deadbody at Akra station: ‘হিন্দু হোক বা মুসলমান, মানুষ তো…’, সকাল থেকে মৃতদেহটা পাশ কাটিয়ে চলে যাচ্ছিলেন সবাই

deadbody at Akra station: স্টেশনে ঘণ্টার পর ঘণ্টা পড়েছিল দেহ। কেউ সরানোর চেষ্ট করেনি। পরে স্থানীয় বাসিন্দাদের চেষ্টায় সেই দেহ নিয়ে যাওয়া হয়।

deadbody at Akra station: 'হিন্দু হোক বা মুসলমান, মানুষ তো...', সকাল থেকে মৃতদেহটা পাশ কাটিয়ে চলে যাচ্ছিলেন সবাই
স্টেশনে পড়েছিল মৃতদেহ
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Mar 21, 2022 | 2:16 PM

আকরা : কাজ জোটেনি তেমন কোনও। স্ত্রী, সন্তানকে নিয়ে স্টেশনে স্টেশনে দিন থেকে রাত কাটত পরিবারের। সম্ভবত রাতেই মৃত্যু হয়েছে রাজু ঘোষ নামে ওই ব্যক্তির। আর সকাল থেকে সেই মৃতদেহ স্টেশনে পড়ে থাকলেও প্রথমটায় দায় এড়িয়ে গেল সবাই। সোমবার সকাল থেকে শিয়ালদহ বজবজ শাখার আকরা স্টেশনে অনেকেই ওই ব্যক্তির মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখেন। টিকিট কাউন্টারের দীর্ঘক্ষণ ওই দেহ পড়ে থাকতে দেখে, অস্বস্তি বাড়ছিল অনেকেরই। কিন্তু, সেই দেহের শেষকৃত্যের ব্যবস্থা করার উদ্যোগই নিলেন না কেউ।

এ দিন সকাল থেকে মৃতদেহের পাশে দাঁড়িয়েই নিত্যযাত্রীরা টিকিট কেটে তাঁদের গন্তব্যস্থলে যাচ্ছিলেন। স্টেশন মাস্টার থেকে পথচলতি মানুষ বা প্রশাসনের কারও কোনও হেলদোল দেখা যায়নি। স্থানীয় কিছু লোকজন মহেশতলা থানায় খবর দেন। তাঁরা বিষয়টি শুনে জানান, এটা সম্পূর্ণ জিআরপির বিষয়। তাই তাঁরা কোনও কিছুই করতে পারবেন না। বেলা বাড়লে কয়েকজন যুবক এই দেহ স্টেশন থেকে বের করে বাইরে রেখে দেন।

এরপর বাধ্য হয়েই স্থানীয়রা ১০০ ডায়ালে ফোন করেন। বিভিন্ন মহল থেকে জিআরপি তে ফোন যায়। স্টেশনে পড়ে থাকা দেহের দায়িত্ব জিআরপি-র নেওয়ার কথা। তাই পরে নড়েচড়ে বসে তারা। সকাল নটার সময় জিআরপির প্রতিনিধিরা ঘটনাস্থলে এলেও যেহেতু স্টেশনে মৃতদেহটি পড়েছিল তাই ডাক্তারি সার্টিফিকেট ছাড়া সেই দেহ কোনও ভাবেই নিয়ে যাওয়া সম্ভব হচ্ছিলনা।

৪ ঘণ্টা বাদে স্থানীয় একটি চিকিৎসককে ডেকে এনে মৃতের মৃত্যু শংসাপত্র করানো হয়। কিন্তু সেটি হাতে পাওয়ার পর সমস্যা দেখা দেয়। এই দেহ কাকে হস্তান্তর করা হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। কারণ মৃত রাজু ঘোষ (৪২)- এর স্ত্রী ও তিন সন্তান বর্তমান হলেও তাঁদের কারও কাছেই কোনও নাম ঠিকানার সরকারি নথি ছিল না। জানা গিয়েছে, কয়েক বছর আগে বাংলাদেশ থেকে এখানে আসার পর শিয়ালদহ-বজবজ শাখার বিভিন্ন স্টেশনেই থাকতেন তাঁরা। এমনকি নির্দিষ্ট কোনও রুজি-রুটিও ছিল না।

মহম্মদ নিজামুদ্দিন নামে স্থানীয় এক বাসিন্দা জানান, এ দিন সকালে রাজুকে পড়ে থাকতে দেখে তিনি ভেবেছিলেন, তিনি ঘুমোচ্ছেন। পরে দেখেন রাজুর দেহ কারা যেন বাইরে বের করে দিয়েছে। নিজামুদ্দিন বলেন, ‘আমার খুব খারাপ লেগেছে। হিন্দু হোক আর মুসলমান হোক, মানুষ তো!’ পরে তিনি ১০০ ডায়ালে ফোন করেন।

পরে খবর যায় স্থানীয় তৃণমূল পুরপিতা আতিবর রহমানের কাছে। তিনি ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতির গুরুত্ব বুঝে তাঁর নিজস্ব প্যাডে বালিগঞ্জ জিআরপিকে লিখিতভাবে অনুরোধ করেন, যাতে রাজু ঘোষের স্ত্রী পূজা ঘোষকে মৃতদেহ হস্তান্তর করা হয়। পাশাপাশি রাজুর মৃতদেহ হস্তান্তরের পর শেষকৃত্যও তিনি নিজে দায়িত্ব নিয়ে করার ব্যবস্থা করেন। দীর্ঘ টালবাহানার পর যখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয় তখন বেলা প্রায় বারোটা।

আরও পড়ুন : Calcutta High Court: মমতার বিমান বিভ্রাট মামলায় এবার কেন্দ্রের কাছে রিপোর্ট তলব, দু’ সপ্তাহের মধ্যে জানাতে হবে বক্তব্য