কেউই দুঃখকে এড়িয়ে যেতে পারে না, রবীন্দ্রনাথের ছবিতে সেই বিষাদ ধরা পড়েছে

তাঁর ছবিও বিশেষ বৈশিষ্ট্যের আকর। এ বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই।

কেউই দুঃখকে এড়িয়ে যেতে পারে না, রবীন্দ্রনাথের ছবিতে সেই বিষাদ ধরা পড়েছে
Follow Us:
| Updated on: May 09, 2021 | 9:44 AM

শুভাপ্রসন্ন: রবীন্দ্রনাথের ছোটবেলা থেকেই জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়িতে শিল্পচর্চার পরিবেশ ছিল। কিন্তু রবীন্দ্রনাথ নানা কারণে দাদাদের কাছে তেমন পাত্তা পাননি! তিনি খুব ভাল পোট্রেট করতেন। বহু মানুষের ছবি এঁকেছেন। দাদারা এতই প্রভাবশালী, যে কারণে ছোটবেলায় রবীন্দ্রনাথের শিল্পীসত্ত্বার তেমন স্ফুরণ দেখা যায়নি। উৎসাহ না পেয়ে রবীন্দ্রনাথ নিষ্প্রভ হয়ে পড়েছিলেন। কিন্তু প্রকৃত প্রতিভার একজন মানুষের একটা বিশেষ স্তরে পৌঁছতে খুব বেশি সময় লাগেনি। তিনি প্রকাশ মাধ্যম খুঁজে নিয়েছিলেন নিজেই। সৃষ্টির বিভিন্ন ধাপ বেয়ে তিনি উঠতে শুরু করেন। কাজেই সময়ের সঙ্গে তাঁর স্ফুরণ ঘটতে থাকে।

প্রায় ৬০ বছর বয়সে উনি কাটাকুটি করতেন। নিজের কবিতা যখন নিজের হাতে কাটতেন, সেখানে কতগুলো ফর্ম তৈরি হত। সেটা তিনি লক্ষ করেছিলেন বিশেষত যখন তিনি ভিক্টোরিয়া ওকাম্পোর সংস্পর্শে আসেন। তাঁর বাড়িতে যখন অবস্থান করছেন, প্রতিদিন সকালবেলা রৌদ্রস্নাত ভোরের আকাশের তলায় রবীন্দ্রনাথ কাজ করতেন, সেটা লক্ষ্য রেখে ভিক্টোরিয়া ওকাম্পো তাঁকে খুব উৎসাহিত করতেন এবং কখনও কখনও কাগজ বাড়িয়ে দিতেন।

Subhaprasanna

তখনই ঝরনাধারার মতো অনেক ছবি আঁকলেন তিনি। ভিক্টোরিয়া ওকাম্পোর উদ্যোগেই ফ্রান্সে প্রথম রবীন্দ্রনাথের ছবির প্রদর্শনী হয়। আমরা লক্ষ করি তাঁর গানে, কবিতায় রুক্ষতা যেন আনন্দের মতো প্রকাশ পেয়েছে। কিন্তু যে কোনও মানুষের ভেতরেই চাপা দুঃখ থাকে। কেউই দুঃখকে এড়িয়ে যেতে পারে না। রবীন্দ্রনাথের ছবিতে সেই বিষাদ ধরা পড়েছে।

ন্যাশনাল গ্যালারিতে তাঁর ছবির সংগ্রহ আছে। অনেকে বলেন, সেই সময়ের জার্মান আর্টিস্টদের এক্সপ্রেশনিজম তাঁর ছবিতে লক্ষ্য করা যায়। কিন্তু সেটা আমি মনে করি না। বরং আমি তাঁকে আধুনিক ভারতবর্ষের অন্যতম প্রধান শিল্পী মনে করি। যিনি স্বাধীন ভাবে ছবিতে নিজের ছাপ ফুটিয়ে তুলেছেন।

রবীন্দ্রনাথ নানা রকম পশুপাখি এঁকেছেন, নানা পোট্রেট করেছেন, প্রকৃতি দৃশ্য এঁকেছেন। সেবেতেই তাঁর নিজস্ব ছাপ পাওয়া যায়। রবীন্দ্রনাথ বিশ্ববিখ্যাত সাহিত্যিক। বিশ্ব স্বীকৃতি পেয়েছেন। তাঁর ছবিও বিশেষ বৈশিষ্ট্যের আকর। এ বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই।