ও গণেশ। সেই স্থাপত্যের উপর রয়েছে বাবা অমরনাথের গুহা ও বিশাল পাথরের খণ্ড।
পাহাড়ের উপর থেকে ফোঁটা আকার জল পড়ে
পটল ভুবনেশ্বর গুহায় কাল ভৈরবের জিহ্বাও দেখা যায়। বিশ্বাস করা হয়, যদি কেউ কাল ভৈরব তার মুখ থেকে গর্ভে প্রবেশ করে শেষ পর্যন্ত পৌঁছাতে পারেন, তাহলে তিনি মোক্ষলাভ করার সুযোগ পেতে পারেন। গুহায়, ভগবান গণেশের পাথরের মূর্তির উপর ১০৮টি পাপড়ি বিশিষ্ট ব্রহ্মকমলের একটি শাবাষ্টক দল দেখা যায়। এই ব্রহ্মকমল থেকে ভগবান গণেশের মাথায় প্রাকৃতিক নিয়মেই জলের ফোঁটার আকারে জল পড়ে। মূল ফোঁটা আদি গণেশের মুখে আগে পড়তে দেখা যায়।
আবিষ্কার করেছিলেন কে?
মনে করা হয় যে গুহায় উপস্থিত ব্রহ্মকমল ভগবান শিব দ্বারা প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। কথিত আছে, ত্রেতাযুগে অযোধ্যার সূর্যবংশী রাজা ঋতুপর্ণা এই গুহাটি আবিষ্কার করেছিলেন। পৌরাণিক কাহিনি মতে, একদিন এক বন্য হরিণকে তাড়া করতে করতে তিনি এই গুহার সামনে গিয়ে উপস্থিত হয়েছিলেন। তারপর কৌতূহল বশে রাজা মহাদেব-সহ তেত্রিশ কোটি দেব-দেবীকে গুহার ভিতর দেখতে পেয়েছিলেন।