Lionel Messi: ১৪ বছর পর স্বপ্নপূরণ, ইছাপুরের পাগল ভক্তকে মেসির সামনে হাজির করছেন শতদ্রু!
ভিনদেশী ঈশ্বরকে এবার সামনাসামনি দেখার সুযোগ পেতে চলেছেন ভক্ত। এই ঈশ্বরের নাম লিওনেল মেসি! আর ভক্ত কে? ইছাপুরের শিবশঙ্কর পাত্র। ২০১১ সাল থেকে যাঁর মেসি আরাধনা শুরু। বাইপাস সার্জারির পরও জন্মদিন পালন বন্ধ হয়নি।

সুধীর চৌধুরীর নাম শুনেছেন তো? রাম বাবু কিংবা সরাভানন হরি? প্রথমজন সচিন তেন্ডুলকরের অন্ধভক্ত। আর পরের দু’জন? মহেন্দ্র সিং ধোনির পাগল ভক্ত। সুধীর, রাম, সরাভাননদের মধ্যে মিল কোথায় জানেন? ভক্তের ডাকে সাড়া দিয়েছেন তাঁদের ভগবান! কিন্তু এই ভগবান তাঁর ভক্তের কথা জানেনই না। জানেন না, বাড়ি থেকে ঠাকুরঘর, বেডরুম থেকে অন্তরমহল— সর্বত্র তাঁর ছবি, জার্সি, মূর্তিতে ছয়লাপ। সেই ভিনদেশী ঈশ্বরকে এবার সামনাসামনি দেখার সুযোগ পেতে চলেছেন ভক্ত। এই ঈশ্বরের নাম লিওনেল মেসি! আর ভক্ত কে? ইছাপুরের শিবশঙ্কর পাত্র। ২০১১ সাল থেকে যাঁর মেসি আরাধনা শুরু। বাইপাস সার্জারির পরও জন্মদিন পালন বন্ধ হয়নি। সেই মেসি ১৪ বছর পর আবার পা রাখছেন কলকাতায়। এলএম টেন-কে সামনাসামনি দেখার সুযোগ পেতে চলেছেন ইছাপুরের শিবে। সৌজন্যে শতদ্রু দত্ত।
নীরবে যে ভক্ত পুজো করে গিয়েছেন ঈশ্বরের, তিনি ডিসেম্বরে কলকাতায় আসছেন শুনেই উদ্যোগী হয়েছিলেন মেয়ে নেহা পাত্র। ফেসবুকে যোগাযোগ করেন শতদ্রুর সঙ্গে। সেই শতদ্রুই নেহার কাছ থেকে চেয়ে নিয়েছেন ফোন নম্বর। নেহা বলে দিয়েছেন, ‘বাবার জীবনে ফুটবল আর মেসি ছাড়া কিছু নেই। এমনকি আমার ছেলের নামও রেখেছেন লিও। বাবার জন্য এইটুকু করতে চেয়েছিলাম। যখন জানতে পারি, মেসি আবার কলকাতায় আসছে, শতদ্রুবাবুর সঙ্গে ফেসবুকে যোগাযোগ করি। উনিই আমার কাছে থেকে বাবার ফোন নম্বর চেয়েছেন। প্রথমে বিশ্বাসই করতে পারছিলাম না। বাবার সঙ্গে যখন কথা হল আপনার, ওই সময়কার অনুভূতি বলে বোঝাতে পারব না। মেসির সঙ্গে দেখা করা একটা বিরাট প্রাপ্তি হতে চলেছে বাবার কাছে।’
আর শিবশঙ্কর? চায়ের দোকান চালানো শিবে আনন্দ প্রকাশের ভাষা হারিয়ে ফেলেছেন। বলেছেন, ‘২০১১ সালে মেসি ভারতে এসেছিল। সেইসময় পুরো বাড়ির রং নীল-সাদা করে ফেলি। এলাকার মানুষের আমার বাড়ির পরিচয় আর্জেন্টিনা বাড়ি নামে। খুব ইচ্ছে ছিল ২০২২ সালে কাতারে গিয়ে বিশ্বকাপ দেখার। কিন্তু আর্থিক কারণে সেই স্বপ্নপুরণ হয়নি। সেই কষ্ট নিয়েই বাড়িতে মেসির উচ্চতার সমান একটি মুর্তি বসিয়েছি। তারপরই আবার বাইপাস সার্জারি হয় আমার। সুস্থ হয়েই মেসির জন্মদিন পালন করেছিলাম।’
ভক্ত শিবশঙ্করের কথা পৌঁছে গিয়েছে আর্জেন্টিনাতেও। সেই মেসি খোদ হাজির হবেন তাঁর সামনে। ২০১১ সাল থেকে শিবশঙ্কর প্রতিবার পালন করেছেন মেসির জন্মদিন। কিছুদিন আগে ৩৮তম জন্মদিনে ৩৮ পাউন্ডের কেক কেটেছেন। ৩৮রকমের মিষ্টি বিলি করেছেন। সারা ইছাপুর খেয়েছে সেই কেক আর মিষ্টি। এবার এলাকার শিবেদা যাবেন মেসির সঙ্গে দেখা করতে। এ যেন শিবের সঙ্গে ইছেপুরেরও স্বপ্নপূরণ।
মেসির জন্য আবার অশক্ত শরীরে যুবভারতী ছুটবেন তাঁর ভক্ত। শিবশঙ্কর তো বলেই দিলেন, ‘শতদ্রুদার জন্য আবার কলকাতাবাসী মেসিকে সামনে থেকে দেখার সুযোগ হতে চলেছে। আমাদের কাছে এটা এক বিরাট খবর।’
