Budget 2024: খরচ বাড়ছে ফিউচার ও অপশনে, ‘নতুন জুয়া’য় লটারির হারে কর বসাতে পারে কেন্দ্র!

Tax on Future & Options: ফিউচার ও অপশন ট্রেডিংয়ে এবার হয়তো ফ্ল্যাট ৩০ শতাংশ হারে কর দিতে হবে সরকারকে। তার উপর দিতে হবে প্রায় ৪ শতাংশ সেস। 'স্পেকুলেটিভ ইনকাম'-এর অন্তর্ভুক্ত হলেই এই ব্যবস্থা চালু হবে। বর্তমানে লটারি বা ক্রিপ্টো থেকে আয়ের উপর সরকার এমন হাতেই কর আদায় করে।

Budget 2024: খরচ বাড়ছে ফিউচার ও অপশনে, 'নতুন জুয়া'য় লটারির হারে কর বসাতে পারে কেন্দ্র!
Follow Us:
| Updated on: Jul 22, 2024 | 7:03 PM

যাঁরা বিনিয়োগ করেন তাঁরা ‘ফিউচার ও অপশন’ ট্রেডিংয়ের কথা অবশ্যই শুনেছেন। অনেক ট্রেডিংকে অনেক বিশেষজ্ঞই আসলে ‘জুয়া’র সঙ্গে তুলনা করেছেন। কলকাতার এক নামকরা শেয়ার বাজার বিশেষজ্ঞ তো ট্রেডিংকে ‘উত্তেজনা’ বলে আখ্যায়িত করেছেন। ইক্যুইটাস ইনভেস্টমেন্টস কনসাল্টেন্সি (Aequitas Investment Consultancy)-র ম্যানেজিং ডিরেক্টর তো সোজাসুজি ‘ফিউচার ও অপশন’-এর মতো ডেরিভেটিভসের ক্ষেত্রে ন্যাশনাল স্টক এক্সচেঞ্জকে ‘গ্ল্যামারহীন লাস ভেগাস’ বলে কটাক্ষ করেছেন।

কিন্তু বিশেষজ্ঞদের এত সাবধানবাণীর পরও ভারতের যুব সমাজ ‘ফিউচার ও অপশন’ থেকে টাকা উপায়ের আশা ছাড়েনি ফলে হুহু করে এই ধরনের ট্রেডিংয়ের পরিমাণ বাড়ছে।

সরকার কী করছে?

আসন্ন বাজেটে ‘ফিউচার ও অপশন’ ট্রেডিংয়ের প্রবণতা কমানোর জন্য এক বিশেষ ব্যবস্থা নিতে পারে সরকার। এতদিন ‘ফিউচার ও অপশন’ ট্রেডিং করে যা লাভ হত সেটা ‘নন স্পেকুলেটিভ বিজনেস ইনকাম’ হিসাবে ধরা হত। আর তার উপর সেই হিসাবে সাধারণ আয়কর ধার্য করা হত। অর্থাৎ সেই নতুন আর পুরানো রেজিমে যে হিসাবে আয়কর আমরা দিয়ে থাকি, সেইভাবে। মনে করা হচ্ছে, বাজেটে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ ‘ফিউচার ও অপশন’ থেকে আয়কে ‘স্পেকুলেটিভ ইনকাম’-এর আওতায় ফেলবেন।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ফিউচার ও অপশন’কে ‘স্পেকুলেটিভ ইনকাম’-এর শ্রেনিভুক্ত করা হলে লটারি বা ক্রিপ্টো থেকে আয়ের উপর যেভাবে ফ্ল্যাট ৩০ শতাংশ হারে কর বসায় সরকার, এই ক্ষেত্রেও তারা সেই একই ভাবে কর ধার্য করতে পারবে। আর এইক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে TDS-এর মতো প্রত্যক্ষ কর ব্যবস্থা (Direct Taxation Mechanism)। ২০২৩-২৪ সালের বাজেটে ক্রিপ্টোকারেন্সির উপর এই ধরণের কর বসিয়েছিল সরকার।

শেয়ার মার্কেটের এক বিশেষজ্ঞ বলছেন, সাধারণ বিনিয়োগকারী, যাঁরা শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করেন তাঁরা অনেক সময় সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেক বিজ্ঞাপনের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে ‘ফিউচার ও অপশন’ ট্রেডিংয়ের দিকে ঝোঁকেন। এই ধরনের ট্রেডিং করতে গেলে প্রচুর পড়াশুনা করতে হয়, কিন্তু পড়াশুনা ছাড়াই বেশিরভাগ মানুষ এই ধরণের ট্রেডিংয়ে নামেন। ফলে তাঁরা বিরাট আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হন।

নতুন ব্যবস্থায় ‘ফিউচার ও অপশন’-এর উপর ফ্ল্যাট ৩০ শতাংশ হারে কর বসতে পারে। এর সঙ্গে এর উপর যোগ হবে আরও ৪ শতাংশ সেস। ফলে ‘ফিউচার ও অপশন’ ট্রেডিং করে প্রাপ্ত লভ্যাংশের উপর প্রায় ৩৪ শতাংশ কর বলবৎ হবে। মনে করা হচ্ছে এর ফলে এই ধরণের ‘বিপজ্জনক’ ট্রেডিংয়ের উপর থেকে দেশের যুবসমাজ কিছুটা হলেও মুখ ফিরিয়ে নেবে। আর এতে আখেরে লাভ তাদেরই হবে।

কলকাতার এক শেয়ার বাজার বিশেষজ্ঞ বলছেন, “হিসাব বলছে ফিউচার ও অপশনে ১০ জনের মধ্যে ৯ জনেরই লোকসান হয়। কিন্তু ব্যাপারটা অনেকের কাছে নেশার মতো হয়ে উঠেছে। আর এই ব্যাপারটা নিয়ে সরকার ও সেবি চিন্তিত। আর বিষয়টা কীভাবে থামানো এক্সায় বা কমানো যায় সেই নিয়ে গঠিত হয়েছে একটি কমিটি। ট্যাক্স বাড়িয়ে সরকার এই বিষয়ে খানিকটা প্রতিরোধ সৃষ্টি করতে পারে। সেবিও ভাবছে ট্রেডিংয়ের জন্য যে খরচ, সেটা যদি বাড়িয়ে দেওয়া যায় তাহলে এই ধরণের ছোট ছোট ট্রেডাররা এই ধরণের ট্রেডিং থেকে সরে যাবে। ফিউচার ও অপশন ট্রেডিং তো আসলে ফাটকা, তাই এটাকে রুখতে সরকার ও সেবি দুই পক্ষই এগিয়ে এসেছে। আর বাজেটে তার কিছু প্রতিফলন দেখা গেলেও যেতে পারে।

বিঃ দ্রঃ – এটি একটি শেয়ার বাজার এবং বিনিয়োগ সম্পর্কিত শিক্ষামূলক প্রতিবেদন। এই প্রতিবেদনের উদ্দেশ্য কখনই বিনিয়োগে উৎসাহিত করা বা মুনাফা কামানোর সহজ উপায় খুঁজে দেওয়া নয়। শেয়ার বাজারের বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে জানানোই এই প্রতিবেদনের অন্যতম লক্ষ্য। উল্লেখ্য, শেয়ার বাজারের বিনিয়োগ সর্বদাই ঝুঁকিুপূর্ণ।