Muri Mela: ধামা ভরা মুড়ির সঙ্গে চপ-বেগুনি-জিলিপি-মিঠাই! ফি বছর দ্বারকেশ্বরের চরে বসে মুড়ি মেলা

Bankura: প্রতি মাঘের ৪ তারিখ এই মেলা হয়। সেই মেলায় অংশ নিতে ঢল নামে মানুষের।

Muri Mela: ধামা ভরা মুড়ির সঙ্গে চপ-বেগুনি-জিলিপি-মিঠাই! ফি বছর দ্বারকেশ্বরের চরে বসে মুড়ি মেলা
দ্বারকেশ্বরের চরে মুড়ি মেলা। নিজস্ব চিত্র।
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jan 18, 2022 | 6:33 PM

বাঁকুড়া: বাংলার ঐতিহ্যের সঙ্গে যে কী কী জুড়ে রয়েছে শহুরে জীবন হয়ত অত সহজে তা ঠাহর করতে পারবে না। গ্রামীণ ঐতিহ্যের সঙ্গে অঙ্গাঅঙ্গিভাবে জাপ্টে থাকে রোজকার সহজ যাপন। বাঁকুড়ার কেঞ্জাকুড়ার সুপ্রাচীন মুড়ি মেলা সেই যাপনেরই ছবিটা তুলে ধরে প্রতি বছর। এবারও তার অন্যথা হয়নি। ফি বছর দ্বারকেশ্বর নদের চরে বসে এই মুড়ি মেলা। চপ, আলু সেদ্ধ, ছোলা সেদ্ধ, মটর কিংবা নানা স্বাদের চানাচুরের মতো হরেক পদে মাখা হয় মুড়ি। দ্বারকেশ্বরের চরে বসে পরিবারের লোকজন একসঙ্গে মুড়ি খান। এটাই মুড়ি মেলা। প্রতি মাঘের ৪ তারিখ এই মেলা হয়। সেই মেলায় অংশ নিতে ঢল নামে মানুষের। যেমন নেমেছে মঙ্গলবার।

রাঢ় বাংলার মানুষের খাদ্যতালিকায় থাকা অন্যতম প্রিয় মুড়ি। রাঢ় বাঁকুড়ার মানুষের কাছে মুড়ি এতটাই জনপ্রিয় যে জনশ্রুতি একবার আকাশপথে ঢেঁকিতে চড়ে যাওয়ার পথে স্বয়ং নারদ মুনি মুড়ি ভেজানোর চোঁ চোঁ শব্দে রীতিমত ভয় পেয়ে গিয়েছিলেন। তা সেই মুড়ি খাওয়াকে কেন্দ্র করে বাঁকুড়া জেলায় এক আধটা উৎসব থাকবে না তা কেমন করে হয়? তেমনই এক উৎসব কেঞ্জাকুড়ার মুড়ি মেলা। বাঁকুড়ার অন্যতম প্রাচীন জনপদ কেঞ্জাকুড়া। এই কেঞ্জাকুড়ার একপ্রান্ত দিয়ে বয়ে গেছে দ্বারকেশ্বর নদ। সেই নদের ধারেই মাতা সঞ্জীবনী মন্দির। যে মন্দিরে মকর সংক্রান্তির দিন থেকে শুরু হয় সংকীর্তন। শেষ হয় মাঘ মাসের চতুর্থীর দিন।

কথিত আছে একসময় দূর দূরান্তের মানুষ সংকীর্তন শুনতে এই সঞ্জীবনী মাতার আশ্রমে আসতেন। সারা রাত সংকীর্তন শুনে তাঁরা ফিরে যেতেন নিজের নিজের গ্রামে। কীর্তন শুনে ফেরার পথে সঙ্গে আনা মুড়ি দারকেশ্বর নদের চরে বসে খেতেন। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পুণ্যার্থীদের সেই অভ্যাসই পরিণত হয়েছে রীতিতে। এখন ফি বছর মাঘ মাসের চতুর্থীতে দূর দূরান্তের মানুষ মুড়ি নিয়ে দ্বারকেশ্বরের চরে এসে হাজির হন।

সঙ্গে থাকে চপ, সিঙ্গারা, বেগুনি, ঘুগনি, শসা, পেঁয়াজ, নারকেল, টমেটো, বিভিন্ন ধরনের নাড়ু, জিলিপি, মিঠাই সহ বিভিন্ন পদ। নদের চরের বালিতে গামছা বিছিয়ে নানা পদের সঙ্গে পাহাড় প্রমাণ মুড়ি নিয়ে চলে খাওয়া দাওয়া। শীতের মিঠে রোদে পিঠ এলিয়ে চলে আড্ডা, হুল্লোড়, সেলফি তোলা। করোনার কারণে এ বছর মুড়ি মেলায় লোকজন কিছুটা কম এসেছেন। তবে তাতে মুড়ি মেলার কৌলিন্য মোটে ম্লান হয়নি।

স্থানীয় বাসিন্দা সমাপ্তি কর্মকার বলেন, “এবার লোকজন কম। আসলে প্রতি বছর এই মেলায় আসবে বলে দু’দিন আগে থেকে এলাকার বাড়িগুলিতে আত্মীয় অতিথি এসে হাজির হন। কিন্তু এবার তো মেলার অনুমতিই দু’দিন আগে দিয়েছে। তাই লোকজন কম এসেছে। আমরা তো প্রতিবার অপেক্ষা করে থাকি। এই মেলায় আসব বলে নতুন জামা কিনি।”

আরও পড়ুন: UP Assembly Election 2022: অখিলেশের ভোটপ্রচারে উত্তর প্রদেশে যাচ্ছেন মমতা, লখনউয়ের পাশাপাশি প্রচার করবেন বেনারসেও