মহাশিবরাত্রি
ক্যালেন্ডার মতে, প্রতি বছর ফেব্রুয়ারি ও মার্চ এই দুই মাসের মধ্যে মহাশিবরাত্রি পালিত হয়। এ বছরও পালিত হচ্ছে সারা দেশজুড়ে। এ বছর, অর্থাৎ ২০২৪ সালের ৮ মার্চ অনুষ্ঠিত হচ্ছে মহাশিবরাত্রির উপবাস চতুর্দশী। সাধারণত চন্দ্র ক্যালেন্ডারের ১৪তম দিন, হিন্দু মাসের মধ্যে ফাল্গুন বা মাঘ মাসের কৃষ্ণপক্ষের সমাপ্তিতে ধুমধাম করে ঘটে থাকে এই হিন্দু উত্সব। কথিত আছে, এ দিন পৃথিবীতে জন্মৃমৃত্যু ও জীবন, অস্তিত্বের ভারসাম্য রক্ষার জন্য মহাদেব ‘তাণ্ডব নাট্যম’ করেছিলেন (শিব তাঁর রুদ্রমূর্তিতে যে নাচ নেচেছিলেন, তাই-ই তাণ্ডব নৃত্য বলে পরিচিত)। এ ছাড়া এ দিন মহেশ্বর ও দেবী পার্বতী বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিলেন। এছাড়াও এই দিনটির গুরুত্ব রয়েছে অনেক। পুরাণ অনুযায়ী, মহাশিবরাত্রির দিন সমুদ্রমন্থনের সময় হলাহল (বিষ) পান করেছিলেন মহাদেব। বিশ্বব্রহ্মাণ্ড ও দেবকূলকে রক্ষা করার জন্য মহাদেব বিষ পান করে নিজ কণ্ঠে ধারণ করেছিলেন। বিষের জ্বালায় ও তীব্রতায় মহেশ্বরের কণ্ঠ নীল বর্ণের হয়ে যায়। সেই থেকে তাঁর নাম হয় ‘নীলকান্ত’। মহাশিবরাত্রির দিন, শিবভক্তরা সারাদিন উপবাস রাখার পর শিবের মাথায় জল ঢালেন। মনের ইচ্ছে প্রার্থনা করেন মহাদেবের কাছে। দিনের শিবপুজো ছাড়াও এই দিনটির রয়েছে আধ্যাত্মিক গুরুত্বও। শুধু তাই-ই নয়, এ দিন উপবাস রাখারও রয়েছে বিশেষ মাহাত্ম্য। মহাশিবরাত্রির উপবাস অনেকের কাছে মহাশিবরাত্রির ব্রত নামে পরিচিত। রীতি অনুযায়ী, সকাল থেকে পরের দিন, অর্থাত্ ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত উপবাস রাখার নিয়ম রয়েছে। কথিত আছে, মহাশিবরাত্রির দিন কঠোর উপবাস করলে ভক্তরা ভগবান শিব ও দেবী পার্বতীর বিশেষ আশীর্বাদ পেয়ে থাকেন। এ দিনের গুরুত্ব বুঝে হিন্দুশাস্ত্রে কিছু কাজ ও খাবার খাওয়ার ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।