Asthma Day: দূষণের জন্য শিশু ও বয়স্কদের মধ্যে বাড়ছে অ্যাজমা রোগ

বর্তমানে বংশগত কারণের চেয়ে পরিবেশগত কারণেই অ্যাজমা বা হাঁপানি রোগীর সংখ্যা দিন-দিন বাড়ছে। মূলত শিশু ও বয়স্করাই অ্যাজমায় বেশি আক্রান্ত হচ্ছে।

Asthma Day: দূষণের জন্য শিশু ও বয়স্কদের মধ্যে বাড়ছে অ্যাজমা রোগ
প্রতীকী ছবি।
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: May 02, 2023 | 5:57 AM

ঢাকা: অ্যাজমা (Asthma) বা হাঁপানি রোগ বংশগত। এতদিন এমনটাই শোনা যেত। কিন্তু, বর্তমানে বংশগত কারণের চেয়ে পরিবেশগত কারণেই অ্যাজমা বা হাঁপানি রোগীর সংখ্যা দিন-দিন বাড়ছে। মূলত শিশু ও বয়স্করাই অ্যাজমায় বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। ২ মে সারা বিশ্বে পালিত হচ্ছে ‘বিশ্ব অ্যাজমা দিবস’-এর সময় বাংলাদেশের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ ডিজিজ অফ দ্য চেস্ট অ্যান্ড হাসপাতালের (NIDCH) প্রকাশিত সমীক্ষায় এমনই তথ্য উঠে এসেছে। একইভাবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (WHO) মতে, বিশ্বে প্রায় ৩০ কোটি মানুষ অ্যাজমা রোগে আক্রান্ত। যার মধ্যে ১৮ বছরের কম বয়সি প্রায় ৫১ লক্ষ শিশু রয়েছে।

বাংলাদেশের NIDCH-এর পরিসংখ্যান অনুযায়ী, এই হাসপাতালে যতজন চিকিৎসা নিতে আসে, তার ৩০ শতাংশই অ্যাজমা রোগী। এর মধ্যে প্রায় ২৬ শতাংশের বয়স ১৪ বছরে নীচে। গত বছরের তুলনা করলে দেখা যায়, ২০২২ সালে NIDCH হাসপাতালের বহির্বিভাগে ৮ হাজার ৪৮০ জন অ্যাজমা রোগী চিকিৎসা নিয়েছে। যার মধ্যে ২ হাজার ১৮১ জনের বয়স ১৪ বছরের নীচে। ১৫ থেকে ২৪ বছর বয়সি ১ হাজার ৪০৫ জন। ২৫ থেকে ৪৯ বছর বয়সের ২ হাজার ৫০৭ জন আর ৫০ বছরে বেশি রোগীর সংখ্যা ২ হাজার ৩৮৭ জন। আর এই হাসপাতালে গত বছরে ৩ হাজার পাঁচজন রোগী ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিয়েছে। এর মধ্যে ১৪ বছরের নিচে ৮৯ জন। ১৫ থেকে ২৪ বছর বয়সের ১৯৭ জন। ২৫ থেকে ৪৯ বছর বয়সের ৮০১ জন, আর ৫০ বছরে বেশি এক হাজার ৯১৮ জন।

হাসপাতালের চিকিৎসকদের মতে, একটা সময় জন্মগত অ্যাজমা রোগীর সংখ্যা বেশি ছিল। এখন পরিবেশদূষণ, বায়ুদূষণ, রাসায়নিক পদার্থের ব্যবহারের কারণে অ্যাজমা রোগী বাড়ছে। বিশেষ করে শিশু ও বয়স্করা বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। কেবল শহর নয়, গ্রামেও প্রচুর অ্যাজমা রোগী রয়েছে। ইনহেলার ও অন্যান্য ওষুধ গ্রহণের হার বেড়েছে। তবে আশার কথা, আধুনিক চিকিৎসায় এই রোগে মৃত্যুর হার কমছে। ঢাকা শিশু হাসপাতালের এক চিকিৎসক জানান, জিনগত কারণ ছাড়াও শিশুদের অ্যাজমার অন্যতম কারণ হল, দূষিত বায়ু-ধূলিকণা ও ভাইরাস।

বাংলাদেশে বর্তমানে অ্যাজমা রোগীর সংখ্যার সঠিক পরিসংখ্যান নেই। তবে ১৯৯৯ সালে বাংলাদেশ লাংস ফাউন্ডেশনের শ্বাসতন্ত্রের অসুখ সম্পর্কিত এক সমীক্ষায় বলা হয়েছিল, দেশে হাঁপানি রোগীর সংখ্যা প্রায় ৭০ লাখ। বর্তমানে সেই ১ কোটি ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা।

তবে কেবল বাংলাদেশ নয়, গোটা বিশ্বেই যে অ্যজমা রোগীর সংখ্যা বাড়ছে, তা WHO-র পরিসংখ্যানেই স্পষ্ট। WHO-র মতে, বিশ্বে প্রায় ৩০ কোটি মানুষ অ্যাজমা রোগে আক্রান্ত। যার মধ্যে ১৮ বছরের কম বয়সি প্রায় ৫১ লক্ষ শিশু রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে অ্যাজমা প্রতিরোধে সচেতনতা বাড়াতে ২ মে সারা বিশ্বে পালিত হচ্ছে ‘বিশ্ব অ্যাজমা দিবস’। এবারে এই দিবসের মূল বিষয় হল, ‘হাঁপানির যত্ন সবার জন্য’।

অ্যাজমার কারণ ও উপসর্গ অ্যাজমার অন্যতম কারণ যেমন পরিবেশ দূষণ, তেমনই এই রোগের শুরুতেই সঠিক চিকিৎসা শুরু হলে রোগমুক্ত হওয়া সম্ভব বলে মনে করেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। তাই এই রোগের প্রাথমিক উপসর্গগুলি জানা জরুরি। চিকিৎসকদের মতে, অ্যাজমা বা হাঁপানি হলো মূলত শ্বাসতন্ত্রের রোগ। এর মূল উপসর্গ শ্বাসকষ্ট, কাশি, বুকে বাঁশির মতো শব্দ হওয়া, বুকে চাপ অনুভূত হওয়া।

অ্যাজমা প্রতিরোধের উপায় অ্যাজমা থেকে সুস্থ থাকতে হলে অ্যালার্জি এড়িয়ে চলতে হবে। তার জন্য কী থেকে অ্যালার্জি হয়, সেটা জানতে হবে। যাঁদের ধূলোয় অ্যালার্জি তাঁরা ধোঁয়া, ধূলোবালি, পোষ্যর সংস্পর্শ, মশার কয়েল, সুগন্ধি থেকে দূরে থাকুন। প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ধূমপান থেকে বিরত থাকুন। আসবাব ও বিছানা পরিষ্কার রাখুন। যেসব খাবারে অ্যালার্জি হয় তা বর্জন করুন। বাইরে বেরোনোর আগে অবশ্যই মাস্ক ব্যবহার করুন। এছাড়া চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী সঠিক নিয়মে ইনহেলার ও অন্যান্য ওষুধ গ্রহণ জরুরি।