Paris 2024: প্যারিস নয়, অলিম্পিক পদকের স্বপ্নে হাওয়ার সঙ্গে বন্ধুত্ব চান অঙ্কিতা

Paris Olympics 2024: যবে থেকে তির-ধনুক তুলেছেন হাতে, একটাই স্বপ্ন দেখেছেন, অংশ নেবেন অলিম্পিকে। টোকিও গেমসে খুলে ফেলতে পারতেন খাতা। একটুর জন্য হয়নি। সেই আক্ষেপ অবশেষে মিটেছে এ বার। ১২ বছর পর মেয়েদের টিম আবার অলিম্পিকে। দীপিকা কুমারী, ভজন কৌরের সঙ্গে সেই টিমের অবিচ্ছেদ্য সদস্য অঙ্কিতা। অলিম্পিকের স্বপ্নপূরণের পরও থেমে থাকতে চান না অঙ্কিতা।

Paris 2024: প্যারিস নয়, অলিম্পিক পদকের স্বপ্নে হাওয়ার সঙ্গে বন্ধুত্ব চান অঙ্কিতা
Image Credit source: TATA ACADEMY
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jul 23, 2024 | 4:31 PM

অভিষেক সেনগুপ্ত

শহর কি আলাদা করে কিছু দেয়? হয়তো দেয়। কিন্তু সেই শহরের সঙ্গে যদি বন্ধুত্বই না হয়? সে সুযোগ আপাতত নেই। প্রেমের শহরকে চেনার সুযোগ না-ই বা পেলেন, প্যারিস তাঁকে চিনে ফেলতেই পারে। বাঁ হাত থেকে ছিটকে বেরনো স্রেফ কিছু তীক্ষ্ণ শট। তুঙ্গে রাখা মনোবল। আর যদি বিশেষ দিনটায় নিজেকে মেলে ধরতে পারেন। আপাতত এতেই যত ফোকাস তাঁর। কার কথা হচ্ছে জানেন? এ এক দক্ষিণ সিঁথির মেয়ের গল্প। হয়তো আপনারই পাশের বাড়ির মেয়ে। যিনি এবার অলিম্পিকে গিয়েছেন তামাম বাংলার স্বপ্ন নিয়ে। প্যারিসে ২৫ জুলাই নেমে পড়বেন তিরন্দাজ অঙ্কিতা ভকত। তার আগে বঙ্গতনয়া কী চাইছেন? হাওয়ার সঙ্গে বন্ধুত্ব।

যবে থেকে তির-ধনুক তুলেছেন হাতে, একটাই স্বপ্ন দেখেছেন, অংশ নেবেন অলিম্পিকে। টোকিও গেমসে খুলে ফেলতে পারতেন খাতা। একটুর জন্য হয়নি। সেই আক্ষেপ অবশেষে মিটেছে এ বার। ১২ বছর পর মেয়েদের টিম আবার অলিম্পিকে। দীপিকা কুমারী, ভজন কৌরের সঙ্গে সেই টিমের অবিচ্ছেদ্য সদস্য অঙ্কিতা। অলিম্পিকের স্বপ্নপূরণের পরও থেমে থাকতে চান না অঙ্কিতা। পদকের আকাঙ্খায় শেষবেলার প্রস্তুতি সারছেন। আর্চারির মতো ইভেন্টে হাওয়া খুব গুরুত্ব বিষয়। প্যারিস থেকে অঙ্কিতা বলে দিলেন, ‘প্রথম দু’দিন প্র্যাক্টিসে ছিল না। কিন্তু কাল আবার দেখলাম, হাওয়া আছে। ইভেন্টের সময় হাওয়া সামলাতেই হবে।’

আর্চারিতে ১৫ বছরের কেরিয়ার। বাবা শান্তনু ভকতের দুধের দোকান। মা শীলা গৃহবধূ। নুন আনতে পান্তা ফুরোয় সংসারে। তবু মেয়ের তিরন্দাজ হওয়ার স্বপ্নকে গুরুত্ব দিয়েছিলেন শান্তনু-শীলা। সেই মেয়েই আজ অলিম্পিকের আসরে। অঙ্কিতা বললেন, ‘অলিম্পিকে নামছি ঠিকই, তবে বিশ্বকাপ ভেবেই নামতে চাইছি ইভেন্টে। বেশি সিরিয়াস হলে আবার চাপে পড়তে পারি। খোলা মনে খেলতে চাই।’ অলিম্পিকের লড়াইটা সহজ হবে না। কোরিয়া, চিন, জার্মানির মতো প্রথম সারির টিমগুলো আছে। ইন্দোনেশিয়াকে নিয়েও ভাবতে হবে। অঙ্কিতার মন্তব্য, ‘আজকাল সবাই ভালো টিম। কোরিয়াকে হারিয়ে দিচ্ছে চিন। ইন্দোনেশিয়া চমকে দিচ্ছে। তাই আলাদা করে কাউকে নিয়ে ভাবা যাবে না। সবাই কঠিন প্রতিপক্ষ।’

গেমস ভিলেজে মন বসিয়ে ফেলেছেন অঙ্কিতা এবং তাঁর দলবল। কিন্তু খাবারে মন ভরছে না। অঙ্কিতার কথায়, ‘ইউরোপে এর আগেও দেখেছি, খাবারের তেমন বৈচিত্র থাকে না। অলিম্পিকেও তাই হচ্ছে। কাঁচা কাঁচা ভাত। তবে সবই খাই, চালিয়ে নিতে অসুবিধা হচ্ছে না।’ অলিম্পিকের গেমস ভিলেজে হঠাৎ দেখা হয়ে যায় স্বপ্নের নায়কের সঙ্গে। অঙ্কিতার তেমনটা হবে কিনা, সন্দেহ আছে। কারণ, উসেইন বোল্টকে দেখার খুব ইচ্ছে বাঙালি মেয়ের। সেই বোল্ট অবসর নিয়েছেন অনেক আগেই।

অলিম্পিকের আসরে পা রেখে অঙ্কিতা সোজাসাপ্টা অঙ্ক ধরে এগোতে চাইছেন। ২৫ জুন ব্যক্তিগত ইভেন্টে ভালো শুরু চান। সেটাই ধরে রাখতে চান পুরো ইভেন্টে। দীপিকা কুমারী তাঁর মেন্টরের কাজটা করছেন। ‘দীপিকাদি সব সময় বলে, বাইরের কথায় কান দিবি না। নিজের কাজটা কর। কোনও কিছুই তো সহজে পাইনি। খুব কষ্ট করে পাই অর্জন করতে হয়েছে। এই অলিম্পিকটা আমার প্রথম হলেও খুব গুরুত্বপূর্ণ। যদি ভালো কিছু করতে পারি, বাবা-মায়ের মুখে হাসি ফোটাতে পারব।’