NASA Moon Mission: চাঁদে প্রথম পা পড়বে মহিলার, ‘গোপন’ নাম অবশেষে সামনে আনল NASA
NASA Moon Mission: নাসার অ্যাডমিনিস্ট্রেটর বিল নেলসন যখন ক্রিস্টিনার নাম ঘোষণা করছেন, তখন তাঁর মুখে মুচকি হাসি।
কমলেশ চৌধুরী: ক্রিস্টিনা হ্যামক কোকের টুইটার বায়োতে লেখা ‘নাসার মহাকাশচারী’, যিনি আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে থেকেছেন, কাজ করেছেন। মহিলা মহাকাশচারী হিসেবে একটানা সবচেয়ে বেশিদিন স্পেস স্টেশনে কাটানোর নজিরও রয়েছে তাঁর। সব মিলিয়ে মহাকাশে কাটিয়েছেন ৩২৮ দিন। এ বার আরও বড় নজির গড়তে চলেছেন ক্রিস্টিনা। বিশ্বের প্রথম মহিলা হিসেবে চাঁদের চার দিকে ঘোরার ও চাঁদে পা রাখার কৃতিত্ব বসতে চলেছে ক্রিস্টিনার নামের পাশে। প্রথম বার চাঁদে পা রাখার পঞ্চাশ বছর পূর্তিতেই নাসা জানিয়েছিল, এ বার কোনও নারীর পা পড়বে চাঁদে। সোমবার সেই ‘গোপন’ নামটাও ঘোষণা করে দিল মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা।
নাসার অ্যাডমিনিস্ট্রেটর বিল নেলসন যখন ক্রিস্টিনার নাম ঘোষণা করছেন, তখন তাঁর মুখে মুচকি হাসি। একের পর এক বিশেষণ জুড়ছেন ক্রিস্টিনার নামের আগে। ইঞ্জিনিয়ার, বহু রেকর্ড ভাঙার কারিগর, মহাকাশের পরিচিত মুখ। এরপরই মিশন স্পেশ্যালিস্ট ওয়ান হিসেবে ক্রিস্টিনার নাম ঘোষণা। ২০১৩ সালে নাসার মহাকাশচারী নির্বাচিত হন তিনি। টানা তিন-তিনটে অভিযানে স্পেস স্টেশনে থেকেছেন। প্রথম অল-ফিমেল স্পেসওয়াকেও অংশ নিয়েছিলেন ক্রিস্টিনা। এ বার মুনওয়াকের পালা।
ক্রিস্টিনার সঙ্গেই ইতিহাস গড়তে চলেছেন ভিক্টর গ্লোভার। প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ হিসেবে চাঁদে যাবেন পাইলট ভিক্টর। মিশন স্পেশ্যালিস্ট টু হিসেবে অভিযানে থাকবেন কানাডার জেরেমি হানসেন। কানাডা আর্মির কর্নেল জেরেমির এটাই প্রথম মহাকাশ অভিযান। চতুর্থজন মিশন কমান্ডার রেড ওয়াইজম্যান। ইতিমধ্যেই মহাকাশে ১৬৫ দিন কাটিয়ে আসার অভিজ্ঞতা ওয়াইজম্যানের ঝুলিতেই। নামের সঙ্গে সুবিচারই বলা যায়।
এ বার প্রশ্ন, কবে ইতিহাস গড়বেন ক্রিস্টিনারা?
আর্তেমিস অভিযানকে তিন দফায় ভেঙেছে নাসা। একেবারে গোড়ার অভিযান আর্তেমিস ওয়ান। পরীক্ষামূলক অভিযান ইতিমধ্যেই সারা। গত বছর ১৬ নভেম্বর চাঁদের পথে পাড়ি দিয়েছিল আর্তেমিস ১। ২৫ দিন ১০ ঘণ্টা ৫৩ মিনিটে ১৪ লক্ষ মাইল পেরিয়ে আবার ফিরে এসেছিল পৃথিবীর বুকে। গত বছর ১১ ডিসেম্বর। দ্বিতীয় দফায় আর্তেমিস টু মিশন। এখন পর্যন্ত ঠিক রয়েছে, আগামী বছর অর্থাৎ ২০২৪-এর নভেম্বরে উড়বে ওরিয়ন স্পেসক্রাফট। এ বার আর শুধু যন্ত্র নয়, থাকবে মানুষও। থাকবেন ক্রিস্টিনা-সহ ৪ মহাকাশচারী। তবে এই দফায় শুধুমাত্র চাঁদের চারপাশে পাক খেয়েই পৃথিবীতে ফিরে আসবে মহাকাশযান। যাতায়াত মিলিয়ে ১০ দিন। তার মধ্যেই বিপুল পরীক্ষা-নিরীক্ষা সেরে ফেরার কথা।
ক্রিস্টিনারা ফিরে এলেই শুরু হবে তৃতীয় অর্থাত্ অন্তিম পর্বের প্রস্তুতি। এখনও পর্যন্ত ঠিক রয়েছে, ২০২৫-এর ডিসেম্বরে উড়বে আর্তেমিস থ্রি মিশন। এ বার চাঁদের মাটিতে পা রাখার পালা। ক্রিস্টিনা প্রথম মহিলা মহাকাশচারী হিসেবে চাঁদের মাটিতে হাঁটবেন, শুধু তা-ই নয়। চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে মানুষ পৌঁছনর নজিরও গড়বে নাসা। একেবারে শেষবেলায় বিশেষ স্টারশিপে চেপে চাঁদের মাটিতে নামবেন ক্রিস্টিনারা। তবে চার জন নন, শুধুমাত্র দু’জন। এরপর শুধুই পরীক্ষা চালানোর কাজ। ছবি তুলবেন, নমুনা সংগ্রহ করবেন, যন্ত্রে ডেটা ভরবেন।
সবশেষে পৃথিবীতে ফেরার পালা। সেটাও কম রোমাঞ্চের নয়। প্রতি ঘণ্টায় ৪০ হাজার কিলোমিটার বেগে পৃথিবীর দিকে নেমে আসবে ওরিয়ন স্পেসক্রাফট। ১১টি প্যারাশুটের সাহায্যে প্রশান্ত মহাসাগরে নামবেন চন্দ্রজয়ীরা।
এত যজ্ঞ একটাই কারণে। তাও অনেক আগে খোলসা করেছে নাসা। আসলে নাসার উদ্দেশ্য মঙ্গল। চাঁদকে ঘাঁটি বানিয়েই, মঙ্গলকে আরও কাছে আনতে চায় নাসা।
মঙ্গল হোক। আর কী-ই বা বলা যায়!