Nuclear bombs: পৃথিবীর সমস্ত পারমাণবিক বোমায় একসঙ্গে বিস্ফোরণ ঘটলে কী হবে?
Nuclear bombs: বর্তমানে পৃথিবীতে প্রায় ১৫,০০০ পারমাণবিক অস্ত্র রয়েছে। এই সমস্ত পারমাণবিক অস্ত্র একই সময়ে বিস্ফোরিত হলে কী ঘটবে। টিকবে মানব সভ্যতা? রক্ষা পাবে ধরিত্রী?
মস্কো: রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের শুরু থেকে পারমাণবিক যুদ্ধের সম্ভাবনা নিয়ে চর্চা চলছে। সম্প্রতি ভ্লাদিমির পুতিনের ‘স্বদেশ রক্ষায় সব ব্যবস্থা’ নেওয়ার হুমকিতে এই আশঙ্কা আরও বেড়েছে। বর্তমানে পৃথিবীতে প্রায় ১৫,০০০ পারমাণবিক অস্ত্র রয়েছে। হিরোশিমা-নাগাসাকির ধ্বংসযজ্ঞ দেখার পরও এমনটা হতে পারে, তা বিশ্বাস করা কঠিন। কিন্তু এটাই সত্যি। এই সমস্ত পারমাণবিক অস্ত্র একই সময়ে বিস্ফোরিত হলে কী ঘটবে। টিকবে মানব সভ্যতা? রক্ষা পাবে ধরিত্রী? সম্প্রতি, জনপ্রিয় ইউটিউব চ্যানেল, ‘কুসগেসাখ্ট – ইন আ নাটশেল’ (Kurzgesagt – In a Nutshell) এই ভয়ঙ্কর সম্ভাবনা নিয়েই চর্চা করেছে।
তাদের গবেষণা অনুসারে, পৃথিবীতে যে ১৫,০০০ পারমাণবিক অস্ত্র রয়েছে, তার মধ্যে রাশিয়া ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হাতেই রয়েছে সিংহভাগ, প্রায় ৭,০০০টি। বাকি ১,০০০ পারমাণিক অস্ত্র রয়েছে যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, চিন, উত্তর কোরিয়া, ইজ়রাইল, পাকিস্তান এবং ভারতের হাতে। কুসগেসাখ্ট-এর দাবি, পৃথিবীর কোনও বড় শহরকে পুরোপুরি নিশ্চিহ্ন করতে এই অস্ত্রগুলির মধ্যে মাত্র তিনটিই যথেষ্ট। সব মিলিয়ে বিশ্বের ৪,৫০০টি বড় শহর ধ্বংস করতে ১৩,৫০০টি পারমাণবিক ওয়ারহেড লাগবে। এটা হলেই মানব জাতির প্রায় অর্ধেক, অর্থাৎ প্রায় ৩০০ কোটি মানুষ অবিলম্বে নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে। তবে, তারপরও হাতে ১,৫০০ টি পারমাণিক অস্ত্র পড়ে থাকবে।
ইউটিউব চ্যানেলটি এরপরের চর্চার বিষয় ছিল, যদি সমস্ত পারমাণবিক অস্ত্র, গ্রহের একটি অঞ্চলে জড়ো করে বিস্ফোরণ ঘটানো হয়, তাহলে কী ঘটবে। চ্যানেলটির দাবি, যে বিস্ফোরণ ঘটবে তাতে ৩১ মাইল চওড়া একটি ‘ফায়ারবল’ বা আগুনের গোলা তৈরি হবে। ওই এলাকাকে কেন্দ্র করে ১,৮৬৫ মাইল ব্যাসর্ধ এলাকা জুড়ে সমস্ত কিছুকে নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে। ভয়াবহ দাবানলে জঙ্গল সাফ হয়ে যাবে। বিশ্বজুড়ে সেই বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যাবে। বিস্ফোরণের ফলে তৈরি হওয়া চাপের তরঙ্গগুলি, পরবর্তী কয়েক সপ্তাহ ধরে পৃথিবীকে অন্তত দশবার প্রদক্ষিণ করবে!
১৮৮৩ সালে আগ্নেগিরি মাউন্ট ক্রাকাতোয়ার বিধ্বংসী অগ্ন্যুৎপাত ঘটেছিল। যার শব্দ শোনা গিয়েছিল পৃথিবীর একটি বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে। অগ্নুৎপাতের ছাই ও ধোঁয়া গোটা পথিবীতে ছড়িয়ে পড়েছিল। সেই বিস্ফোরণের উপর ভিত্তি করেই এই গবেষণা চালিয়েছে কুসগেসাখ্ট। তাদের দাবি, ১৫,০০০ পারমাণবিক ওয়ারহেডগুলিতে সব মিলিয়ে প্রায় তিনশো কোটি টন টিএনটি বিস্ফোরকের শক্তি রয়েছে। কাজেই, ক্রাকাতোয়া আগ্নেয়গিরির বিস্ফোরণের থেকে ১৫ গুণ বেশি শক্তিশালী বিস্ফোরণ ঘটবে। লক্ষ লক্ষ টন পোড়া ছাই পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে ছড়িয়ে পড়বে। ধোঁয়া এবং ধ্বংসাবশেষের মাশরুম মেঘের উচ্চতা মহাকাশের সীমানায় পৌঁছে যাবে। পাশাপাশি, অতি তেজস্ক্রিয় পদার্থের পরিমাণ বিশ্বব্যাপী দ্বিগুণ হয়ে যাবে। সেই তেজস্ক্রিয়তার প্রভাবে বহু প্রাণ যাবে, বিশ্বের একটা বড় এলাকা বসবাসের অযোগ্য হয়ে উঠবে।