কে ‘খুনি’, পুতিন না বাইডেন?
পুতিন বলেন, "এটা জোক নয়। এখানে একটা গভীর মনস্তাত্ত্বিক মানে রয়েছে। আমরা সব সময়ই অন্যকে নিজের মতো করে দেখি। তাঁর ক্ষেত্রে একই হয়েছে।"
মস্কো: ২০১৬ মার্কিন নির্বাচনে বেশি ভোট পেয়েও ইলেক্টোরাল ভোটে হেরে গিয়েছিলেন হিলারি ক্লিন্টন (Hilary Clinton)। প্রেসিডেন্ট হয়েছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। তখন ডেমোক্র্যাটরা রাশিয়ার বিরুদ্ধে ভোটে কারচুপির অভিযোগ করেছিল। সেই একই অভিযোগ এ বারও উঠেছে রাশিয়ার বিরুদ্ধে। বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, এ বারও ট্রাম্পকে জেতাতে মরিয়া চেষ্টা করেছিল রাশিয়া। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি। আর তারপর থেকই কার্যত সম্মুখ সমরে নেমেছেন দুই দেশের প্রেসিডেন্ট। সেই আবহে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে ‘খুনি’ আখ্যা দিয়েছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। পাল্টা বাইডেনকেই ‘খুনি’ তকমা দিলেন পুতিন।
একটি সংবাদসংস্থাকে সাক্ষাৎকার দেওয়ার সময় বাইডেনকে প্রশ্ন করা হয়, মার্কিন গোয়েন্দাবাহিনীর রিপোর্টে যে নির্বাচনে কারচুপিতে সাহায্য করার অভিযোগ উঠেছিল পুতিনের বিরুদ্ধে, সেই সম্পর্কে তাঁর কী মত? জবাবে বাইডেন বলেন, “এর মূল্য চোকাতে হবে ওনাকে (ভ্লাদিমির পুতিন)।” পুতিনের বিরুদ্ধে অ্যালেক্সাই নাভালনিকে বিষ খাইয়ে মেরে ফেলার অভিযোগের বিষয়ে বাইডেন বলেন, “হ্যাঁ, আমি বিশ্বাস করি উনি খুনি।” এখান থেকেই শুরু হয় বাইডেন-পুতিন ফাইট। নিজের ‘খুনি’ তকমার বিষয়ে পুতিন বলেন, “একজন নিজে যা তিনি সকলকে তাই ভাবেন।” অর্থাৎ ঘুরিয়ে বাইডেনকেই ‘খুনি’ বলেন পুতিন।
পুতিন বলেন, “এটা জোক নয়। এখানে একটা গভীর মনস্তাত্ত্বিক মানে রয়েছে। আমরা সব সময়ই অন্যকে নিজের মতো করে দেখি। তাঁর ক্ষেত্রে একই হয়েছে।” পাশাপাশি ৭৮ বছর বয়সী বাইডেনের সুস্বাস্থ্যও কামনা করেন পুতিন। তারপর রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট এ-ও বুঝিয়ে দেন যে সুস্বাস্থ্যের বিষয়টি তিনি জেনেবুঝেই বলছেন। এটাও জোক নয়। প্রসঙ্গত, বারবার বিশ্ববাজার দখলের লড়াই চলে এসেছে রাশিয়া ও আমেরিকার। পরবর্তীকালে সেই লড়াইয়ের মাঝখানে ঢুকে পড়ে চিন। ক্রমেই বাণিজ্য সংঘাতে জড়িয়ে পড়েন ট্রাম্প ও জিনপিং।
কিন্তু কে ‘খুনি’ এই তরজা নিয়ে ফের সংঘাতে রাশিয়া ও আমেরিকা। মার্কিন প্রেসিডেন্টের এই বয়ানের পরই রাশিয়ার উপ-বিদেশমন্ত্রী সার্গেই রেয়াকব বলেন, “আগামিদিনে রাশিয়া ও আমেরিকার মধ্যে সম্পর্ক কেমন হবে, তা সম্পূর্ণভাবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ওপরই নির্ভর করছে।”
এদিকে, রাশিয়ার অবস্থানের ওপর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রও কড়া নজর রাখছে বলে জানান হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র জেন পেন্সকি। মার্কিন নির্বাচনে রাশিয়ার নাক গলানো, নাভালনির বিষক্রিয়ার ঘটনা, সাইবার হানা ও আফগানিস্থানে মার্কিন সেনাকে বাধা দেওয়ার ঘটনাগুলির প্রেক্ষিতে তিনি বলেন, “রাশিয়ার সমস্যাসৃষ্টিকারী কার্যক্রমের প্রেক্ষিতে তিনি (জো বাইডেন) চুপ থাকবেন না। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে ফোনে প্রথমবার বার্তালাপের সময়ই প্রেসিডেন্ট বাইডেন স্পষ্টভাবে জানিয়েছিলেন যে বেশ কয়েকটি উদ্বেগজনক ঘটনার জবাব দেবে আমেরিকা।”
আরও পড়ুন: ‘খুনি’ পুতিনকে ‘মূল্য চোকাতে হবে’, সতর্কবার্তা বাইডেনের