ব্রিটেনে টিকার আকাল, কাঠগড়ায় ভারতের ‘ভ্যাকসিন জাতীয়তাবাদ’
বিরোধীদের প্রবল চাপের মুখে এ দিন ব্রিটেনের স্বাস্থ্য সচিব ম্যাট হ্যানকক স্বীকার করতে বাধ্য হন, সেরাম সঠিক সময়ে ভ্যাকসিন না দেওয়ার কারণে এ বার ব্রিটেনে টিকার আকাল দেখা দিতে পারে।
নয়া দিল্লি: সময়মতো ভ্যাকসিন (Covid Vaccine) না পাওয়ার কারণে এ বার কেন্দ্রীয় সরকার ও সেরাম ইনস্টিটিউটকে (Seram Institute Of India) কাঠগড়ায় তুলল ব্রিটেন (UK)। দেশের জোগান মেটাতে গিয়ে বিদেশে সঠিক সময়ে টিকা না পৌঁছনোর জন্য ভারতের ‘ভ্যাকসিন জাতীয়তাবাদ’কে দায়ী করা হয়েছে।
আন্তর্জাতিক বাজারে ভ্যাকসিন সরবরাহের নিরিখে চিনকে অনেকটাই পিছনে ফেলে দিয়েছে ভারত। যে কারণে একাধিক দেশ সেরাম ইনস্টিটিউট থেকেই অক্সফোর্ড ও অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিন নেওয়ার বিষয়ে আগ্রহ দেখাচ্ছে। সেরামও সেই মতো একের পর এক চুক্তি রীতিমতো লুফে নিয়েছে। কিন্তু, ভারতেও করোনার দ্বিতীয় ঢেউ ধাক্কা মারতেই নির্ধারিত সময়ে ভ্যাকসিন সরবরাহ করতে গিয়ে সমস্যায় পড়ছে সেরাম।
বিরোধীদের প্রবল চাপের মুখে এ দিন ব্রিটেনের স্বাস্থ্য সচিব ম্যাট হ্যানকক স্বীকার করতে বাধ্য হন, সেরাম সঠিক সময়ে ভ্যাকসিন না দেওয়ার কারণে এ বার ব্রিটেনে টিকার আকাল দেখা দিতে পারে। সূত্রের খবর, সেরামের সঙ্গে ব্রিটেনের ১ কোটি ডোজের চুক্তি হয়েছিল ব্রিটেনের। প্রথম কিস্তিতে ৫০ লক্ষ ভ্যাকসিন পৌঁছে গিয়েছিল। কথা ছিল, আরও ৫০ লক্ষ ডোজ শীঘ্রই পৌঁছে যাবে। তবে ডেলিভারির নির্ধারিত সময় পেরিয়ে গেলেও বাকি ৫০ লক্ষ ডোজ না আসায় প্রশ্ন উঠতে শুরু করে। বিরোধীদের প্রবল চাপের মুখে শেষ পর্যন্ত বরিস জনসনের স্বাস্থ্য সচিব বলেন, তাঁরা বুঝে উঠতে পারেননি যে এমনটা হতে পারে।
এই প্রসঙ্গে সেরামের সিইও আদার পুনাওয়ালা অন্যান্য দেশগুলিকে ধৈর্য ধরার আবেদন জানান। একই সঙ্গে স্পষ্ট করে দেন, তাঁর সংস্থার কাছে ভারতের প্রয়োজনই অগ্রাধিকার পাবে। পাশাপাশি ব্রিটেনে ভ্যাকসিনের আকাল নিয়ে তাঁর সাফাই, যখন সেরামের দ্বারা সম্ভব হবে তখন ব্রিটেনকে সাহায্য করতে তাঁরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। ঠিক এই জায়গাতেই ব্রিটেনের মন্ত্রীরা দাবি করছেন, দিল্লি সরকারের ‘ভ্যাকসিন জাতীয়তাবাদে’র শিকার হয়েছে ব্রিটেন।
আরও পড়ুন: ‘আমি কোনওভাবেই বিজেপির প্রার্থী হচ্ছি না’, নাম ঘোষণার পরই ক্ষোভে ফেটে পড়লেন সোমেন-জায়া
করোনা ভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ ভারতে ধাক্কা মারার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে দেশে ভ্যাকসিনের চাহিদাও বৃদ্ধি পাচ্ছে। যে কারণে অন্যান্য দেশে অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিন সহবরাহ করতে গিয়ে দেশের ভাঁড়ারে টান পড়তে শুরু করেছিল। এই অবস্থায় ভারতের চাহিদাকে অগ্রাধিকার দিতে গিয়ে প্রতিশ্রুতি সত্ত্বেও সঠিক সময়ে ব্রিটেনকে ভ্যাকসিন সরবরাহ করতে পারছে না সেরাম। যা কার্যত এ বার একটি আন্তর্জাতিক ইস্যু হয়ে উঠেছে।
আরও পড়ুন: তালিকায় একাধিক সংখ্যালঘু মুখ, বাংলার তিন জেলায় বাড়তি নজর বিজেপির