Mahishadal: ঘরে ৩ বছরের সন্তান, পার্সেল কাঁধে ১৪ ঘণ্টা ছুটে চলেন মহিষাদলের অন্য দুর্গা অর্পিতা
Mahishadal News: মহিষাদলের বছর পঁচিশের অর্পিতা দিনভর একের পর এক পার্সেল নিয়ে ছুটে বেড়ান তমলুক শহরের অলিগলি, বাজার, কলোনি, গ্রামাঞ্চল। সন্ধ্যা নামলে আবারও লড়াই স্কুটিতে করে বাড়ি ফেরা। এই তরুণীর দৃঢ়তা এককথায় অনন্য। সংসার, সন্তানের দায়িত্ব আর নিজের ক্যারিয়ার সব একসঙ্গে সামলান, এ যেন বাস্তবে দেবী শক্তি।

পূর্ব মেদিনীপুর: পার্সেল আছে! ৩ বছরের সন্তানকে রেখে ১৪ ঘণ্টার ডিউটিতে বেরোন বাস্তবের দশভূজা মহিষাদলের অর্পিতা! দুর্গাপুজোর সময় চারিদিকে আলো, আনন্দ আর অনলাইন কেনাকাটার হিড়িক। কেউ অ্যাপ খুলে বাড়িতে বসে অর্ডার করছে জামাকাপড়, কেউ বা গহনা, আবার কারও হাতে পৌঁছচ্ছে নতুন ইলেক্ট্রনিক্স। কিন্তু সেই পার্সেল সময়মতো গ্রাহকের হাতে পৌঁছতে কতটা পরিশ্রম করতে হয়, তা খুব কম মানুষই জানেন।
মহিষাদলের বছর পঁচিশের অর্পিতা দিনভর একের পর এক পার্সেল নিয়ে ছুটে বেড়ান তমলুক শহরের অলিগলি, বাজার, কলোনি, গ্রামাঞ্চল। সন্ধ্যা নামলে আবারও লড়াই স্কুটিতে করে বাড়ি ফেরা। এই তরুণীর দৃঢ়তা এককথায় অনন্য। সংসার, সন্তানের দায়িত্ব আর নিজের ক্যারিয়ার সব একসঙ্গে সামলান, এ যেন বাস্তবে দেবী শক্তি।
অর্পিতা বরাবরই চেয়েছেন নিজের পায়ে দাঁড়াতে। অষ্টম শ্রেণিতে পড়াকালীনই নিজের খরচ মেটানোর জন্য টিউশনি শুরু করেছিলেন। কলেজে ওঠার পর তিনি বেসরকারি স্কুলে পড়ানো শুরু করেন। পরে একটি ফাইনান্স কোম্পানিতে চাকরি করেন, তারপর হলদিয়ায় সিকিউরিটি ম্যানেজারের পদেও দায়িত্ব সামলেছেন।জীবনের প্রতিটি ধাপেই নতুন নতুন কাজ শিখেছেন, অভিজ্ঞতা অর্জন করেছেন।
আর আজ তিনি তমলুকের নিমতৌড়িতে এক ডেলিভারি সংস্থার সক্রিয় কর্মী। প্রতিদিন প্রায় ৭০ থেকে ৮০টি পার্সেল পৌঁছে দেন মানুষের বাড়ি বাড়ি। প্রায় পাঁচ বছর আগে নন্দকুমারে বিয়ে হয়েছিল অর্পিতার। কিন্তু কর্মসূত্রে স্বামী ভিনরাজ্যে থাকেন। তাই তিনি এখন বাবার বাড়িতেই থাকেন ছোট সন্তানকে নিয়ে। বছর তিনেকের বাচ্চাটিকে নিয়ে দিন শুরু হয় অর্পিতার। সকালবেলা সন্তানের খাওয়াদাওয়া করিয়ে, নিজের সব কাজ সেরে সকাল ছ’টায় স্কুটিতে চেপে রওনা দেন অফিসের উদ্দেশে।
দিনভর পার্সেল বিতরণের পর বাড়ি ফিরে ছোট্ট শিশুর দায়িত্ব তুলে নেন নিজের কাঁধে।সংসার, সন্তানের দায়িত্ব আর নিজের ক্যারিয়ার সব একসঙ্গে সামলান, এ যেন বাস্তবে দেবী শক্তি! অর্পিতা বলেন, “মেয়েরা চাইলে সবই পারে। মনের জোরটাই আসল। সবটাই সামলাই তাই।”
