‘ফেব্রুয়ারিতে না, এখনই বাচ্চা চাই’, হাসপাতাল-ক্লিনিকে উপচে পড়া ভিড়, কেন হঠাৎ পড়ল প্রসবের হিড়িক?
Baby Delivery: সন্তান জন্ম দেওয়ার ভিড়। সবাই বলছে, এখনই বাচ্চা কোলে চাই। দেরি করা যাবে না। যাদের ডেলিভারি ডেট ফেব্রুয়ারিতে, তাদের তো আরও চিন্তা। ডাক্তারদের হাতে পায়ে পড়ছেন, এখনই সন্তান প্রসব করার জন্য।
ওয়াশিংটন: আমেরিকার হাসপাতালগুলোয় হঠাৎ ভিড়। সন্তান জন্ম দেওয়ার ভিড়। সবাই বলছে, এখনই বাচ্চা কোলে চাই। দেরি করা যাবে না। যাদের ডেলিভারি ডেট ফেব্রুয়ারিতে, তাদের তো আরও চিন্তা। ডাক্তারদের হাতে পায়ে পড়ছেন, এখনই সন্তান প্রসব করার জন্য। কিন্তু কী এমন হল যে সবাই সন্তান জন্ম দিতে উঠে-পড়ে লাগল?
আমেরিকায় জন্মালেই আর মার্কিন নাগরিকত্ব মিলবে না। ১৯ ফেব্রুয়ারির পর এই আইন বাতিল। কার্যকর হবে নতুন সিটিজেনশিপ অ্যাক্ট। প্রেসিডেন্ট হওয়ার পরেই এই নির্দেশে সই করেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। তারপরই সে দেশে বসবাসকারী ভারতীয় থেকে শুরু করে অন্য দেশের নাগরিকরা চিন্তায় পড়েছেন। তাদের সন্তান তো তাহলে মার্কিন নাগরিকত্ব পাবে না। বিগ আমেরিকান ড্রিম পূরণ হবে কী করে?
তবে ট্রাম্পের এই নির্দেশে সাময়িক স্থগিতাদেশ দিয়েছে সিয়াটেলের আদালত। মার্কিন প্রেসিডেন্টের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে মামলা করেছিলেন এক মার্কিন দম্পতি। সেই মামলার রায় দিতে গিয়ে বিচারক জন কাফনর বললেন, “এই নির্দেশ অসাংবিধানিক। এভাবে নাগরিকত্ব কাড়া যায় না। মার্কিন সংবিধান ও আইন জানেন এমন কেউ, এই কাজ করবেন না বলেই আমার ধারণা”।
আমেরিকার নিয়মে সিয়াটলে এই রায় কার্যকর হবে। অন্য প্রদেশগুলো এই নির্দেশ মানতে পারে, আবার নাও মানতে পারে। চাকরি সূত্রে বহু ভারতীয়ই আমেরিকায় রয়েছেন। কেউ কেউ মার্কিন নাগরিকত্বও পেয়েছেন। তাদের বক্তব্য, ট্রাম্পের এই রায় বড় ধাক্কা। এই সুযোগে আমেরিকায় লাভের গুড় খাচ্ছে স্বাস্থ্য ক্ষেত্রের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিরা। সি-সেকশনের হিড়িক পড়ে গিয়েছে। আর সি-সেকশন মানে সিজার ইন্ড্রাস্ট্রি।
ট্রাম্পের সিটিজেনশিপ অর্ডারের কথা জানার পর থেকেই সন্তানের জন্ম দিতে ক্লিনিকে ছুটছে প্রবাসী পরিবারগুলো। ২০ ফেব্রুয়ারির আগে, সন্তানের জন্ম দিয়ে তার মার্কিন নাগরিকত্ব নিশ্চিত করার তাড়া। নিউইয়র্ক-সহ আমেরিকার সব বড় শহরে সবকটা মেটারনিটি ক্লিনিক ফুললি বুকড।
নিউইয়র্কে মাসে গড়ে আড়াই হাজার প্রি-ম্যাচিওর ডেলিভারি হয়। এই মুহূর্তে নিউইয়র্কে ২৫ হাজার পরিবার প্রি-ম্যাচিওর ডেলিভারির জন্য নাম লিখিয়েছে। মার্কিন সংবাদমাধ্যমের দাবি, এদের একটা বড় অংশ প্রবাসী ভারতীয় এবং আমেরিকায় থাকা ভারতীয় পরিবার। প্রি-ম্যাচিওর ডেলিভারির জন্য এখন চার-পাঁচ গুণ রেট নিচ্ছে ক্লিনিকগুলো।
এমন একটা সময়েই সিয়াটেল আদালতের রায়। বিচারক বলেছেন, আমেরিকায় জন্ম নেওয়া যে কোনও মানুষই এদেশের বৈধ নাগরিক। এটা সাংবিধানিক অধিকার। প্রেসিডেন্সিয়াল অর্ডার ইস্যু করে এ অধিকার কেড়ে নেওয়া যায় না। তাহলে এরপরও লোকজন আশ্বস্ত হতে পারছে না কেন? কারণটা খুব সহজ। ট্রাম্প নিশ্চিতভাবে এই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে উচ্চ-আদালতে যাবেন। মার্কিন প্রশাসনের এক কর্তা নিউইয়র্ক টাইমসকে বলেছেন, এটা যে ঘটবেই, সেটা ধরে নিয়েই আমরা প্রস্তুতি নিয়েছি। সুপ্রিম কোর্টেই হয়তো এর ফয়সালা হবে। আমরা প্রয়োজনে সংবিধান সংশোধন করবো। নতুন সিটিজেনশিপ অ্যাক্ট কার্যকর হবেই।