ISL 2021-22: দুই প্রধানের জালে ৯ ম্যাচে ২৩ গোল কেন? ভুল খুঁজলেন সুব্রত, মনোরঞ্জন, সঞ্জয়রা

৪ ম্যাচে ৯ গোল খেয়েছে এটিকে মোহনবাগান (ATK Mohun Bagan)। আর লাল-হলুদ তো ৫ ম্যাচে ১৪ গোল হজম করেছে। দুই প্রধানের জালে ৯ ম্যাচে ২৩ গোল। কেন এই ভরাডুবি? কারণ তুলে ধরলেন প্রাক্তন ফুটবলাররা।

ISL 2021-22: দুই প্রধানের জালে ৯ ম্যাচে ২৩ গোল কেন? ভুল খুঁজলেন সুব্রত, মনোরঞ্জন, সঞ্জয়রা
ISL 2021-22: দুই প্রধানের জালে ৯ ম্যাচে ২৩ গোল কেন? ভুল খুঁজলেন সুব্রত, মনোরঞ্জন, সঞ্জয়রা
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Dec 08, 2021 | 6:55 PM

কৌস্তভ গঙ্গোপাধ্যায়

চলতি আইএসএলে (ISL) দুই প্রধানের পারফরম্যান্স গ্রাফ ক্রমশ নীচের দিকে নামছে। এসসি ইস্টবেঙ্গলে (SC East Bengal) শুরু থেকেই ব্যর্থতা। এটিকে মোহনবাগান প্রথম দুই ম্যাচে জয় পেলেও, ডার্বির পর আচমকা ছন্দ হারিয়েছে। মুম্বই সিটি এফসির (Mumbai City FC) কাছে ৫ গোল হজম করেছে। ৪ ম্যাচে ৯ গোল খেয়েছে এটিকে মোহনবাগান (ATK Mohun Bagan)। আর লাল-হলুদ তো ৫ ম্যাচে ১৪ গোল হজম করেছে। দুই প্রধানের জালে ৯ ম্যাচে ২৩ গোল। কেন এই ভরাডুবি? কারণ তুলে ধরলেন প্রাক্তন ফুটবলাররা।

মনোরঞ্জন ভট্টাচার্য- এসসি ইস্টবেঙ্গল আদৌ কোনও ফুটবল খেলছে না। কোনও দল গোল হজম করলেই সবসময় রক্ষণের দোষ দেওয়া হয়। কিন্তু এক একটা গোল হজমের অনেকগুলো কারণ থাকে। লাল-হলুদের গোল হজমের প্রধান কারণই হল, ফুটবলারদের মধ্যে কোনও বোঝাপড়া নেই। মাঝমাঠ আর রক্ষণের মধ্যে কোনও তালমিল নেই। পুরো দলটা ঠিক ভাবে ফুটবলই খেলতে পারছে না। তাই এই ছবি একদমই স্বাভাবিক। এসসি ইস্টবেঙ্গলের রক্ষণে যে ফুটবলাররা আছে, তাদের মধ্যে কারও ডিফেন্সিভ কোয়ালিটি অত্যন্ত খারাপ, আবার কেউ নিজেদের সেরা সময়টা পেরিয়ে এসেছে। খেলার মধ্যে কোনও প্ল্যানিং নেই। কোচের হাতে যা ফুটবলার আছে, তাই দিয়েই দল গড়তে হচ্ছে। তবে মাঠে নামার আগে বিপক্ষ দলকে নিয়ে কাটাছেঁড়ার দরকার। সেই মতো প্ল্যানিং সাজাতে হয়। শুধু তাই নয়, একটা দল মাঠে নেমে তখনই ভালো খেলবে যখন ঠিক ভাবে প্রস্তুতি নিতে পারবে। তাহলেই তো দলের মধ্যে বোঝাপড়া বাড়বে। একজনের ব্যর্থতা আরেকজন ঢেকে দিতে পারবে। এসসি ইস্টবেঙ্গলের কাছ থেকে এ বার কিছু প্রত্যাশা রাখছি না।

