Shilajit Mazumdar: স্টেজ ভেঙে পড়ে গিয়েছিল কিছুদিন আগে, কীভাবে বেঁচে আছি জানি না: শিলাজিৎ
Stage Show Experience: "বাউন্সাররা পর্যন্ত ছবি তুলতে শুরু করে। শিল্পীদের গ্রান্টেড ধরে নেওয়া হয়েছে এখন। তাঁকে পয়সা দেওয়া হয়েছে বলে যা খুশি তাই করে। সেগুলো আমরা সামলাই। দুর্ব্যবহার করতে চাই না", বলেছেন শিলাজিৎ।
শিলাজিৎ মজুমদার
কনসার্ট করতে এসে কেকের যা অভিজ্ঞতা, তা আমার বহুবার হয়েছে। আগে অনেক কিছু ফেস করতে হত। এখন অনেক পরিবর্তন এসেছে। উন্নতি হয়েছে অনেক কিছুর। সেই ৯০ সাল থেকে গান গাইছি। মোটামুটি পরিচিতি পেয়েছি ৯৪ সাল থেকে। ৯৪ সালের পর থেকে যে খারাপ অবস্থা ছিল, তা নিয়ে অর্গ্যানাইজ়াররা অভ্যস্থ ছিল না। রেকর্ডিংয়ের সময় গানটা যেভাবেই গাই না কেন, মঞ্চে উপস্থাপন করার সময় ফাইভ পিস ব্যান্ড ও রক সাউন্ড জেনারেটেড হবে, এমন পরিকাঠামোর প্রয়োজন ছিল। এখন যে সেটআপ তৈরি হয়েছে, সেটা ছিল না। ফলে বিভিন্ন জায়গায় মাইক্রোফোন পাওয়া যেত না, প্রয়োজনীয় ইলেকট্রনিক গ্যাজেট পাওয়া যেত না। ফলে আমাদের সমস্যায় পড়তে হত খুব। সেগুলোর চাহিদা আস্তে আস্তে মিটেছে। কিন্তু আর্টিস্টের আরামের ক্ষেত্রে অদ্ভুতভাবে পরিবর্তন আসেনি। হরনাথ চক্রবর্তীর ‘সঙ্গী’ ছবির শুটিং করতে গিয়ে তো মরে যাচ্ছিলাম আমি।
দুপুরবেলা প্রচণ্ড রোদে দৌড় শুরু করতে হয়েছে। সেই দৌড়টা যখন শুরু করেছি, পিছনে আমার পাঁচজন ভিলেন। শট দেওয়ার সময় আমার সামনে ভেঁড়ার পাল ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল। ভেঁড়ার পালের মধ্যে দিয়ে দৌড়াতে হচ্ছিল। সেটা যে কতবড় সাংঘাতিক কাজ, কী বলব! এটা আমি আপনাকে ১৫-২০ বছর আগের কথা বলছি। কপালের জোরে বেঁচে যাই। প্রযোজকের বাড়িটা পাশে ছিল। আমার অবস্থা দেখে সঙ্গে-সঙ্গে সেই বাড়িতে নিয়ে গিয়ে এসি চালিয়ে দিয়েছিল। ডাক্তার ডাকিয়ে ইসিজি করা হয়েছিল।
প্রথম শট দিয়ে আসার পর হরদা আমাকে বলেছিলেন শটটা এনজি হয়েছে। আমি পারছিলাম না। হরদা জোর করেছিলেন। কী আর করা যাবে, এই ধরনের প্রেশারেই তো আমাদের কাজ করে যেতে হয়। আমার মনে আছে মেকআপ আর্টিস্টের কাছে গিয়ে কোল্যাপ্স করে গিয়েছিলাম।
স্টেজ শোয়ে আর্টিস্টরা যখন গান গাইতে যান, রীতিমতো স্ট্রাগল করতে হয়। একটা জায়গা থেকে আর একটা জায়গায় তাঁদের ট্র্যাভেল করতে হয়। এই পুরো বিষয়টার কিন্তু একটা ডেকোরাম থাকে। আমরা তো ডেলি প্যাসেঞ্জারি করতে যাই না। যাওয়ার আরাম থেকে শুরু করে অর্গ্যানাইজ়ারদের সঙ্গে লড়তে হয়। কত ঘটনা বলব! আপনি কি জানেন, নন এসি হলেও শো করেছি আমরা। দমদমে আমার একটা সোলো শো ছিল। সেখানে এসি গোলমাল করেছিল। কেকের মতো একই ধরনেরই অবস্থা হয়েছিল সেই পারফরম্যান্সে। কিছুদিন আগেই এমন একটা জায়গায় শো করতে গেলাম, যেখানে গ্রিন রুম খুবই ছোট। ৪ ফুট বাই ১০ ফুটের একটা ঘর। প্রচণ্ড গরমের মধ্যে আমরা শো করেছিলাম। প্রচুর লোক এসেছিল। বিধায়ক আমার সঙ্গে বসেছিলেন বলে আমার সিকিওরিটি ছিল।
জবজবে ঘামে শো করতে হয়। ৩-৪ বার জামা পাল্টাতে হয়। শো শেষে এককাপ কফি বা একগ্লাস ঠান্ডা জল প্রয়োজন হয়। কিছু বোঝার আগে সেখানে ৫০-৬০জন লোক চলে আসে। বাউন্সাররা পর্যন্ত ছবি তুলতে শুরু করে। শিল্পীদের গ্রান্টেড ধরে নেওয়া হয়েছে এখন। তাঁকে পয়সা দেওয়া হয়েছে বলে যা খুশি তাই করে। সেগুলো আমরা সামলাই। দুর্ব্যবহার করতে চাই না…
একবার এমন অবস্থা হয়েছিল যে, ৭-৮ ফুটের স্টেজ থেকে লাফিয়ে পালাতে হয়েছিল আমাকে। তখন প্রশাসনের তরফ থেকেও কিছু আর করার থাকে না। বেশি খুঁতখুঁত করলে শো পেতে অসুবিধা হয়, তাই বেশি কিছু বলাও যায় না। কিছুদিন আগে একটা ইঞ্জিনিয়রিং কলেজে শো করতে গিয়েছিলাম। জানেন, স্টেজটাই ভেঙে গিয়েছিল। আমি পড়ে গিয়েছিলাম। কী করে বেঁচে আছি জানি না…