AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

Bangladesh Protest: প্রতিবেশী দেশে প্রতিবাদের আগুন! ইতিহাস বলছে অনেক কথা―জানুন

Bangladesh Protest: প্রতিবেশী দেশে প্রতিবাদের আগুন! ইতিহাস বলছে অনেক কথা―জানুন

আসাদ মল্লিক

|

Updated on: Jul 18, 2024 | 7:34 PM

Share

Bangladesh: তাদের একটাই দাবি, ‘সরকারি চাকরির সকল গ্রেডে কোটা বাতিল করে সংবিধানে উল্লিখিত অনগ্রসর গোষ্ঠী ও বিশেষ চাহিদাসম্পন্নদের জন্য কোটাকে ন্যায্যতার ভিত্তিতে ন্যূনতম পর্যায়ে এনে সংসদে আইন পাশ করে কোটা পদ্ধতিকে সংস্কার করতে হবে।’

গোটা বাংলাদেশে ছড়িয়ে পড়েছে বিক্ষোভের আগুন। দিন হোক বা রাত, আগুন জ্বলেছ, চলছে ভাঙচুর। কিন্তু কেন? ছাত্র-ছাত্রীদের দাবি মেনে বাংলাদেশ সরকার সংসদে দাঁড়িয়ে ২০১৮ সালে কোটা প্রথা তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্তও নিয়েছেল। কিন্তু তারপরও কেন এই বিরাট আন্দোলন? বিষয়টা বুঝতে অনেকটা পিছিয়ে যেতে হবে। বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালে। ১৯৭২ সালে, সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, আধা স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান এবং বিভিন্ন কর্পোরেশন ও দফতরে, প্রথম শ্রেণির চাকরিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে মাত্র ২০% মেধা এবং বাকি ৮০% জেলার কোটা রাখা হয়। ৮০% কোটার মধ্যে ৩০ % কোটা বরাদ্দ করা হয়েছিল মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য এবং ১০ শতাংশ মহিলাদের জন্য। চার বছর পরই কোটা বণ্টনে বদল এনে মেধার ভিত্তিতে নিয়োগের পরিমাণ বাড়ানো হয় এবং মহিলাদের জন্য আলাদা কোটার ব্যবস্থা করা হয়। ৪০% বরাদ্দ করা হয় মেধার ভিত্তিতে নিয়োগের জন্য। ৩০% মুক্তিযোদ্ধাদের, ১০% মহিলাদের, ১০% যুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্ত মহিলাদের এবং বাকি ১০% জেলার জন্য বরাদ্দ হয়। বাংলাদেশের এই কোটা পদ্ধতি চলে ১৯৮৫ পর্যন্ত। সেবছর আবার বদল হয় মুক্তিযুদ্ধের দেশের কোটা পদ্ধতি। মেধার ভিত্তিতে নিয়োগের পরিমাণ আরও বাড়ানোর পাশাপাশি, কোটায় অন্তর্ভুক্ত করা হয় ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর মানুষদের।

প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির পদে মেধাভিত্তিক কোটা হয় ৪৫%। জেলাভিত্তিক কোটা রাখা হয় ৫৫%। জেলার কোটা থেকে মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য ৩০%, মহিলাদের জন্য ১০% এবং উপজাতি সম্প্রদায়ের জন্য ৫% কোটা বরাদ্দ হয়। এরপর ১৯৯৭-এ সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তানদেরও অন্তর্ভুক্ত করা হয়। মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য যে ৩০ শতাংশ কোটা বরাদ্দ ছিল, তাতে উপযুক্ত মুক্তিযোদ্ধা প্রার্থী না পাওয়া গেলে, মুক্তিযোদ্ধা বা শহিদ মুক্তিযোদ্ধাদের ছেলে-মেয়েদের তা বরাদ্দ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া। ২০১১ সালে মুক্তিযোদ্ধার নাতি-নাতনিদেরও ৩০% মুক্তিযোদ্ধা কোটায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়। অর্থাৎ, উপযুক্ত প্রার্থী না পেলে মুক্তিযোদ্ধাদের নাতি-নাতনিদের ওই চাকরি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। মেধার তুলনায় কোটাকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া নিয়ে প্রথম থেকেই সাধারণ মানুষের মনে অসন্তোষ ছিল। সীমিত আকারে বেশ কয়েকটি কোটা বিরোধী আন্দোলন হয়েছিল। তবে, ২০১৮ সালে প্রথম এই আন্দোলন বৃহত্তর আকার নিয়েছিল। ২০১৮-র জানুয়ারিতে, সরকারি চাকরিতে কোটা ব্যবস্থা বাতিল করা এবং এই ব্যবস্থার পুর্নমূল্যায়ন চেয়ে হাইকোর্টে একটি রিট পিটিশন দায়ের করেছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্র ও দুই সাংবাদিক। তাদের দাবি ছিল, কোটা পদ্ধতি বাংলাদেশের সংবিধানের চেতনার বিরোধী। এরপরই সোশ্যাল মিডিয়ায় কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন শুরু হয়। শাহবাগে বিভিন্ন কর্মসূচি নিয়েছিলেন আন্দোলনকারীরা। ‘বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ’ নামে একটি সংগঠনও তৈরি হয়। ধীরে ধীরে দানা বাঁধতে থাকে কোটা আন্দোলন। তবে, ওই বছরের মার্চে রিট পিটিশনটি খারিজ করে দিয়েছিল বাংলাদেশ হাইকোর্ট। এরপর হাসিনা সরকার জানায়, কোটা পদ্ধতিতে কোনও পরিবর্তন করা হবে না। তবে, কোটা ব্যবস্থা প্রয়োগে কিছুটা শিথিলতা এনেছিল সরকার। বলা হয়, কোটায় যোগ্য প্রার্থী পাওয়া না গেলে, মেধা তালিকা থেকে সেই পদগুলি পূরণ করা হবে। তবে কোটা সংস্কারের দাবি অনড় ছিল শিক্ষার্থীরা।

২০১৮ সালে লাগাতার আন্দোলনের জেরে বাংলাদেশ সরকরা কোটা পদ্ধতি বাতিল করে। বাংলাদেশি সংসদে, সব ধরনের কোটা বাতিলের ঘোষণা করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখা হাসিনা। প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে সকল কোটা বাতিল করা হয় এবং তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির পদগুলিতে কোটায় যোগ্য প্রার্থী না পেলে মেধা তালিকা থেকে প্রার্থীদের নিয়োগের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কিন্তু ২০২১ সালে বাংলাদেশ সরকারের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আদালতের দারস্ত হয় মুক্তিযোদ্ধাদের কিছু পরিবার। হাইকোর্টে রিট পিটিশন দায়ের করেন তাঁরা। সেই মামলার রায় দেওয়া হয়েছে গত পাঁচই জুন। বাংলাদেশে আবার ফিরে এসেছে কোটা ব্যবস্থা। হাইকোর্টের ওই রায়ে স্থগিতাদেশ চেয়ে আবেদন করেছিল সরকার। এর মধ্যেই কোটা বিরোধী আন্দোলন শুরু করেছিলেন পড়ুয়ারা। তাদের একটাই দাবি, ‘সরকারি চাকরির সকল গ্রেডে কোটা বাতিল করে সংবিধানে উল্লিখিত অনগ্রসর গোষ্ঠী ও বিশেষ চাহিদাসম্পন্নদের জন্য কোটাকে ন্যায্যতার ভিত্তিতে ন্যূনতম পর্যায়ে এনে সংসদে আইন পাশ করে কোটা পদ্ধতিকে সংস্কার করতে হবে।’