এটিকে মোহনবাগানের গোল হজমের কারণ রক্ষণে প্রকৃত নেতার অভাব। তিরির মধ্যে যে নেতাসুলভ গুণ আছে তা বাকিদের মধ্যে নেই। প্রীতম, শুভাশিসরা অত্যন্ত ভালো ফুটবলার। কিন্তু কেউই প্রকৃত নেতা নয়। যে ডিফেন্সকে আগলে রাখবে। সন্দেশ ঝিঙ্গানের মধ্যেও নেতৃত্ব দেওয়ার গুণ রয়েছে। ও যখন ছিল, তখনও এটিকে মোহনবাগানের রক্ষণকে মজবুত দেখাত। আমার মনে হয়, তিরি চোট সারিয়ে ফিরলেই হয়তো হাবাসের দল ঘুরে দাঁড়াতে পারবে।

সঞ্জয় সেন- চার বিদেশি হয়ে যাওয়ার পর কোচেরা কি ভাবে দলটাকে সাজাতে পারে, সেটাই এ বারের আইএসএলে কোচেদের কাছে চ্যালেঞ্জ। বিদেশি ফুটবলারদের সঙ্গে স্বদেশি ফুটবলারদেরও সে রকম পারফর্ম করতে হবে। এটিকে মোহনবাগানের প্রধান ডিফেন্ডার তিরি চোটের কারণে বাইরে থাকায় তার অভাব বোঝা যাচ্ছে। প্রীতম, ম্যাকহিউ কেউই সে অর্থে প্রধান ডিফেন্ডার নয়। তাই সমস্যা দেখা যাচ্ছে। ম্যাকহিউ মূলত ব্লকারের কাজ করে। তাতে ডিফেন্ডারদের কাজটা সহজ হয়ে যায়। তবে আমার মনে হয়, শুধু তারকাদের উপর নির্ভর না করে তরুণ ফুটবলারদেরও তৈরি করা উচিত। জামশেদপুর এফসির রক্ষণে জীতেন্দ্র সিং ঠিক যে ফুটবলটা খেলছে। কোচ সে ভাবে ওকে তৈরি করেছে বলেই, ওরকম পারফর্ম করতে পারছে। এসসি ইস্টবেঙ্গল দলটাকে নিয়ে যত কম বলা যায় ততই ভালো। শুধু রক্ষণ নয়, পুরো দলটাই খেলতে পারছে না। কোচের ব্যর্থতাই এখানে সবচেয়ে বেশি। কোনও প্ল্যানিংই চোখে পড়ছে না। আমার মনে হয়, ভাষা সমস্যাও একটা কারণ হতে পারে। যে ফুটবলাররা দলে আছে, তাদেরকে ঠিক মতো ব্যবহারই করতে পারছে না। একটা দল তিন বার পিছিয়ে পড়েও ফিরে এল। তারপরও গোল হজম করল। রক্ষণকে ঠিক মতো সাজাতে পারলে এ রকমটা ঘটত না।

সুব্রত ভট্টাচার্য- কোচেদের ভাবনার সঙ্গে ফুটবলারদের ধারণার কোনও মিল নেই। তাই এই ছবি বাস্তবিক। এটা পুরোপুরি কোচেদের ব্যর্থতা। হাবাস হোক কিংবা দিয়াজ- কেউই ফুটবলারদের সে ভাবে তৈরি করতে পারেনি। বিদেশি কমে যাওয়ায়, স্বদেশি ফুটবলারদের কি ভাবে মাঠে বেশি করে ব্যবহার করতে হয় সেটা কোচেদের বোঝা উচিত। দুই প্রধানের দুই কোচ যা ভাবছে, তা ফুটবলাররা মাঠে করে দেখাতে পারছে না। বিদেশি আর স্বদেশি ফুটবলারদের মধ্যে বোঝাপড়ারও অভাব রয়েছে। আর দুই দলে এমন কোনও উন্নতমানের বিদেশি নেই, যে একজন দেশি ফুটবলারদের ব্যর্থতা ঢেকে দিতে পারে।