Tamim Iqbal: বিশ্বকাপ স্কোয়াডে জায়গা হয়নি, আবেগঘন বার্তায় নানা কথা ফাঁস করলেন তামিম
Cricket World Cup 2023, Bangladesh: নিউজিল্যান্ড সিরিজ খেলে বিশ্বকাপের ভাবনায় ঢুকে পড়েছিলেন তামিম। সেই প্রসঙ্গই খোলসা করেন, 'দীর্ঘ দিন পর খেললে একটু অসুবিধা থাকবেই। ফিজিওকে বিষয়টা বলি। তিনজন সিলেকটর ড্রেসিংরুমে আসেন। সকলের জন্য একটা জিনিস পরিষ্কার করে দিই, কোনও দিন, কোনও সময় কাউকে বলিনি, যে আমি পাঁচটার বেশি ম্যাচ খেলতে পারব না। এই তথ্য কী ভাবে ছড়াল, আমার জানা নেই।'
মিরপুর: একদিন আগেই বিশ্বকাপের জন্য ১৫ সদস্যের স্কোয়াড ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড। স্কোয়াডে জায়গা হয়নি, বাংলাদেশের সেরা ব্যাটার তামিম ইকবালের। নানা গুঞ্জন শোনা গিয়েছিল তাঁকে নিয়ে। তামিম নিজে সরে দাঁড়িয়েছিলেন, এমনটাও মনে করা হয়। বাদ নাকি সরে দাঁড়িয়েছেন, নানা ধোঁয়াশা ছিল। ঘরের মাঠে আফগানিস্তান সিরিজের মাঝপথে হঠাৎই অবসর ঘোষণা করেছিলেন তামিম। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অনুরোধে ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই সিদ্ধান্ত বদলেছিলেন। চোটের কারণে এতদিন বিশ্রামেই ছিলেন। সদ্য নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে সিরিজে প্রত্যাবর্তন হয় তাঁর। দ্বিতীয় ওডিআই-তে ৪৪ রানের ইনিংস তাঁর ব্যাটে। তাহলে কেন বাদ তামিম? আজ নানা তথ্য ফাঁস করলেন বাংলাদেশের প্রাক্তন অধিনায়ক তামিম ইকবাল। বিস্তারিত জেনে নিন TV9Bangla Sports-এর এই প্রতিবেদনে।
ভারতের মাটিতে ৫ অক্টোবর শুরু বিশ্বকাপ। তার আগে প্রতিটি দলই দুটি করে প্রস্তুতি ম্যাচ খেলবে। তামিমের জায়গা না পাওয়া সবচেয়ে বেশি অবাকের। যিনি বিশ্বকাপ খেলবেন বলে অবসর সিদ্ধান্ত বদলালেন, তাঁকেই স্কোয়াডে রাখা হল না! আজ সকালে ফেসবুকে পোস্ট করে বিস্ফোরণের ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। তামিম এক ভিডিও বার্তায় পরিষ্কার করেছেন, ফিজিওর রিপোর্টে তাঁর খেলতে বাধা ছিল না। তামিম আরও বলেন, ‘গত দু-তিন দিন যা লেখা হচ্ছে এবং যা ঘটেছে, পুরোপুরি আলাদা। বাংলাদেশ ক্রিকেট প্রেমী এবং আমার ভক্তদের অনেক কিছু জানা উচিত।’
বিশ্বকাপ খেলার জন্যই যে অবসর ভেঙে ফিরেছিলেন, সে কথাও উল্লেখ করেন। বলেন, ‘আমি অবসর নিয়েছিলাম। তারও একটা কারণ ছিল। প্রধানমন্ত্রীর অনুরোধে অবসর ভেঙেছিলাম। পরপর্তী দু-মাস প্রচণ্ড পরিশ্রম করেছি। নিজেকে ফিট করে তোলার জন্য প্রয়োজনীয় সব করেছি। ফিজিও, ট্রেনাররা যা বলেছেন, সবই করেছি। তারপর ম্যাচ খেলার সুযোগ এল, মানসিক ভাবে ঠিক জায়গায় ছিলাম না। কেন না, গত চার পাঁচ মাস যা চলছিল, অস্বস্তি ছিলই। নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে প্রথম ম্যাচে ৩০ ওভারের