Balurghat Crime: খুনে অভিযুক্ত কর্মীকে খুনই করা হয়েছে, অভিযোগ বিজেপির! গঙ্গারামপুর কাণ্ডে নতুন ‘টুইস্ট’

Balurghat Crime: বুধবার সকালে নিবাস রায় নামে বছর বত্রিশের যে যুবকের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়, তার বিরুদ্ধে এলাকারই যুবক মঞ্জুরুল হোসেনকে পিটিয়ে খুনের অভিযোগ রয়েছে।

Balurghat Crime: খুনে অভিযুক্ত কর্মীকে খুনই করা হয়েছে, অভিযোগ বিজেপির! গঙ্গারামপুর কাণ্ডে নতুন 'টুইস্ট'
গঙ্গারামপুর খুনে চড়ল রাজনীতির রঙ (নিজস্ব চিত্র)
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jan 26, 2022 | 4:42 PM

দক্ষিণ দিনাজপুর: এক যুবককে পিটিয়ে ‘খুন’ ও এক অভিযুক্তের অস্বাভাবিক মৃত্যুতে বালুরঘাটের গঙ্গারামপুরের পরিস্থিতি আগেই উত্তপ্ত ছিল। এবার তাতে লাগল রাজনীতির রঙ। নিহত অভিযুক্ত দলীয় কর্মী বলে দাবি করলেন স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্ব। পাশাপাশি আরও অভিযোগ, তাঁকে খুন করে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে। গ্রামের একাধিক বাড়িতে ভাঙচুরও হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।

বুধবার সকালে নিবাস রায় নামে বছর বত্রিশের যে যুবকের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়, তার বিরুদ্ধে এলাকারই যুবক মঞ্জুরুল হোসেনকে পিটিয়ে খুনের অভিযোগ রয়েছে। এদিকে, নিবাস বিজেপি কিষাণ মোর্চার সদস্য বলে বুধবার দুপুরে বালুরঘাটে সাংবাদিক সম্মেলনে দাবি করেন বিজেপির জেলা সভাপতি স্বরূপ চৌধুরী। বিজেপি জেলা সভাপতি আরও বলেন, আত্মঘাতী নয়, তাঁদের কর্মীকে মেরে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি ওই এলাকায় একাধিক নিরপরাধ মানুষের বাড়িঘর ভাঙচুর করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। সঠিক তদন্তের দাবি পুলিশ প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছে বিজেপি।

তৃণমূল নেতার দাবি, “বিজেপির আসলে কোনও রাজনৈতিক ইস্যু নেই। ওরা কয়েকটা ঘটনায় রাজনীতির রং লাগাচ্ছে। এটায় রাজনীতি জড়িত নয়। এটা গ্রাম্য বিবাদ।”

জেলা পুলিশ সুপার রাহুল দে জানান, নিবাস রায় নামে ওই যুবকের নামে লিখিত অভিযোগ ছিল এবং ঘটনার পর থেকে পলাতক ছিলেন তিনি। আজ সকালে তাঁর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। এটিকে প্রাথমিকভাবে আত্মহত্যা বলেই মনে করা হচ্ছে। তবে বাকি দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে। দেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। তবে এলাকায় উত্তেজনা রয়েছে। বেশ কয়েকটি বাড়ি ভাঙচুর হয়েছে। একটি শান্তি বৈঠকের ডাক দেওয়া হয়েছে বলে জেলা পুলিশ সুপার জানিয়েছেন। মঙ্গলবার থেকেই গ্রামে বাহিনী মোতায়েন রয়েছে।

ঘটনার প্রেক্ষাপট

সোমবার দুমুঠো সীমান্ত এলাকায় মঞ্জুরুল হোসেন নামে বছর ছাব্বিশের এক যুবকের দেহ উদ্ধার হয়। ওই যুবক পরিযায়ী শ্রমিক। তাঁকে পিটিয়ে খুনের অভিযোগ ওঠে।

গ্রামবাসীদের বয়ান অনুযায়ী, সোমবার রাতে বাজার থেকে বাড়ি যাওয়ার পথে ওই যুবককে কিছুজন মিলে ঘিরে ধরেন। রাস্তাতেই তাঁকে এলোপাথাড়ি মারা হয় বলে অভিযোগ। স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যস্থতায় বিষয়টি তখনকার মতো মিটে যায়। কিন্তু স্থানীয়রা জানাচ্ছেন, মংলু রায় নামে এক ব্যক্তি মঞ্জুরুলকে নিজের বাড়িতে ডেকে নিয়ে যান। আহত অবস্থাতেই মঞ্জুরুল সেখানে যান।

অভিযোগ, এরপর থেকেই আর মঞ্জুরুলের সঙ্গে তাঁর পরিবারের সদস্যরা যোগাযোগ করতে পারছিলেন না। সোমবার মধ্যরাতে খবর পান মঞ্জুরুলের পরিবার। তাঁরা ওই এলাকাতে গিয়ে দেখেন একটি গাছে মঞ্জুরুলকে বেঁধে রাখা হয়েছে। তাঁর সারা শরীর রক্তাক্ত ছিল। যতক্ষণে তাঁকে উদ্ধার করা হয়, মৃত্যু হয় মঞ্জুরুলের।

নিহতের দাদার বয়ান ছিল, “আমার ভাই বাজার থেকে বাড়ি আসছিল। আমরা তখন বাড়িতেই ছিলাম। আমরা খবর পাই রাত দেড়টা নাগাদ। গিয়ে দেখি ওর হাত পা বাঁধা। ইচ্ছে মতো পিটিয়েছে ওকে। আমরা বলেছিলাম ছেড়ে দাও, হাসপাতালে নিয়ে যাব। কিন্তু ছাড়েনি। যতক্ষণে নিয়ে যাই, ও শেষ। ওকে ডেকে নিয়ে গিয়েছিল নাকি ফোন করে ডেকেছিল, সেটা স্পষ্ট জানি না।”

মঞ্জুরুলের পরিবারের তরফে থানায় বেশ কয়েকজনের নামে অভিযোগ দায়ের করা হয়। গ্রামে একটা চাপা উত্তেজনা ছিলই। কিন্তু বুধবার সকালে ঘটনার মোড় নেয় অন্য। অভিযুক্তদের মধ্যে এক জনের দেহ উদ্ধার হয়। প্রত্যক্ষদর্শীদের বয়ান অনুযায়ী, গ্রামেরই রাস্তার ধারে গাছে ঝুলছিল দেহ। এই অস্বাভাবিক মৃত্যু ঘিরেও রহস্য দানা বেঁধেছে। আদৌ কি এটা আত্মহত্যা নাকি তাকে খুন করে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে, তা নিয়ে ধন্দ রয়েছে। পুলিশ তদন্ত করে দেখছে।

আরও পড়ুন: Purulia Howrah Express Train: শিক্ষা দিল দোমনির ট্রেন দুর্ঘটনা, নতুন কোচ পেল পুরুলিয়া-হাওড়া এক্সপ্রেস