KIFF 2022: ২৭তম কিফে ‘আমি সৌমিত্র’, জায়গা করে নিয়েছে তথ্যচিত্র বিভাগে
পৌলমী বসু TV9 বাংলাকে বলেছেন, "কিফে দেখানো হবে। তথ্যচিত্র বিভাগে দেখানো হবে। দর্শক প্রথমবারের জন্য দেখতে পাবেন ২৭তম কলকাতার আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবেই।" ১০ জানুয়ারি সন্ধ্যা ৬টায় দেখানো হবে।
কেবল অভিনেতা তো ছিলেন না। সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় আসলে এক আবেগের নাম। এক বহুমুখী প্রতিভার নাম। কবিতা, আবৃত্তি, ছবি আঁকা, নাটক, লেখা, পরিচালনা… সংস্কৃতির সব কটি স্তরকেই ছুঁয়েছিলেন এবং অনবদ্য কিছু অবদান রেখে গিয়েছেন। কাজ পাগল মানুষটি মৃত্যুর আগে পর্যন্ত কাজে ডুবে ছিলেন। ২০২০ সালের ১৫ নভেম্বর কলকাতার বেসরকারি হাসপাতাল বেলভিউয়ে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন সৌমিত্র। সেই দুঃখ আজও বহন করছেন তাঁর অগুনতি অনুরাগী, প্রিয়জন, পরিবার ও সবচেয়ে কাছের মানুষ মেয়ে পৌলমী বসু। তাঁরই উদ্যোগে তৈরি হয়েছিল ‘আমি সৌমিত্র’। সংরক্ষণ করে রাখার মতো কাজ। কেবল অভিনেতা সৌমিত্র নয় – কবি, আবৃত্তিকার, পেইন্টার, নাট্যব্যক্তিত্ব, লেখক, পরিচালক সৌমিত্রকে জানা, আরও ভাল করে চেনা। এখনও পর্যন্ত দর্শক এর নাগাল পাননি। তবে আসন্ন ২৭তম কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে সেটি দেখানো হবে তথ্যচিত্র বিভাগে। একথা TV9 বাংলাকে জানিয়েছেন সৌমিত্রর কন্যা ও অভিনেত্রী পৌলমী বসু।
পৌলমী বসু TV9 বাংলাকে বলেছেন, “কিফে দেখানো হবে। তথ্যচিত্র বিভাগে দেখা হবে। দর্শক প্রথমবারের জন্য দেখতে পাবেন ২৭তম কলকাতার আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবেই।” ১০ জানুয়ারি সন্ধ্যা ৬টায় দেখানো হবে।
২০২০ সালে করোনা পরিস্থিতি খানিক স্বাভাবিক হওয়ার পর কাজে ফিরতে শুরু করেছিলেন অনেকেই। কিন্তু কুণ্ঠাবোধ করেছিলেন বর্ষীয়ান অভিনেতা-অভিনেত্রীরা। তাঁদের বক্তব্য ছিল, করোনার মধ্যে ঝুঁকি নিয়ে কাজ করার দরকার নেই। সেই পরিস্থিতিতে কাজে ফিরেছিলেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। প্রায় রোজই শুটিং করেছিলেন ৮০ বছরের ‘যুবক’।
দক্ষিণ কলকাতার ‘ভারতলক্ষ্মী’ স্টুডিয়োতে চলছিল ‘আমি সৌমিত্র’র শুটিং। সায়ন্তন মুখোপাধ্যায়ের পরিচালনায় তৈরি হয় তথ্যচিত্রটি। এর ক্রিয়েটিভ ডিরেক্টর পৌলমী বসু। অরিন্দম চট্টোপাধ্যায়ের প্রয়োজনায় কাজটি করছিলেন সৌমিত্র। সারাক্ষণ ১০-১৫জন ঘিরে থাকত তাঁকে। মেকআপ রুম থেকে ফ্লোরে যাওয়ার পথেই তাঁকে ঘিরে থাকতেন অনেকে। রাজার মতো হেঁটে আসতেন সৌমিত্র। তাঁকে দেখার জন্য কত লোকজন। সকলের দিকে তাকিয়ে নমস্কার জানাতেন কিংবদন্তি। সোজা চলে যেতেন ফ্লোরে। কে জানত, এটাই তাঁর শেষ ক্যামেরার সামনে উপস্থিতি?
শুটিং শেষ হওয়ার পরই খবর আছে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন সৌমিত্র। সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালে স্থানান্তরিত করার সিদ্ধান্ত নেয় পরিবার। হাসপাতালে ৪৫দিন ছিলেন। শুরুর দিকে কেউ আন্দাজই করতে পারেননি, তিনি আর ফিরবেন না। ধীরে ধীরে স্বাস্থ্যের অবনতি হতে থাকে। করোনা নেগেটিভ হয়েছিলেন ঠিকই, কিন্তু ক্যান্সারের মতো কোমর্বিডিটি খেল দেখাতে শুরু করে, স্নায়ুজনিত সমস্যাও শুরু হয়। রোজ সকাল বিকেল মেডিক্যাল বুলেটিন – আজ ভাল তো কাল খারাপ। তারপর একদিন সব শান্ত হয়ে গেল। চলে গেলেন সৌমিত্র। চিরকালের মতো। তাঁকে বাঁচিয়ে রাখার জন্যই ‘আমি সৌমিত্র’!
আরও পড়ুন: Gulkanda: রাজ-ডিকের ‘অশ্বলিঙ্গ’ ওয়েব সিরিজ়ের নাম পালটে কী রাখা হল?