বেশি ফিল্ডিং করলাম। ব্যাটিংয়ের সুযোগ আসেনি। দ্বিতীয় ম্যাচে ব্যাটিংয়ের সুযোগ পেলাম, আমার পক্ষে যে টুকু সম্ভব অবদান রাখার চেষ্টা করেছি। দুর্ভাগ্য়বশত ম্যাচটা আমরা হেরে যাই। আমি সব সময়ই বলি, দল না জিতলে কে কত রান করল তা ম্যাটার করে না। আমার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ছিল, কিছুটা রান করা, তার চেয়েও বড় কথা, কেমন ব্যাট করছি, সেদিকটা নজর রাখা। আমি মাত্র ৪৪ রান করেছি। তবে ব্যাটিং নিয়ে আত্মবিশ্বাসী ছিলাম। গত চার পাঁচ মাসের বিষয়টা আর ভাবনায় ছিল না। কারণ, নিজের ব্যাটিং নিয়ে খুশি ছিলাম।’
নিউজিল্যান্ড সিরিজ খেলে বিশ্বকাপের ভাবনায় ঢুকে পড়েছিলেন তামিম। সেই প্রসঙ্গই খোলসা করেন, ‘দীর্ঘ দিন পর খেললে একটু অসুবিধা থাকবেই। ফিজিওকে বিষয়টা বলি। তিনজন সিলেকটর ড্রেসিংরুমে আসেন। সকলের জন্য একটা জিনিস পরিষ্কার করে দিই, কোনও দিন, কোনও সময় কাউকে বলিনি, যে আমি পাঁচটার বেশি ম্যাচ খেলতে পারব না। এই তথ্য কী ভাবে ছড়াল, আমার জানা নেই।’
তাহলে ঠিক কী ঘটেছিল? তামিমের কথায়, ‘সিলেকটরদের বলেছিলাম, আমার শরীর এমনই থাকবে, এখন যেমন ব্যাথা রয়েছে, তেমন। আপনারা টিম বাছার সময় বিষয়টা মাথায় রাখবেন। ফিটনেসের দিকটা পরিষ্কার রাখা জরুরি ছিল। সেটাই ওদের জানিয়েছিলাম। যদি বিশ্বকাপে যাই, হতেই পারে ন’টা ম্যাচেই খেললাম। কেন না, প্রথম দুটো ম্যাচ বাদ দিলে, প্রতি ম্যাচের মাঝেই গ্যাপ ছিল। আবার এমনও হতে পারে, দুটো ম্যাচের পর চোট পেলাম! সেটা যে কোনও প্লেয়ারের ক্ষেত্রেই হতে পারে। আর চোট হলে রিপ্লেসমেন্টও নেওয়া যায়। সে কারণেই বিষয়টা পরিষ্কার করি। ফিজিওরা আমাকে পরীক্ষা করে। ফিজিওর রিপোর্টে ছিল-আমি দলে থাকার মতো ফিট রয়েছি। মেডিক্যাল টিম পরামর্শ দিয়েছিল, আমি যদি ভারতে গিয়ে প্রথম প্র্যাক্টিস ম্যাচটা না খেলি, আরও বিশ্রাম পাব, সব মিলিয়ে দশ সপ্তাহের রিহ্যাব হবে, মূল পর্বের জন্য আরও ফিট হব।’
এর মধ্যেই কাহানি মে টুইস্ট! বোর্ডের এক প্রভাবশালী কর্তা ফোন তামিমকে ফোন করেন। কী বলেছিলেন? তামিম বলেন, ‘সেই কর্তা আমায় বলেন-তুমি তো ওয়ার্ল্ড কাপে যাচ্ছ। তোমাকে তো ম্যানেজ করে খেলতে হবে। এক কাজ করো, আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে ম্যাচে তুমি খেলো না। আমি তাঁকে পাল্টা বলি- ভাই এটা তো ১২/১৩ দিনের কথা। সে সময় আমি আরও ভালো কন্ডিশনে থাকবো। আমি কি কারণে খেলবো না? তখন তিনি বলেন-আচ্ছা, তুমি যদি খেলো আমরা এই রকম একটা প্ল্যান বা আলোচনা করছি, তোমাকে আমরা নিচে ব্যাটিং করাবো।’
তাহলে কি বোর্ডের সেই প্রভাবশালী কর্তার কথাতেই স্কোয়াডে জায়গা হয়নি তামিমের? কারণ যাই, হোক। তামিম যে ফিটনেস নিয়ে নিজের অবস্থান পরিষ্কার করেছিলেন এবং বিশ্বকাপ খেলতেও মুখিয়ে ছিলেন, পরিষ্কার করে দেন।