Malda: নির্যাতিতা বিবসনা মহিলাদেরও কেন গ্রেফতার? পুলিশের বিরুদ্ধে উঠছে ‘অতিসক্রিয়তার’ অভিযোগ
Malda: মঙ্গলবার ১৭ জুলাই বামনগোলা থানার পাকুয়াহাটে বসেছিল মঙ্গলাহাট। সেখানেই ছিনতাইয়ের অভিযোগ ওঠে ওই দুই মহিলার বিরুদ্ধে।
মালদহ: ভরা বাজারে প্রকাশ্য দিবালোকে নগ্ন করে বেধড়ক মারধর করা হচ্ছে দুই মহিলাকে। জুতো দিয়ে চলছে বেদম প্রহার। শুক্রবার ২১ জুলাই রাতে এই ভিডিয়ো ভাইরাল (TV9 বাংলা এই ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি) হতেই শোরগোল পড়ে যায় সোশ্যাল মিডিয়ায়। চাঞ্চল্যকর এ ঘটনা ঘটে মালদহের (Malda) বামোনগোলা থানার পাকুয়াহাটে। এ ঘটনায় ইতিমধ্যেই জোর শোরগোল শুরু হয়ে গিয়েছে রাজনৈতিক মহলেও। এদিকে ইতিমধ্যেই নির্যাতিতা দুই মহিলার বিরুদ্ধেই স্বতঃপ্রণোদিত মামলা করেছে পুলিশ। অন্যদিকে ওই দুই মহিলাকে নির্যাতন করার অভিযোগ ইতিমধ্যেই ৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। কিন্তু, নির্যাতিতা দুই মহিলাকে কেন গ্রেফতার করা হল? পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে বিরোধীরা।
প্রসঙ্গত, গত রবিবার ১৬ জুলাই মালদহের বামনগোলা থানা এলাকার নালাগোলায় বুরন মুর্মু নামে এক বিজেপি কর্মীর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। খুনের অভিযোগ ওঠে তাঁর ছেলে ও পুত্রবধূর বিরুদ্ধে। এদিকে এবারের পঞ্চায়েত ভোটে তৃণমূলের প্রার্থী ছিল তাঁর পুত্রবধূ। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে সোমবার ১৭ জুলাই উত্তাল হয় বামনগোলা। নালাগোলা পুলিশ ফাঁড়ি ঘেরাও করে বিজেপির কর্মী-সমর্থকেরা। ঝাঁটে হাতে বিক্ষোভে সামিল হতে দেখা যায় এলাকার মহিলাদের। পুলিশের অভিযোগ সেদিনের ঘটনায় যুক্ত ছিলেন এই দুই নির্যাতিতা মহিলা। সে কারণেই তাঁদের বিরুদ্ধে পুলিশ ফাঁড়িতে হামলার অভিযোগে মামলা দায়ের হয়েছে শনিবার। যদিও বর্তমানে তাঁরা দু’জনে মালদহ মেডিকেল কলেজে চিকিৎসাধীন রয়েছেন বলে জানা যাচ্ছে। যদিও বিজেপির অভিযোগ, মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়েছে দুই মহিলাকে।
পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন
নির্যাতিতা দুই মহিলার গ্রেফতার নিয়ে প্রথম থেকেই ধোঁয়াশায় রেখেছে পুলিশ। স্পষ্ট কোনও বিবৃতি জারি করা হয়নি। সূত্রের খবর, ওই দুই মহিলাকে নালাগোলা পুলিশ ফাঁড়িতে হামলা চালানোর অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়। থানায় বিবস্ত্র অবস্থায় তাঁদের বসিয়ে রাখারও অভিযোগ ওঠে। স্থানীয় বাসিন্দাদের কথায় জানা গিয়েছে, বাইরে থেকে একটি কাপড় নিয়ে এসে দু’টুকরো করে ওই মহিলাদের দেওয়া হয়। এখনও পর্যন্ত ওই মহিলাদের গ্রেফতার নিয়ে মুখ খোলেননি পুলিশের কোনও কর্তা। সূত্রের খবর, ২২ জুলাই তাঁদের গ্রেফতার করে ধৃত এক বিজেপি কর্মীর সঙ্গে মালদহ জেলা আদালতে তোলা হয়। আদালত ১৪ দিনের বিচারবিভাগীয় হেফাজতের নির্দেশ দেয়। সেখান থেকে ওই দুই নির্যাতিতাকে মালদহ মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি করা হয়। বিজেপির অভিযোগ, ওই দুই নির্যাতিতাকে মিথ্যে মামলায় ফাঁসানো হয়েছে। যদিও, গ্রেফতারের কারণ খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
অন্যদিেকে দুই মহিলাকে নির্যাতনের ঘটনায় যে ৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে সে প্রসঙ্গে পুলিশ সুপার প্রদীপ কুমার যাদব বলছেন, “বামনগোলা থানা গতকাল ভিডিয়োটা পেয়েছে। তারপরই সুয়োমটো কেস করেছে। আমরা আইটি অ্য়াক্টে মামলা করেছি। যে ভিডিয়ো দেখে তাতে কে কে আছে তা দেখা হয়েছে। তারপরই এখনও পর্যন্ত ৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তারমধ্যে ৩ জন মহিলা ও ২ জন মহিলা রয়েছে। এদের মধ্যে অনেকেই ভিডিও করে সোশ্যাল মিডিয়াতে ভাইরাল করেছিল। আরও দু’জনকে চিহ্নিত করা গিয়েছে। তাঁদের গ্রেফতার করার চেষ্টা চলছে।”
ভিডিয়ো ভাইরাল হতেই নিন্দার ঝড়
মঙ্গলবার ১৭ জুলাই বামনগোলা থানার পাকুয়াহাটে বসেছিল মঙ্গলাহাট। সেখানেই ছিনতাইয়ের অভিযোগ ওঠে ওই দুই মহিলার বিরুদ্ধে। ঘিরে ধরে উন্মত্ত জনতা। নগ্ন করে বেধড়ক মারধর করা তাঁদের। অভিযোগ, সবটা দেখেও সেই সময় নীরব দর্শকের ভূমিকায় ছিল সিভিক ভলান্টিয়ার। কেন পুলিশ খবর পাওয়ার পরেও ঘটনাস্থলে গেল না সেই প্রশ্নও তুলেছে বিরোধীরা। এ ঘটনায় গোটা রাজ্য তোলপাড় হতেই পুলিশ ৫ জনকে শনিবারই আবার গ্রেফতার করে। মালদহ যাবে বলে ইতিমধ্যেই জানিয়ে দিয়েছে রাজ্য মহিলা কমিশন। ঘটনার ফুটেজও পুলিশের থেকে চাওয়া হয়েছে।
ধরনায় বিজেপি
এদিকে এ ঘটনার প্রতিবাদে পুলিশ সুপারের অফিসের সামনে ধরনা বসেছেন বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মু। তার সঙ্গে ধরনায় রয়েছেন বিজেপির অন্যান্য নেতা কর্মীরাও। সাতবার ফোন করা সত্ত্বেও পুলিশ সুপার ফোন ধরেননি বলে অভিযোগ সাংসদের। তাঁর দাবি, টিভি নাইন বাংলায় খবর দেখানোর পরেই টনক নড়ে পুলিশের। এতদিন আসল ঘটনা ধামাচাপা দিয়েছে পুলিশ। তাঁর আরও অভিযোগ, ২ ঘন্টা নগ্ন অবস্থায় ফাঁড়িতে বসিয়ে রাখা হয়েছিল দুই মহিলাকে।