Kali Puja 2022: দক্ষিণেশ্বরের আদলে তৈরি এই কালী মন্দিরের ইতিহাস জানেন?

Kali Puja 2022: এ দিকে, সেই সময় অন্তিদূরেই ধ্যান করছিলেন এক সন্ন্যাসী। তিনি স্বপ্নাদেশ পেলেন, আধপোড়া মৃতদেহ চিতা থেকে সরিয়ে কবর দেওয়ার।

Kali Puja 2022: দক্ষিণেশ্বরের আদলে তৈরি এই কালী মন্দিরের ইতিহাস জানেন?
দক্ষিণেশ্বরের মন্দিরের আদলে তৈরি আনন্দময়ী কালী মন্দির (নিজস্ব চিত্র)
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Oct 22, 2022 | 6:28 PM

হুগলি: ঝড়ঝঞ্ঝার কোনও লক্ষণই ছিল না সেদিন। সন্ধ্যা গড়িয়েছে তখন। আন্দি ইহলোকের মায়া ত্যাগ করে পাড়ি দিল অমৃত্যকের পথে। মাত্র নয় বছরের সেই ব্রাহ্মণকন্যার বিদায়ে শোকে বিহ্বল গোটা গ্রাম। অথচ কে তখন জানবে এই আন্দির নিথর দেহ তৈরি করে যাবে ইতিহাস? কানা নদীর পাড়ে হবে সৎকার। মৃতদেহ পোড়াতে জড়ো করা হয়েছে কাঠ। নিয়ম মেনে আন্দির মুখাগ্নিও করা হল। কিন্তু এ কী! হঠাৎ ঝড়ো হাওয়া লন্ডভন্ড করে দিল ভিড়টাকে। প্রাণ বাঁচাতে তখন পালাই পালাই রব। মুহূর্তে ফাঁকা হয়ে যাওয়া এলাকায় তখন এলকাই জ্বলছে চিতা।

এ দিকে, সেই সময় অন্তিদূরেই ধ্যান করছিলেন এক সন্ন্যাসী। তিনি স্বপ্নাদেশ পেলেন, আধপোড়া মৃতদেহ চিতা থেকে সরিয়ে কবর দেওয়ার। আর তার উপর তৈরি করতে হবে মা অনন্দময়ীর মূর্তি। এই ঘটনা ঠিক কবেকার তা কেউ বলতে পারবেন না। তবে ৩৫০ বছর আগে বলে লোকমুখে কিছু প্রচলন আছে। হাওড়া থেকে কর্ড লাইনে মির্জাপুর-বাঁকিপুর স্টেশনে নেমে জগৎনগরের আনন্দময়ী কালীমন্দিরের খোঁজ করলেই এই গল্প শোনা যায় গ্রামের বুড়ো থেকে ছোকরাদের মুখে। তবে সাবধান! মন্দির দেখে দক্ষিণেশ্বর ভেবে ভুল করবেন না যেন। আদলটা ভবতারিণী মন্দিরের হলেও এখানে মা কালী আনন্দময়ী।

কথিত রয়েছে

সেযুগে স্বপ্নাদেশ পাওয়া সন্ন্যাসী ডাল-পালা দিয়ে একটা ছাউনি আর ঘট প্রতিষ্ঠা করলেও মন্দির হয়নি। পরবর্তীতে ১২৯৪ বঙ্গাব্দে প্রথম গ্রামের ব্যবসায়ী কৈলাস দত্ত আনন্দময়ী কালীর স্বপ্নাদেশ পেয়ে একটি ছোট মন্দির প্রতিষ্ঠা করেন। বেনারস থেকে নিয়ে আসেন অষ্টধাতুর মূর্তি। আর মন্দির তৈরির জমি দান করেছিলেন চন্দননগরের জমিদার সরকাররা। পরে ভক্তদের দানের টাকায় তৈরি হয়েছে দক্ষিণেশ্বরের আদলে সুবিশাল মন্দির। ৬৫ ফুট উচ্চতা বিশিষ্ট এই মন্দির তৈরিতে খরচ পড়েছিল তাই ৬৫ লক্ষ টাকা।

আজও গেলে দেখতে পাওয়া যায়। বংশপরম্পরায় এই পথ দিলের পুজোর কাজ করছেন দিগম্বর চক্রবর্তীর বংশ।মন্দিরের বর্তমান সেবায়েত সুখদেব চক্রবর্তী বলেন, ‘প্রাচীন রীতি মেনেই পুজো হয়। শোনা যায় কৈলাস দত্ত মূর্তি প্রতিষ্ঠার পর যে পিতলের ঘট প্রতিষ্ঠা করেছিলেন তার জল এখনও পাল্টানো হয়নি। ওই একই ঘটে শতাধিক বছরের পুজো হয়ে আসছে।’

অন্যদিকে, কালী পুজোর কার্যত উৎসবের রূপ নেয় জগত নগর। দেবীর ভোগে লুচি, খিচুড়ি, পায়েস ছাড়াও বিভিন্ন রকমের ফলাহার দেওয়া হয়। আনন্দময়ী কালী জাগ্রত বলে মানেন অনেকে। তাই কালী পুজো ছাড়াও সারা বছর বহু মানুষ ভিড় জমান এই গ্রামে।