Jalpaiguri: ‘প্রকৃত দোষীদের আড়ালের চেষ্টা’, জামিন পেয়েই ‘প্রভাবশালীদের’ বিরুদ্ধে সরব শবকাণ্ডে ধৃত অঙ্কুর
Jalpaiguri: তবে সেই আবেদন খারিজ হয়ে যায়। গত বুধবার রাত্রিবেলা অঙ্কুরকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ঘটনার প্রায় পাঁচদিন পর জামিন পান তিনি।
জলপাইগুড়ি: শবকাণ্ডে জামিন পেলেন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কর্ণধার অঙ্কুর দাস (Ankur Das)। রবিবার জলপাইগুড়ি (jalpaiguri) বিশেষ আদালত এই নির্দেশ দেয়। অঙ্কুরকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আরও পাচঁদিনের হেফাজত চায় পুলিশ। তবে সেই আবেদন খারিজ হয়ে যায়। গত বুধবার রাত্রিবেলা অঙ্কুরকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ঘটনার প্রায় পাঁচদিন পর জামিন পান তিনি। তাঁকে ফুল মালা দিয়ে বরণ করে বাড়ি নিয়ে যান সহকর্মীরা।
এ দিন জামিন পাওয়ার পর অঙ্কুর বলেন, “প্রভাবশালীদের চাপে পড়ে পুলিশ যে কাজ করল তার নিন্দা জানাই। এই ছ’দিন ধরে প্রকৃত দোষীদের আড়াল করার চেষ্টা করা হয়েছে। তবে জলপাইগুড়ির মানুষ যেভাবে আমার পাশে ছিলেন তাঁর জন্য কুর্নিশ। এটা সত্যের জয়ের প্রথম ধাপ।” একই সঙ্গে আত্মবিশ্বাসের সুরে অঙ্কুর বলেন, “সেদিন তিন হাজার টাকা ভাড়া চাওয়া হয়েছিল লক্ষ্মীদেবী দেওয়ানের মৃতদেহ নেওয়ার জন্য। ১ হাজার ২০০ টাকা দিতে চাওয়া হলেও রাজি হয়নি। সেই অ্যাম্বুলেন্স আজ ১৭ টাকা প্রতি কিলোমিটার যাচ্ছে। তাহলে আগে যেতে রাজি হয়নি কেন? দিনের পর দিন জলপাইগুড়ি মানুষের রক্ত চুষছে যারা, তাদের শাস্তি না দিয়ে কেন আমায় গ্রেফতার করা হল তা এবার আমরা দেখব।”
ঘটনায় সরকারি আইনজীবী সৌম্য চক্রবর্তী বলেন, শর্তসাপেক্ষে অন্তর্বর্তী জামিন মঞ্জুর হয়েছে। অঙ্কুর দাস আদালতের অনুমতি ছাড়া জেলার বাইরে যেতে পারবেন না। সপ্তাহে একদিন করে থানায় হাজিরা দিতে হবে। অঙ্কুর দাশের আইনজীবী সন্দীপ দত্ত, সৌজিত সিংহ বলেন, পুলিশ অন্যায়ভাবে গ্রেফতার করেছিল অঙ্কুরকে।
অঙ্কুর দাসের স্ত্রী সুরভি দাস বলেন, “মানুষের জন্য কাজ করে ওকে গ্রেফতার হতে হয়েছিল। আজ আদালতের রায়ে আমি খুব খুশি। যেভাবে সাধারণ মানুষ আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছে তাতে আমরা অভিভূত। আমি চাই ও সমাজসেবার কাজ চালিয়ে যাক।”
বিজেপি জেলা সভাপতি বাপি গোস্বামী বলেন, “আদালত আজকে জামিন দিয়েছে। তৃণমূল নেতাদের মুখে ঝামা ঘষে দিয়েছে পুরো। এই স্বৈরাচারী সরকার ও পুলিশ প্রশাসন মানুষের উপর যেভাবে জুলুম করছে আশা করি এবার তাঁরা সংশোধিত হবেন। না হলে আগামী দিনে আবার কোর্টের কানমোলা খাবেন।”
প্রসঙ্গত, দু’সপ্তাহ আগে একটি জলপাইগুড়ি থেকে মর্মান্তিক ঘটনা সামনে আসে। অর্থাভাবে মায়ের মৃতদেহ শববাহী গাড়িতে নিয়ে যাওয়ার সামর্থ ছিল না। তাই মায়ের দেহ কাঁধে তুলে শ্মশানের পথে হাঁটা দিয়েছিলেন দিনমজুর ছেলে। জলপাইগুড়িতে এমন মর্মান্তিক ছবি প্রকাশ্যে এসেছে বৃহস্পতিবার। তারপরই ওই মৃতদেহ সৎকারের জন্য এগিয়ে আসে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। সাহায্য করা হয় শববাহী গাড়ি দিয়ে। তবে, এই ঘটনা সাজানো বলে অভিযোগ ওঠে ওই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার বিরুদ্ধে। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে মঙ্গলবার রাতে গ্রেফতার করা হয় ওই সংস্থার সাধারণ সম্পাদক অঙ্কুর দাসকে। অঙ্কুরের গ্রেফতারি নিয়ে ইতিমধ্যেই একাধিক প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। যিনি সাহায্য করতে এলেন, তাঁকেই কেন গ্রেফতার করা হল? উঠছে প্রশ্ন।