Dinosaur Embryo: বিরল আবিষ্কার! জীবাশ্ম ডিমের ভিতর পাওয়া গিয়েছে ডায়নোসরের ভ্রূণ, অবাক জীবাশ্মবিদরাও
বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, ডায়নোসরের ডিমের ভিতর এভাবে সুসজ্জতি অবস্থায় ভ্রূণ থাকতে দেখে অবাক হয়েছেন তাঁরা। পাখির মতো ভঙ্গিতে এই ভ্রূণ আবিষ্কার হয়েছে বলে আরও অবাক হয়েছেন জীবাশ্মবিদরা।
বিজ্ঞানের আবিষ্কার মানেই রয়েছে চমক। অত্যাশ্চর্য্য সব জিনিস সাধারণ মানুষের সামনে পেশ করেন বিজ্ঞানীরা। এবার তেমনই এক জিনিসের সন্ধান পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা, যা এর আগে কেউ কখনও দেখেনি। একটি ডায়নোসরের ডিমের জীবাশ্ম পাওয়া গিয়েছে। আর তার ভিতরে গুটিসুটি মেরে রয়েছে ডায়নোসরের ভ্রূণ। দেখে মনে হবে যেন শিশু ডায়নোসর সুরক্ষিত রয়েছে ওই ফসিল বা জীবাশ্ম ডিমের ভিতর। কিন্তু আদতে ওটি ডায়নোসরের ভ্রূণ। এর আগে এমন কোনও আবিষ্কার বিজ্ঞানীরা করেননি।
নতুন একটি গবেষণা অনুসারে, এই জীবাশ্ম থেরোপড ডায়নোসর এবং তারা যে পাখিদের বিবর্তিত হয়েছে, এই দুইয়ের মধ্যে এক উল্লেখ্যযোগ্য মিল দেখিয়েছে। প্রায় ৭০ মিলিয়ন বছরের পুরনো এই জীবাশ্ম ভ্রূণ। এর নামকরণ করা হয়েছে ‘Baby Yingliang’। চিনের একটি যাদুঘরের নাম অনুসারে এই নামকরণ করা হয়েছে। আর সেখানেই রাখা হয়েছে এই fossilised embryo বা জীবাশ্ম ভ্রূণটিকে। ডায়নোসরের যে ডিমটি খুঁজে পাওয়া গিয়েছে তার খোলসের ভিতরের ৬ ইঞ্চি জায়গায় কুঁকুড়ে যাওয়া অবস্থায় ছিল এই জীবাশ্ম ভ্রূণ। এই পর্যায়ে ভ্রূণ দেখতে অনেকটা বর্তমানে পাখিদের মতো লাগে। কিন্তু পাখিদের মতো কিছুটা গড়ন হলেও এই ভ্রূণে ছোট ছোট হাত এবং থাবা দেখা গিয়েছে। বরং ডানা দেখা যায়নি। Paleontologists বা জীবাশ্মবিদদের এই নতুন আবিষ্কার রীতিমতো হইচই ফেলে দিয়েছে।
জানা গিয়েছেম ডায়নোসরের ডিমের যে জীবাশ্মের হদিশ পাওয়া গিয়েছে সেটি ১৭ সেন্টিমিটার লম্বা। আর তার ভিতরে কুঁকড়ে যাওয়া অবস্থায় ছিল ডায়নোসরের ভ্রূণ। এই ডায়নোসরটি মাথা থেকে লেজ পর্যন্ত মোট ২৭ সেন্টিমিটার লম্বা। এমনটাই জানিয়েছেন গবেষকরা। পূর্ণবয়স্ক হলে এই ডায়নোসর ২ থেকে ৩ মিটার লম্বা হতো বলে আন্দাজ করছেন Paleontologists-রা। বিজ্ঞনীরা বলেছেন, এ ভাবে ডায়নোসরের ভ্রূণের জীবাশ্ম খুঁজে পাওয়া অত্যন্ত বিরল ঘটনা। আর এই প্রথম এমন কোনও ডায়নোসরের ভ্রূণের জীবাশ্ম খুঁজে পাওয়া গিয়েছে, যা একদম সেই ভঙ্গি প্রকাশ করছে যা ছোট পাখিরা ডিম ফোটার সময় অনুসরণ করে থাকে। অর্থাৎ ডানহাতের নীচে থাকে মাথা। একথা জানিয়েছেন জীবাশ্মবিদরা।
আইসায়েন্স জার্নালে এই আবিষ্কার সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। এই গবেষণার সঙ্গে যুক্ত এক গবেষক ডার্লা জেলেনিতস্কি জানিয়েছেন যে, এই ডায়নোসরের হাড়গুলো খুবই ছোট এবং ভঙ্গুর। এর পাশাপাশি ডার্লা এও বলেছেন যে এই স্পেসিমেন বা নমুনা সত্যিই বিস্ময়কর। কারণ সচারচর এভাবে কোনও জীবাশ্ম দেখা যায় না। ডার্লা এও বলেছেন যে তিনি ২৫ বছর ধরে ডায়নোসরদের ডিম নিয়ে কাজ করছেন। কিন্তু এর আগে কখনও এমনটা দেখেননি। এই গবেষণার পুরোধা ওয়াইসুম মা জানিয়েছেন, ডায়নোসরের ডিমের ভিতর এভাবে সুসজ্জতি অবস্থায় ভ্রূণ থাকতে দেখে অবাক হয়েছেন তাঁরা। পাখির মতো ভঙ্গিতে এই ভ্রূণ আবিষ্কার হয়েছে বলে আরও অবাক হয়েছেন জীবাশ্মবিদরা। নন-এভিয়ান ডায়নোসরদের ক্ষেত্রে এমন ভঙ্গি আগে লক্ষ্য করা যায়নি বলেও জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা।
জিয়াংসি প্রদেশে পাওয়া গিয়েছে এই জীবাশ্মটি। প্রায় ১০ বছরের জন্য একটি জায়গায় স্টোরেজ হয়েছিল এই জীবাশ্মটি। তবে যখন সেখানে ইংলিয়াং স্টোন নেচার হিস্ট্রি মিউজিয়ামের কর্মীরা বাক্স সাজাচ্ছিলেন তখন তাঁরা এটি খুঁজে পান।