Raju Bista met Ashok Bhattacharya: ‘আমি এত ঠুনকো নই’, বিজেপি সাংসদের সঙ্গে সাক্ষাৎ বিতর্কে অকপট অশোক ভট্টাচার্য
Trinamool Congress: এই সাক্ষাৎকে সৌজন্য সাক্ষাৎ বলে দাবি করেছেন, শঙ্কর ঘোষ, রাজু বিস্তাও। কিন্তু তৃণমূল তা কোনওভাবেই মানতে নারাজ। বরং তারা বলছে, ২০১৯ সালে যে দাবি তৃণমূল করেছিল, তা যে কতটা সত্যি তা প্রকাশ পাচ্ছে।
শিলিগুড়ি: শিলিগুড়ির প্রাক্তন মেয়র অশোক ভট্টাচার্য (Ashok Bhattacharya)। বর্ষীয়ান সিপিএম নেতা তিনি। তাঁর বাড়িতেই সোমবার কালীপুজোর সন্ধ্যায় যান বিজেপি সাংসদ রাজু বিস্তা ও বিজেপি বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ। সেই সাক্ষাতের একটি ছবি সামনে এনে তৃণমূল দাবি করেছে, অশোক ভট্টাচার্যকে বাড়িতে গিয়ে বিজেপির সাংসদ, বিধায়ক বলে এসেছেন, ‘সরকার ফেলে দেব। সঙ্গে থাকুন’। নিঃসন্দেহে এই দাবি অত্যন্ত চাঞ্চল্যকর। যদিও এ প্রসঙ্গে সিপিএম নেতা অশোক ভট্টাচার্যের বক্তব্য, “আমি এত ঠুনকো নই। রাজনীতিতে আমার প্রায় ৫৪ বছর হয়ে গেছে।” একইসঙ্গে তিনি বলেন, কেউ বাড়িতে এলে তাঁকে কি বের করে দেবেন?
অশোক ভট্টাচার্য বলেন, “৩০ তারিখ আমার স্ত্রী রত্নার প্রয়াণের এক বছর হবে। সেদিন একটা অনুষ্ঠান আছে। তার জন্য বলেছিলাম। সাংসদ বললেন, তিনি আসতে পারবেন না। একইসঙ্গে তিনি আমাকে দীপাবলির শুভেচ্ছা জানিয়ে গেলেন। আমিও বললাম আপনাকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। একটা মানুষ যদি হঠাৎ করে এসে শুভেচ্ছা জানান, তাঁকে বলব ঢুকতে দেব না? এত অসৌজন্যতা আমি দেখাতে পারব না। রাজনীতিতে আমার প্রায় ৫৪ বছর হয়ে গিয়েছে। আমি এত ঠুনকো নই।”
এই সাক্ষাৎকে সৌজন্য সাক্ষাৎ বলে দাবি করেছেন, শঙ্কর ঘোষ, রাজু বিস্তাও। কিন্তু তৃণমূল তা কোনওভাবেই মানতে নারাজ। বরং তারা বলছে, ২০১৯ সালে যে দাবি তৃণমূল করেছিল, তা যে কতটা সত্যি তা প্রকাশ পাচ্ছে। রাজ্যসভার তৃণমূল সাংসদ শান্তনু সেন বলেন, “আমরা তো পরিষ্কার করেই বলেছি ২০১৯ সালে বামের ভোট রামে না গেলে ১৮টা সিট বিজেপি পেত না। যেখানে যেখানে পরবর্তীকালে সিপিএমের ভোট বেড়েছে সেখান থেকে বিজেপির ধস শুরু হয়েছে। একের পর এক নির্বাচনে যাদের ভরাডুবি হচ্ছে, মানুষ যাদের জনবিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে, যারা নিজেরা গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে জেরবার, যাদের অস্তিত্ব আগামী নির্বাচন অবধি থাকবে কি না সন্দেহ আছে, তাদের নিয়ে তৃণমূল ভাববে?”
অন্যদিকে অশোক ভট্টাচার্যের বক্তব্য প্রসঙ্গে তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষের মন্তব্য, “উনি বর্ষীয়ান নেতা তো। আসল কারণগুলো বলে দেবেন তা তো হয় না। তাই উনি এসব কথা বলছেন।” এই সাক্ষাৎ নিয়ে ইতিমধ্যেই বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, তাঁদের দলে এভাবে কোনও বিষয় নিয়ে আলোচনা করা যায় না। রাজু-শঙ্করের অশোক ভট্টাচার্যের সঙ্গে সাক্ষাৎ নিছক সৌজন্য সাক্ষাৎ বলেই দাবি তাঁরও। শমীকের কথায়, ” উত্তরবঙ্গের রাজনৈতিক পটে, শিলিগুড়িতে অশোক ভট্টাচার্যের একটা গ্রহণযোগ্যতা আছে। অনেক প্রবীণ রাজনীতিক তিনি। তাঁর কাছে যেতেই পারেন। তার অর্থ এই নয় একটা চক্রান্ত করার জন্য যাবেন। এটার ভুল ব্যাখ্যা হচ্ছে।”
একই সুর শোনা গিয়েছে সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তীর গলাতেও। তাঁর কথায়, “অশোক ভট্টাচার্যের সঙ্গে দার্জিলিংয়ের সাংসদের দেখা হয়েছে কি না তা জানি না। জানবার খুব আগ্রহ বা উৎসাহ আমার নেই। দেখা হলে হয়েছে। না হলে হয়নি। তবে দেখা হওয়াটা তো স্বাভাবিক। বিভিন্ন এলাকার মানুষের সঙ্গে নির্বাচিত প্রতিনিধির একটা সম্পর্ক থাকা উচিৎ। তৃণমূল যেটার সর্বনাশ করে দিয়েছে। ওরা কারও কথাই শুনতে পারে না।”