‘আমি মরলে তৃণমূল দায়ী’, মমতার সভাস্থলেই পিঠে কালো ব্যাগ নিয়ে দলীয় কর্মীর আর্ত চিৎকার
বছর পঁয়ত্রিশের যুবক মুখ্যমন্ত্রীর সভাস্থলের পাশ দিয়েই ঘুরে বেড়াচ্ছিলেন। এপাশ-ওপাশ হাঁটছিলেন। স্বেচ্ছাসেবকদের পাশাপাশি, বিষয়টা নজরে আসে নিরাপত্তাকর্মীদের।

মালদা: জামা ইন করা। পিঠে একটা কালো ব্যাগ। পকেটে একটা কাগজ রাখা। হাতে মোবাইল। বছর পঁয়ত্রিশের এই যুবক মুখ্যমন্ত্রীর সভাস্থলের পাশ দিয়েই ঘুরে বেড়াচ্ছিলেন, এপাশ-ওপাশ হাঁটছিলেন। স্বেচ্ছাসেবকদের পাশাপাশি, বিষয়টা নজরে আসে নিরাপত্তাকর্মীদেরও। এরপরই জিজ্ঞাসা করা হয়। যুবক জানান, তিনি আসলে মুখ্যমন্ত্রীর (CM Mamata Banerjee) সঙ্গে দেখা করতে এসেছেন! তাঁরই সঙ্গে কথা বলবেন। মুহূর্তের মধ্যে যুবককে ঘিরে শোরগোল শুরু হয়। মালদার (Malda) ডিএসএ ময়দানে তৃণমূলনেত্রীর সভার আগেই নাটকীয় আবহ।
কে এই যুবক? তাঁর নাম গোপাল বিশ্বাস। তিনি তৃণমূলেরই এক কর্মী। তাঁর মাও তৃণমূল করতেন। প্রতিশ্রুতি মতো মায়ের চিকিৎসার খরচ ও চাকরি না পাওয়াতেই মঞ্চের সামনে অবস্থানে বসার পরিকল্পনা নিয়ে এসেছেন তিনি। ২০১৮ সালে তাঁর মা তথা তৃণমূলকর্মী নন্দরানি বিশ্বাস গাজোলের শান্তিমোড়ে তৃণমূলেরই জনসভা থেকে ফেরার পথে দুর্ঘটনার কবলে পড়েন। ডান পা হারান। সেই থেকেই তিনি এখনও শয্যাশায়ী। আর শ্রমিকের কাজ করে সংসার চালান গোপাল।
গোপালের দাবি, রাজ্য ও জেলা নেতৃত্ব তাঁকে অনেক প্রতিশ্রুতি দিয়েছে শেষ কয়েক বছরে। একটি চাকরি, মায়ের চিকিৎসার যাবতীয় খরচ- সবই নাকি নেবে দল। কিন্তু যুবকের দাবি, এখনও কিছুই জোটেনি কপালে। কেবল দুয়ারে-দুয়ারে ঘুরেছেন। এদিকে দু’লক্ষ টাকা ঋণ নেন গোপাল। বর্তমানে প্রায় অর্ধাহারে কাটছে তাঁদের দিন। আর সেজন্যই তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চান বলে জানান।
আরও পড়ুন: উত্তরবঙ্গ পুনরুদ্ধারে মরিয়া নেত্রী ময়দানে একাই, চ্যালেঞ্জ গোষ্ঠীকোন্দল, জার্সিবদল রোখা
একদিকে যখন তৃণমূলনেত্রীর সভা ঘিরে চূড়ান্ত ব্যস্ততা, তখন গোপালকে নিয়ে বেধে যায় বড় শোরগোল। তৃণমূলের বুথ সভাপতিকে এই যুবক রীতিমত হুমকি দেন, তাঁর বা তাঁর মায়ের মৃত্যুর জন্য তৃণমূল দায়ী থাকবে। অনেক চেষ্টায় যুবককে সভাস্থল থেকে বাইরে বার করেন নিরাপত্তাকর্মীরা। তারপরও বাইরে গিয়ে বসে থাকেন ওই যুবক।

নিজস্ব চিত্র
দেখা যায় সভাস্থল থেকে বেশ কিছুটা দূরে একটি চায়ের দোকানে বসে রয়েছেন গোপাল। পিঠে সেই ব্যাগ। মাথা নীচু, শুধু বিড়বিড় করে কী যেন বলে চলেছেন! স্পষ্ট নয় কথা। শুধু বোঝা গেল, কতটা হতাশা গ্রাস করেছে তাঁকে।





