Green Death: মানুষের নশ্বর দেহ থেকে তৈরি হবে জৈব সার, ফলবে ফসলও, ইতিহাস গড়ছে আমেরিকা

Human Compost: 'গ্রিন ডেথ' হল মানুষের দেহকে মাটিতে পরিণত করার প্রাকৃতিক উপায়। এতে প্রাকৃতিক উপায়ে মানবদেহ গলিয়ে সার তৈরি করা হয় এবং তা কৃষিকাজে ব্যবহার করা হয়। মানব সার তৈরির পদ্ধতি ইতিমধ্য়েই আমেরিকা ও সুইডেনে অনুমোদিত হয়েছে।

Green Death: মানুষের নশ্বর দেহ থেকে তৈরি হবে জৈব সার, ফলবে ফসলও, ইতিহাস গড়ছে আমেরিকা
Follow Us:
| Updated on: Dec 01, 2023 | 3:50 PM

Green Death Details: জন্ম মৃত্য়ু সব কিছু নিয়েই জীবন। মৃত্যুর পর আপনি যতই পরিবারের ‘প্রিয়’ হোন না কেন, আপনাকে নয় মাটির তলায় প্লাস্টিকে মুড়ে কবর দেওয়া হবে, আর নয় আগুনে পুড়িয়ে ফেলা হবে। যার কোনওটাই পরিবেশবান্ধব নয়। অথচ প্রতিদিন অগুনতি মানুষের মৃত্যু হয়। মৃতদেহের সৎকার অথবা শেষকৃত্যকে কেন্দ্র করে যে পরিবেশ দূষণ হয়, তা আটকাতে আমেরিকায় বিগত কয়েক বছর ধরে ‘গ্রিন ডেথ’ (Green Death) প্রক্রিয়া নিয়ে কাজ করে চলেছেন বিজ্ঞানীরা। এতে মানুষের মৃত্যুর পর তাঁর দেহ সারে রূপান্তরিত করা হয় এবং তা গাছগাছালির প্রয়োজনে ব্যবহার করা হয়। একে টারমিনেশন বা ‘ন্যাচারাল অর্গ্যানিক রিডাকশন’ (Natural Organic Reduction) বলা হয়। এ প্রক্রিয়ায় মানবদেহ মাটির তলায় পুঁতে ফেলা বা পুড়িয়ে ফেলার মতো কাজ করা হয় না।

মানব সার (Human Compost)কী?

‘গ্রিন ডেথ’ হল মানুষের দেহকে মাটিতে পরিণত করার প্রাকৃতিক উপায়। এতে প্রাকৃতিক উপায়ে মানবদেহ গলিয়ে সার তৈরি করা হয় এবং তা কৃষিকাজে ব্যবহার করা হয়। মানব সার তৈরির পদ্ধতি ইতিমধ্য়েই আমেরিকা ও সুইডেনে অনুমোদিত হয়েছে।

green death

হিউম্যান কম্পোস্ট বা মানব সারের ধারণা কীভাবে এল?

রিকম্পোজ় (Recompose) হল বিশ্বের প্রথম মানব কম্পোস্টিং ফিউনারেল হোম (Funeral Home)। এর প্রতিষ্ঠাতা এবং সিইও ক্যাটরিনা স্পেড প্রথম এই ধারণাটি নিয়ে এসেছিলেন 2013 সালে। স্পেড ওয়াশিংটনে এটিকে বৈধ করার জন্য দীর্ঘদিন মৃত্তিকা বিজ্ঞানী, লবিস্ট এবং বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে কাজ করেছিলেন। তারপর 2019 সালে, মানব কম্পোস্ট বিষয়টি প্রথম ওয়াশিংটনে অনুমোদিত হয়।

কীভাবে হিউম্যান কম্পোস্ট বা মানব সার তৈরি হয়?

হিউম্যান কম্পোস্ট বা মানব সার তৈরির একটি সম্পূর্ণ প্রক্রিয়া আছে। মানব সার তৈরির জন্য প্রথমে মানুষের দেহকে একটি আট ফুট লম্বা ও চার ফুট উঁচু ইস্পাতের কফিনে রাখা হয়। কাঠ, খড় এবং আলফালফা ঘাস দেহের নীচে রাখা হয়। এই ঘাসের ব্যাকটেরিয়া শরীরে দ্রুত পচন ঘটাতে সাহায্য় করে। 30 দিনের মধ্যে পুরো শরীর কম্পোস্টে বা সারে পরিণত হয়। কিন্তু তখনও তাতে ব্যাকটেরিয়ার বিপদ থেকে যায়। তাই এটি 2 থেকে 6 সপ্তাহের জন্য একটি জায়গায় রেখে দেওয়া হয়। এর পরে এই মানব সার ব্যবহার করা যেতে পারে। পরিবেশের জন্য উপকারী হওয়ায় কবর দেওয়ার বিকল্প হিসেবে এই পদ্ধতিটি ওয়াশিংটনে দিনদিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে।

green death

হিউম্যান কম্পোস্ট বা মানব সার তৈরির পর দেহের কী অবশিষ্ট থাকে?

প্রতিটি মানুষের শরীর থেকে 36টি ব্যাগ সার উৎপন্ন করা যায়। Recompose ওয়েবসাইট অনুসারে, মানুষের শরীরের হাড় থেকে দাঁত… সমস্ত কিছুই পচে যায়। কিন্তু কোনও মানুষের শরীরে যদি অ-জৈব উপাদান, যেমন প্রস্থেটিক্স থাকে, তবে তা সারে পরিণত হয় না—যা সিলিন্ডার থেকে বের করা হয়। এছাড়াও যদি কারও শরীরে যক্ষ্মার মতো রোগ থাকে, তাহলে তার দেহ থেকে সার তৈরি করা হয় না। কারণ সেই সার মাটির ক্ষতি করতে পারে।

বিভিন্ন দেশে প্রচলিত কিছু অন্ত্যেষ্টি প্রক্রিয়াকে বদলে এমন পরিবেশবান্ধব পদ্ধতি চালু করা অবশ্যই চ্যালেঞ্জের। তবে অদূর ভবিষ্যতে যে সম্ভবও না, এমনটাও নয়। অনেকে মৃত্যুর পর দেহদান করেন। চিকিৎসা বিজ্ঞানে যা কাজে লাগে। তবে একটা মানুষের নশ্বর দেহ থেকে আরও কিছু সবুজের জন্ম হলে তার থেকে ভাল কিছু কি হতে পারে? এভাবেই না হয় বেঁচে থাকল প্রিয়জন।